‘ইংরেজি ও যোগাযোগে’ বেশি অদক্ষ চাকরি প্রার্থীরা : জরিপ

13

চাকরির নিয়োগে প্রার্থীরা ‘ইংরেজি ভাষা ও যোগাযোগে’ সবচেয়ে বেশি অদক্ষ বলে এক জরিপে উঠে এসেছে। খন্ডকালীন চাকরিজীবী ও শিক্ষার্থীদের ওপর পরিচালিত ওই জরিপ অনুযায়ী সম্ভাব্য চাকরি প্রার্থীদের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হচ্ছে ‘সৃষ্টিশীলতা’।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) সম্প্রতি ‘স্কিলস গ্যাপ অ্যান্ড ইয়ুথ এমপ্লয়মেন্ট ইন বাংলাদেশ: এন এক্সপ্লোরারি এনালাইসিস’ শীর্ষক এ জরিপ পরিচালনা করে।
দেশের সরকারি বেসরকারি ৪১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের খন্ডকালীন চাকরিজীবী ও চাকরি প্রার্থী ৫০০ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে তথ্য নিয়ে এ জরিপ পরিচালনা করা হয়। এতে সহযোগিতা করে জার্মানভিত্তিক সংস্থা ফ্রেডরিক এবার্ট স্টিফটাং।
গতকাল শনিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহকারী সৈয়দ ইউসুফ সাদাত। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য শিরীন আখতার এবং মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির।
জরিপের ফলাফল তুলে ধরে ইউসুফ সাদাত জানান, অনলাইনে পরিচালিত এ জরিপে নয়টি বিষয় নিয়ে চাকরি প্রার্থীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়। এরমধ্যে ‘যোগাযোগ ও ইংরেজিতে দক্ষতা’ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় বলে দেখা গেছে। এ বিষয়ে চাকরিপ্রার্থীরা মাত্র ৩০ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। আর সবোর্চ্চ ৬৪ শতাংশ নম্বর পেয়েছে ‘সৃষ্টিশীলতা’ খাতে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী জরিপে সবচেয়ে কম নম্বর দেওয়া হয়েছে সংখ্যা-গাণিতিক দক্ষতায়। এ বিষয়ে মাত্র ২৩ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। ‘কিন্তু চাকরিপ্রার্থীরা বিষয়টিকে গৌন বলে উল্লেখ করায় আমরা বিষয়টিকে প্রাধান্য দেইনি’- বলেন এ গবেষক।
এছাড়া জরিপে অংশগ্রহণকারীরা দলগত কার্যক্রম ও নেতৃত্বের দক্ষতায় ৫৪, সময় ব্যবস্থাপনায় ৫২, ‘ক্রিটিক্যাল চিন্তা’ দক্ষতায় ৪৮, সমস্যা সমাধান দক্ষতায় ৪৫, কম্পিউটার অক্ষরজ্ঞানে ৪২ এবং ব্যবসায়িক দক্ষতায় ৪১ শতাংশ নম্বর পেয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আলোচনাকালে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চাহিদাভিত্তিক দক্ষ জনবল গড়ে তোলার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাই এ জরিপ থেকে সরকার সহযোগিতা নিতে পারবে’।
শিরীন আখতার বলেন, ‘আমাদের চাকরির বাজারের জন্য চাহিদাভিত্তিক দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বাছাই করে শিক্ষা ও মানসিক কার্যক্রম পরিচালনা করা উচিত। এরপর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে খাতভিত্তিক পড়াশুনা করিয়ে চাকরির বাজারের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল গড়ে তোলা সম্ভব। তিনি বলেন, এখন বলা হচ্ছে আমাদের যেসব খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ অনেকের, সেগুলোতে দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। এখনও দক্ষতা বাড়ানোর সময় আছে। খবর বিডিনিউজের
নিহাদ কবির বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় গলদ আছে। শিক্ষার্থীদের বাছাই করে খাতভিত্তিক পড়াশুনা করানো হচ্ছে না। এখন সবাই সরকারি চাকরি করতে চায়। মানসিকভাবে খাতভিত্তিক পড়াশুনা ও মানসিকভাবে প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা না থাকার কারণেই কেউ শিল্পে কাজ করার জন্য প্রস্তুতি নেয় না’।