একদিনে আরও ২১৮ মৃত্যু, শনাক্ত ৯৩৬৯

12

নমুনা পরীক্ষা তুলনামূলক কম হওয়ায় দেশে দৈনিক শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যাও কমেছে। তবে মৃত্যু বেড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৩১ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ৯ হাজার ৩৬৯ জনের মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা শনিবার জানিয়েছে। তাদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত হল ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৪৮৪ জন কোভিড রোগী। এই সময়ে মৃত্যু হয়েছে ২১৮ জনের। তাদের নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা ২০ হাজার ৬৮৫ জন হল। সরকারি হিসেবে একদিনে সেরে উঠেছেন ১৪ হাজার ১৭ জন। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত সুস্থ হলেন ১০ লাখ ৭৮ হাজার ২১২ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এই মুহূর্তে সক্রিয় করোনা ভাইরাসের রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার ৫৮৭ জন।
ভারতে উদ্ভূত ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে জুলাই মাসজুড়েই দৈনিক রোগী শনাক্ত ১০ হাজারের আশপাশে ছিল। তবে কোরবানির ঈদের সময় নমুনা পরীক্ষা কমে গেলে রোগী শনাক্তও সাময়িকভাবে কমেছিল। তারপর ২৮ জুলাই রেকর্ড নমুনা পরীক্ষায় রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল।শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে ১৩ হাজার ৮৬২ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তার চেয়ে ১০ হাজার বেশি নমুনা পরীক্ষা করে বৃহস্পতিবার ১৫ হাজার ২৭১ জনের রোগী শনাক্ত হয়েছিল। কিন্তু শনিবারের বুলেটিনে দৈনিক নমুনা পরীক্ষা ১৪ হাজার কমে দাঁড়ায় ৩০ হাজার ৯৮০। খবর বিডিনিউজের।
মহমারি নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞরা নমুনা পরীক্ষা বাড়িয়ে রোগী শনাক্ত করে তাদের আইসোলেশনে নেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরে বলে আসছেন, তাহলে সংক্রমণের গতি রোধ করা যাবে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ২৪ শতাংশ। এই পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশ।
কোরবানির ঈদের ছুটিতে নমুনা পরীক্ষা কমে যাওয়ার পর গত দুই সপ্তাহের যে তুলনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেখিয়েছে, তাতে নমুনা পরীক্ষা ৫৯ শতাংশ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগী শনাক্তের হার বেড়েছে প্রায় ৫৮ শতাংশ।
১৮-২৪ জুলাই এবং ২৪-৩১ জুলাইয়ের তুলনা করে আরও দেখা গেছে, এক সপ্তাহে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে ১৯ শতাংশ, আর সুস্থতার হার বেড়েছে ৩৮ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বাধিক ৪ হাজার ২৭২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে ঢাকা বিভাগে, শনাক্তের হার ৩২ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ২ হাজার ৮২৭ জন নতুন রোগীর মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। শনাক্তের হার ৩৫ শতাংশ।
এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ৫২০, খুলনা বিভাগে ৫৭১, সিলেট বিভাগে ৩৪০, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৮৪, বরিশাল বিভাগে ৩২২ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
জেলার হিসাবেও সবচেয়ে বেশি রোগী ধরা পড়েছে ঢাকায় ২ হাজার ৫৮৩ জন। এছাড়া গাজীপুরে ২৫৭, মুন্সীগঞ্জে ২৬৭, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৬০, কুমিল্লায় ৭১৬, চট্টগ্রামে ৭৪২, চাঁদপুরে ২৯২, নোয়াখালীতে ২২১, ল²ীপুরে ২২২, কক্সবাজারে ২০১, সিলেটে ২০৯, সিরাজগঞ্জে ১৭০, খুলনায় ১৪৫, ভোলায় ১৫৯ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বাধিক ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৫ ও খুলনা বিভাগে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ২২, বরিশাল বিভাগে ১০, রংপুর বিভাগে ১৬, সিলেট বিভাগে ৯ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে গত এক দিনে।
জেলার হিসেবেও সর্বাধিক ৪০ জনের মৃত্যু ঘটেছে ঢাকায়। এছাড়া কুমিল্লায় ১৭, মাদারীপুরে ৬, নোয়াখালীতে ৯, ল²ীপুরে ৬, চট্টগ্রামে ৫, খুলনায় ৬, কুষ্টিয়ায় ৬ জনের মৃত্যু ঘটেছে একদিনে।
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ; তার ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে গত ২৭ জুলাই একদিনে সর্বাধিক ২৫৮ জনের মৃত্যুর খবর জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
দেশে এই পর্যন্ত মৃতদের ৬৭ শতাংশ পুরুষ, ৩২ শতাংশ নারী। গত ২৪ ঘণ্টায় যে ২১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে পুরুষ ১৩৪ জন, নারী ৮৪ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ১২০ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৩৭ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১৭ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৬ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১ জনের বয়স ১০ বছরের কম ছিল। এদের মধ্যে ১৫৬ জন সরকারি হাসপাতালে মারা যান। বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান ৪৯ জন। ১৩ জনের মৃত্যু বাড়িতে হয় বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।