খাদ্যে ভেজাল দিলে অনূর্ধ্ব ৫ বছর কারাদন্ড

10

ঢাকা প্রতিনিধি

খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুদ ও বিতরণে ক্ষতিকর কার্যক্রম ঠেকাতে অনিয়মের সাজা হিসেবে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদন্ডের বিধান রেখে নতুন একটি আইনের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি জানান, নতুন আইনটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন ২০২২’।
‘দ্য ফুড গ্রেইন সাপ্লাই প্রিভেনশন অব প্রিজুডিশিয়াল অ্যাকটিভিটি অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৯’ এবং ‘ফুড স্পেশাল কোর্ট অ্যাক্ট, ১৯৫৬’ এ দুটো আইনকে একসঙ্গে করে নতুন আইনটি করা হচ্ছে।
সামরিক শাসনমালে জারি করা অধ্যাদেশগুলোর বিষয়ে মন্ত্রিসভায় বৈঠকের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে এ দুটি আইন নিয়ে আলোচনার পর নতুন আইন করার সিদ্ধান্ত হয়।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘যাতে খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণনে ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ করা যায়। যাতে সিস্টেমের মধ্যে আনা যায়।’
নতুন আইনটি সম্পর্কে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এর মাধ্যমে বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে না, মান যাতে নিশ্চিত থাকে। কেউ যাতে অনৈতিক কাজ করতে না পারে, ক্রেতারা যাতে ঠকে না যায়। খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন এবং এ সংক্রান্ত অন্যান্য কাজের ক্ষেত্রে কোনো অপরাধ যাতে না হয় সেগুলো প্রতিরোধ করার জন্য এই আইনটি আনা হয়েছে।’
আইনে সাজার বিধান তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘খসড়া আইনে কঠোর শাস্তির প্রস্তাব করা হয়েছে। কেউ যদি এই আইনের অধীনে অপরাধ করে তবে সে সর্বোচ্চ ৫ বছর বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে।’
মন্ত্রিসভা বলে দিয়েছে, ‘নিরাপদ খাদ্য আদালতই এগুলো দেখবে, আলাদা কোনো আদালত লাগবে না। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে মোবাইল কোর্টেও বিচার করতে পারবে, যে জুরিসডিকশন ওই পর্যন্ত শাস্তি দিতে পারবে।’
জব্দ করা খাবার সম্পর্কে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আরেকটি সুন্দর জিনিস করা হয়েছে, কোনো খাদ্যদ্রব্য যদি জব্দ করা হয়, সেই খাদ্য যদি পঁচনশীল হয়, সেই খাদ্যদ্রব্য নিলাম ডেকে বিক্রি করে শুধু স্যাম্পল হিসেবে অল্প একটু রাখা যাবে।’ খবর বিডিনিউজের
তিনি জানান, খাদ্যপণ্য যদি পচনশীল নাও হয় তবেও ৪৫ দিনের মধ্যে নিলাম করে দিতে হবে, টাকাটা কোর্টের কাছে থাকবে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি যদি খালাস পান তবে টাকাটা তিনি পেয়ে যাবেন। আর দন্ড পেলে আদালত যেভাবে আদেশ দিবে সেভাবে হবে।
খসড়া আইনের আরও বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘উৎপাদন সংক্রান্ত অপরাধের মধ্যে রয়েছে খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে অতিরিক্ত ক্ষতিকর কিছু মিশিয়ে উৎপাদন করল। নির্দিষ্ট সময়ের বেশি মজুদ করা। সরকারি কর্মসূচির নামাঙ্কিত বা বিতরণকৃত এমন চিহ্ন যুক্ত ছাড়া সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে খাদ্যশস্য ভর্তি বস্তা গ্রহণ, স্থানান্তর, মজুত করা, হাত বদল বা পুনরায় বিক্রি করাও অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।’
সরকারি কোনো কর্মসূচির আওতায় নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে কম বিতরণ করা এবং সরকারি খাদ্য সামগ্রী বিক্রি বা বিতরণের জন্য বিএসটিআই নির্ধারিত বাটখারা বা মাপ ব্যবহার না করে হেরফের করলে নতুন আইন অনুযায়ী সাজা পাবে।