কপাল পুড়লো ছয় পুরানোর সদস্য পদে নতুন জয়ী ১১ জন, পুরানো পাঁচ

25

রাহুল দাশ নয়ন

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদে সদস্য পদে প্রথমবারের মতো বিজয়ী হয়েছেন ১৩ জন। এদের মধ্যে সংরক্ষিত পদে চারজন ও সাধারণ সদস্য পদে ৯ জন বিজয়ী হন। ১১ জন ভোটে ও দুইজন বিনাভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। গতবার জয়ী হওয়া পাঁচজন প্রার্থী দ্বিতীয়বারের মতো জয়ী হয়ে জেলা পরিষদের সদস্য হলেন। তবে হেরেছেন গতবার জয়ী হওয়া তিন সংরক্ষিত ও তিন সাধারণ সদস্য প্রার্থী। সবমিলিয়ে নতুন-পুরানের সমন্বয়ে সুন্দর একটি পরিষদ নির্বাচিত হয়েছে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে জয়ী হওয়া প্রার্থীরা নির্বাচন নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও পরাজিত প্রার্থীরা প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ কেউ ইভিএম-এ কারচুপিকে দুষছেন। তবে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘নির্বাচন কেমন হয়েছে সবাই দেখেছে। অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভোটে জয়-পরাজয় নির্ধারণ হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক কড়াকড়ি ছিল। যা নির্বাচন কমিশন সরাসরি পর্যবেক্ষণ করেছে।’
সংরক্ষিত সদস্য পদে সংরক্ষিত-১ (সীতাকুন্ড, মিরসরাই ও সন্দ্বীপ) হরিণ প্রতীকের প্রার্থী রওশন আরা বেগম, সংরক্ষিত ওয়ার্ড-২ (হাটহাজারী, রাউজান ও ফটিকছড়ি) দিলোয়ারা ইউসুফ, সংরক্ষিত ওয়ার্ড-৩ (রাঙ্গুনিয়া, কর্ণফুলী ও বোয়ালখালী) ফুটবল প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা রাহিলা চৌধুরী, সংরক্ষিত ওয়ার্ড-৪ (চন্দনাইশ, আনোয়ারা ও পটিয়া) দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী মোছাম্মৎ ফারহানা আফরীন জিনিয়া, সংরক্ষিত ওয়ার্ড-৫ (সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও বাঁশখালী) ফুটবল প্রতীকের প্রার্থী সুরাইয়া খানম বিজয়ী হয়েছেন। এরমধ্যে সংরক্ষিত-১ ওয়ার্ডে রওশন আরা বেগম, সংরক্ষিত-৩ ওয়ার্ডে মোস্তফা রাহিলা চৌধুরী, সংরক্ষিত-৪ ওয়ার্ডে মোছাম্মৎ ফারহানা আফরীন জিনিয়া, সংরক্ষিত-৫ ওয়ার্ডে সুরাইয়া খানম প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
সাধারণ সদস্য পদে ওয়ার্ড-২ (সীতাকুন্ড) অটোরিক্সা প্রতীকের প্রার্থী আ.ম.ম দিলসাদ, ওয়ার্ড-৩ (সন্দ্বীপ) হাতি প্রতীকের প্রার্থী মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান, ওয়ার্ড-৪ (ফটিকছড়ি) অটোরিক্সা প্রতীকের প্রার্থী আখতার উদ্দীন মাহমুদ, ওয়ার্ড-৫ (হাটহাজারী ও নগর আংশিক) অটোরিক্সা প্রতীকের প্রার্থী এইচ.এম আলী আবরাহা, ওয়ার্ড-৮ (বোয়ালখালী ও নগর আংশিক) হাতি প্রতীকের প্রার্থী বোরহান উদ্দিন এমরান, ওয়ার্ড-৯ (কর্ণফুলী ও নগর আংশিক) ঘুড়ি প্রতীকের প্রার্থী ইসলাম আহমদ, ওয়ার্ড- ১০ (পটিয়া) তালা প্রতীকের প্রার্থী দেবব্রত দাশ, ওয়ার্ড-১১ (চন্দনাইশ) হাতি প্রতীকের প্রার্থী আবু আহমেদ চৌধুরী, ওয়ার্ড-১৩ (বাঁশখালী) ক্রিকেট ব্যাট প্রতীকের প্রার্থী মো. নুরুল মোস্তফা সিকদার, ওয়ার্ড-১৪ (সাতকানিয়া) বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকের প্রার্থী আবদুল আলীম ও ওয়ার্ড- ১৫-এ (লোহাগাড়া) ঘুড়ি প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ এরফানুল করিম চৌধুরী বিজয়ী হয়েছেন। প্রথমবারের মতো বিজয়ী হয়েছেন, লোহাগাড়ায় এরফানুল করিম চৌধুরী, সাতকানিয়ায় আব্দুল আলীম, বাঁশখালীতে নুরুল মোস্তফা সিকদার, কর্ণফুলীতে ইসলাম আহমেদ, বোয়ালখালীতে বোরহান উদ্দিন এমরান, সন্দ্বীপে মো. ছিদ্দিকুর রহমান ও হাটহাজারীতে এইচ.এম আলী আবরাহা। এছাড়া মিরসরাইয়ে প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, রাঙ্গুনিয়ায় আবুল কাশেম চিশতী বিনাভোটে জয়ী হয়ে জেলা পরিষদের সদস্য হলেন।

হারলেন পুরানো ৬ জন : গত নির্বাচনে বিজয়ী ছয়জন সদস্য এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে থাকতে পারেননি। এরমধ্যে তিনজন সংরক্ষিত ও তিনজন সাধারণ সদস্য প্রার্থী। সংরক্ষিত-৫ ওয়ার্ডে হেরেছেন শাহিদা আকতার জাহান, সংরক্ষিত-২ ওয়ার্ডে এড. উম্মে হাবিবা ও সংরক্ষিত-৪ ওয়ার্ডে রেহেনা বেগম ফেরদৌস চৌধুরী হেরে গেছেন। সাধারণ সদস্যদের মধ্যে গতবার বিজয়ী ওয়ার্ড-৫ (হাটহাজারী ও নগর আংশিক) জাফর আহমদ, ওয়ার্ড-৮ (বোয়ালখালী ও নগর আংশিক) মোহাম্মদ ইউনুছ ও ওয়ার্ড-১৫-এ (লোহাগাড়া) আনোয়ার কামাল পরাজিত হয়েছেন।
কপাল ভালো ৫ জনের : গতকাল অনুষ্ঠিত জেলা পরিষদ নির্বাচনে গতবার বিজয়ী পাঁচ প্রার্থী এবারও ভোটযুদ্ধে জয়ী হয়েছেন। এরা হলেন- চন্দনাইশের আবু আহমদ ঝুনু, পটিয়ার দেবব্রত দাশ, ফটিকছড়ির আখতার উদ্দিন মাহমুদ ও সীতাকুন্ডের আ.ম.ম দিলসাদ। এছাড়া বিনাভোটে জয়ী হয়েছেন পুরানো দুই প্রার্থী আনোয়ারার আলমগীর চৌধুরী ও রাউজানের কাজী আব্দুল ওহাব।