‘ইমরান খান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মিথ্যাবাদী’

11

পূর্বদেশ ডেস্কপাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ‘পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মিথ্যাবাদী’
বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। চলতি বছর ক্ষমতা থেকে উৎখাতের পর ইমরান নির্বাচকদের বিপজ্জনকভাবে মেরুকরণ’ করছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা
বলেন শেহবাজ শরীফ। এ সময় পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফ (পিটিআই) প্রধান ইমরান ২০১৮ সাল থেকে ক্ষমতায় বসে দেশের যেসব ক্ষতি করেছেন সে সম্পর্কেও বলেন শেহবাজ।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই শেহবাজ বলেন, আমার দেশ বর্তমানে একটি অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, আকাশচুম্বী বৈদেশিক ঋণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাসপ্রাপ্ত হয়েছে। ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হওয়ায় দেশে ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে। গত আগস্টে জলবায়ু সঙ্কট ও বিপর্যয়ের কারণে ১ হাজার ৬০০ জন মারা গেছে। লাখ লাখ মানুষ আশ্রয় ও বিশুদ্ধ পানি ছাড়াই ছিল।
এ সময় ইমরান খানকে একজন মিথ্যাবাদী ও প্রতারক বলে অভিহিত করেন তিনি। এর কারণ হিসেবে ইমরান খানের নীতি দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসের মুখে ফেলেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
শেহবাজ বলেন, ইমরান দুর্নীতি বিরোধী ইশতেহার নিয়ে ব্যতিব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু তিনি দেশ পরিচালনায় ব্যক্তিগত এজেন্ডা ব্যবহার করেছিলেন। এ কারণে পিটিআই নেতাকে তিনি ইতিহাসের সবচেয়ে অনভিজ্ঞ, আত্মকেন্দ্রিক, অহংকারী, অপরিণত রাজনীতিবিদ হিসেবে উল্লেখ করেন। খবর বাংলানিউজ’র
গত এপ্রিলে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হলেও ইমরান খান এখনও তার জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন। দায়িত্বভার ছাড়ার আগে তিনি বিরোধী জোটের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার পরিবর্তে সামরিক আইন জারি করার হুমকিও দিয়েছিলেন। এখন নতুন নির্বাচনের ব্যাপারে তিনি বেশ সক্রিয়।
ইমরানের অভিযোগ ছিল, তার ক্ষমতা হাতছাড়া হওয়ার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের চাল রয়েছে। তিনি বলেছেন, একটি বিদেশী ষড়যন্ত্র তার ক্ষমতার পেছনে লেগেছিল। এবং তারা এতে সফলও হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ইমরানের একটি ফোনালাপ ফাঁস হয় গত সপ্তাহে। এ বিষয়টি তুলে ধরে শেহবাজ গার্ডিয়ানকে বলেন, ফাঁস হওয়া অডিওগুলোই প্রমাণ করে ইমরান খান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মিথ্যাবাদী। কথাটি আমি আনন্দ নিয়ে বলছি না, আমি বরং বিব্রত ও উদ্বিগ্ন। ব্যক্তিগত স্বার্থে বলা এসব মিথ্যাচারে আমার দেশের ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আগে কখনো চিন্তিত ছিলাম না। ইমরান খান এই সমাজে অসীম পরিমাণ বিষ ঢুকিয়েছেন। তিনি সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াকে এতটা মেরুকরণ করেছেন যতটা আগে কখনো করেননি। তিনি সত্যকে বিকৃত করছেন এবং ঘৃণা সৃষ্টি করছেন।
ইমরান খানকে মোকাবিলার বিষয়টি পাকিস্তান গণতান্ত্রিক আন্দোলন (পিডিএম) নামে পরিচিত শাসক জোটে বিবাদের একটি প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে। ওয়ারেন্ট জারির পরও পিটিআই প্রধানকে গ্রেফতার না করায় শরীফের ঘনিষ্ঠ অনেকেই প্রকাশ্যে তার নেতৃত্বের সমালোচনা করেছেন।
ইমরানের দাবি, তার জনপ্রিয়তায় শেহবাজের জোট সরকার এখন ভীত। ইমরান এও দাবি করেছেন, এখন আগাম নির্বাচনই কেবল পাকিস্তানেও অর্থনৈতিক রাজনৈতিক সংকটের অবসান ঘটাতে পারে। এ নিশ্চিত করাই সময়ের দাবি বলেও উল্লেখ করেছেন ক্রিকেটে পাকিস্তানের হয়ে প্রথম বিশ্বকাপ জেতা এ অধিনায়ক।