কাজে ফিরতে পারছেন না আফগান নারীরা

21

২০২১ সালের শুরু থেকেই প্রতিদিন সকালে ২৬ বছর বয়সী সাবিরা সাইদি, কালো হিজাব আর মুখোশ পরে তার বাবা বা ভাইয়ের সঙ্গে কাজে যেতেন। কাবুল ও ময়দান ওয়ারদাক প্রদেশে লন্ডনভিত্তিক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, চিলড্রেন ইন ক্রাইসিসে কাজ করেন সাইদি। কিন্তু সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানের হাতে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর নারীদের ওপর নানাবিধ বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। সাইদি তার ১০ সদস্যের পরিবারের দিকে চেয়ে এবং চাকরি ধরে রাখতে সব বিধিনিষেধ মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু গত বছর ২৪ ডিসেম্বর তালেবান নারীদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বা এনজিওতে কাজ করতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এতে সাইদিসহ হাজার হাজার নারীর জীবন বদলে যায়। তালেবানের অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এসব এনজিওকে চিঠি দিয়ে বলা হয়,পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত আফগান নারীদের কাজ থেকে বিরত রাখতে। সেই চিঠিতে আরও বলা হয়, নারী কর্মীরা সঠিকভাবে হিজাব না পরায় এমন আদেশ জারি করা হয়েছে। সাইদি ও এনজিওতে কাজ করা অনেকে ভয়েজ অব আমেরিকার সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা জানান, তালেবানের দেওয়া পোশাক কোড মেনেই চলেন তারা। তারা আরও অভিযোগ করেন, এনজিওতে কাজ করা নারীদের ওপর তালেবানের নিষেধাজ্ঞার কারণ ছিল সর্বস্তরে নারীদের কাজ করা থেকে বিরত রাখার কৌশল। এনজিওতে নারীদের কাজ করা নিয়ে নিষেধাজ্ঞার কয়েক দিন আগে, তালেবান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নারী শিক্ষার্থীদের প্রবেশাধিকার স্থগিত করার নির্দেশ দেয়। এর আগে মেয়েদের মাধ্যমিক স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ করে তালেবান সরকার। ২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর, তালেবান নারীদের বিরুদ্ধে কিছু দমনমূলক ব্যবস্থা আরোপ করা শুরু করে। এসবের মধ্যে রয়েছে তাদের মাধ্যমিক শিক্ষা থেকে নিষিদ্ধ করা, সরকারি কাজ থেকে বিরত রাখা, কোনো ঘনিষ্ঠ পুরুষ আত্মীয় ছাড়া দীর্ঘ ভ্রমণ না করা এবং পার্ক ও জিমে যাওয়াও বারণ করা হয়।