চট্টগ্রামে সংক্রমণ নামল ৫ শতাংশের নিচে

18

আসহাব আরমান

চট্টগ্রামে গত ৩ দিন ধরে করোনা সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে রয়েছে। কমেছে মৃত্যের সংখ্যাও। গত ৭ দিনে চট্টগ্রামে করোনায় মারা গেছেন ১৬ জন। এর মধ্যে ২ দিন ছিল মৃত্যুহীন। এদিকে সংক্রমণ কমে আসায় নগরীর হাসপাতালগুলোতে কমেছে রোগী ভর্তিও। তবে সংক্রমণ কমলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তাগিদ দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য দেখা যায়, গত ৩ দিনে চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৬৫ জন। অথচ একমাস আগে একদিনেই আক্রান্ত হয়েছিলেন দুই শতাধিক মানুষ। গত ১৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে করোনায় দুইজনের মৃত্যু হয়। চলতি মাসের প্রথম ১৯ দিনে চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৯৪৭ জন। যদিও মাসের শুরুতে সংক্রমণের হার ছিল ১০ শতাংশের বেশি। গত ১৯ দিনে চট্টগ্রামে করোনায় মারা গেছেন ৫২ জন।
এদিকে ১৫ জুন চট্টগ্রামে মৃত্যুহীন দিন ছিল। এর প্রায় ৩ মাস পর গত ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর টানা ২ দিন মৃত্যুহীন ছিল চট্টগ্রাম। গত জুন মাসের শেষের দিকে চট্টগ্রামে ডেল্টা সংক্রমণ শুরু হয়। জুলাই-আগস্টে চট্টগ্রামে ডেল্টা ভেরিয়েন্টের দাপট চলে। হাসপাতালে ভিড় বাড়ে করোনা রোগীর। অতিরিক্ত রোগী সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় হাসপাতালগুলোকে। দেখা দেয় আইসিইউ বেডের সংকট। গত দুই মাসে চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত হন ৪১ হাজার মানুষ। এ সময় মারা যান ৫২৬ জন।
এদিকে চট্টগ্রামে সংক্রমণ কমে আসায় হাসপাতালগুলোতেও কমেছে রোগী। বর্তমানে হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৫০ শতাংশ শয্যা খালি রয়েছে। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে গতকাল করোনা রোগী ভর্তি ছিলেন ৪৫ জন। শয্যা খালি প্রায় ১০০টি। একটি আইসিইউ ও ২টি এইচডিইউ শয্যা খালি রয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তি আছেন ১০৪ জন। চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তি আছেন ৪৭০ জন। আইসিইউতে ভর্তি ৫৯ জন।
জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. আহমেদ তানজিমুল ইসলাম পূর্বদেশকে বলেন, সংক্রমণ কমে আসায় এখন রোগী ভর্তি অনেকটা কমে এসেছে। বর্তমানে ১৪০ শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ৪৫ জন। একটি আইসিইউ বেড ও ২টি এইচডিইউ বেড খালি আছে। যদিও একমাস আগে চট্টগ্রামে আইসিইউ’র জন্য হাহাকার ছিল।
সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি পূর্বদেশকে বলেন, সংক্রমণ সারাদেশে নি¤œমুখি। চট্টগ্রামেও গত এক সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ ৫ শতাংশের কাছাকাছি। নগরীর হাসপাতালেও এখন আর আগের মত করোনা রোগীর চাপ নেই। তবে সংক্রমণ কমে আসলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আইসিইউ বেডে এখনও রোগি ভর্তি আছেন। এদের অধিকাংশই কো-মরবিডিটি (সহরোগ) ও জটিল রোগে আক্রান্ত।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৬ এপ্রিল চট্টগ্রামে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এই পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ১ হাজার ২৮৫ জন। করোনায় মারা গেছেন ১ হাজার ২৮১ জন।
এদিকে চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৬৮১ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫০ জন। এদের মধ্যে নগরের ৩০ জন এবং উপজেলার ২০ জন। এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ১ হাজার ২৮৫ জন। এ সময়ে চট্টগ্রামে করোনায় মারা গেছেন আরও ২ জন। এই পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনা মারা গেছে ১ হাজার ২৮১ জন। গতকাল চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।