চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের সম্মেলন ৩০ মে

24

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগর যুবলীগের কমিটি গঠনে দীর্ঘ ৯ বছরের অচলায়তন ভাঙছে। আগামী ৩০ মে সম্মেলন আয়োজনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে হবে উত্তর ও দক্ষিণ জেলার সম্মেলন।
গতকাল শুক্রবার কেন্দ্রীয় যুবলীগ আগামী ২৮ মে দক্ষিণ জেলা এবং ২৯ মে উত্তর জেলার ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের নির্দেশ দিয়েছে।
আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. মঈনুল হোসেন খান নিখিল স্বাক্ষরিত পৃথক তিনটি চিঠিতে সম্মেলন আয়োজনের বিষয়ে ইউনিট তিনটির সভাপতি/আহব্বায়ক ও সাধারণ সম্পাদক/যুগ্ম আহব্বায়কদের জানানো হয়। এতে বলা হয়, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ চট্টগ্রামের তিনটি ইউনিটের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করেছেন।
এই বিষয়ে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নিখিল জানান, ‘ঈদের পরে সম্মেলন আয়োজনের বিষয়ে আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। আজ (শুক্রবার) আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছি। বর্তমান নেতৃবৃন্দের সাথে আমাদের কথা হয়েছে। সুন্দর সম্মেলন হবে বলে আশা করছি।’
তথ্যমতে, সম্মেলনের মাধ্যমে নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচিত নেতারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দায়িত্ব পাবেন। এর আগে গত মার্চের মাঝামাঝিতে ঢাকায় যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের বর্তমান কমিটির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। ওই বৈঠকে ঈদের পর সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। এ ধারাবাহিকতায় ২৬ মার্চ যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তিনটি ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে জীবন বৃত্তান্ত আহব্বান করা হয়। ২ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই ছয় পদের জন্য ১৭৭ জনের জীবন বৃত্তান্ত জমা পরে। এরমধ্যে নগরে সভাপতি পদে ৩৫ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৭০ জন, উত্তর জেলায় সভাপতি পদে ৭ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ২০ জন এবং দক্ষিণ জেলায় সভাপতি পদে ১০ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৩৫ জন জীবন বৃত্তান্ত জমা দেন।
সর্বশেষ ২০১৩ সালে মহিউদ্দিন বাচ্চুকে আহব্বায়ক এবং দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদ, দিদারুল আলম ও মাহবুবুল হক সুমনকে যুগ্ম আহব্বায়ক করে তিন মাসের জন্য ১০১ সদস্যের নগর যুবলীগের কমিটি করা হয়েছিল। এরপর পেরিয়ে গেছে ৯ বছর। নতুন কমিটি হয়নি। নগরীতে যুবলীগের ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ৪টিতে কমিটি আছে।
এদিকে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, রাজনীতিতে স্বচ্ছতা ও সাংগঠনিক জবাবদিহিতা না থাকলে আখেরে দলেরই ক্ষতি হয়। এ কারণে নিয়মিত কমিটি থাকা দরকার। এতে রাজনীতিতে নেতাকর্মীদের সক্রিয়তা বাড়ে।
সম্মেলন প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে নগর যুবলীগের আহব্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু জানান, ‘সাংগঠনিক প্রস্তুতি আমাদের আছে। যেহেতু সম্মেলনের বিষয়টি আগেই কেন্দ্র অবহিত করেছিল মৌখিকভাবে। ঈদের পর ভেন্যু নির্ধারণসহ বাকি কাজ দ্রুত শেষ করা হবে।’
দীর্ঘ ৯ বছরেও ওয়ার্ড কমিটি করতে না পারার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমাদের সদিচ্ছার অভাব ছিল না। তারপরও নানা যৌক্তিক কারণে হয়ে উঠেনি।
অপরদিকে এসএম আল মামুনকে সভাপতি এবং এসএম রাশেদুল আলমকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০১২ সালে উত্তর জেলা যুবলীগের কমিটিও কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপর ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। উত্তর জেলা ৭টি উপজেলার মধ্যে ছয়টিতে কমিটি আছে বলে জানান সাধারণ সম্পাদক।
দক্ষিণ জেলায় আ ম ম টিপু সুলতান চৌধুরীকে সভাপতি ও পার্থ সারথী চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে সবশেষ কমিটি ২০১০ সালে কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক।
এদিকে মহানগর যুবলীগের কমিটিতে আসার জন্য সভাপতি পদে জীবন বৃত্তান্ত জমা দেয়া ছাত্রলীগের এককালের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য দিদারুল আলম জানান, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাবার বীরত্বপূর্ণ ত্যাগ ও স্বাধীনতার স্বপক্ষ দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ছায়ার নীচে থেকে রাজনীতি করে যাচ্ছি। পার্টির দুঃসময়ে মিনিট-ঘণ্টার নোটিশেই সর্তীথদের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছি। আমার সাথে রাজনীতি করেছেন এমন প্রায় সকলেই মূল্যায়িত হয়েছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে। নগর যুবলীগের কমিটিতে এবার পার্টি আমাকে মূল্যায়ন করবেন এই দৃঢ় বিশ্বাস আমার আছে।