আধুনিক নগরীর স্বপ্নে সিডিএ’র মাস্টার প্ল্যান

50

নিজস্ব প্রতিবেদক

পরিকল্পিত নগর গড়তে সিডিএ’র মাস্টার প্ল্যান তৈরির ‘ড্রোন’ উড়ল আকাশে। ১৫ বছর পর আবারও মাস্টার প্ল্যান তৈরি করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এ প্ল্যান বাস্তবায়ন হলে আধুনিক নগরীর সুফল মিলবে বলে মনে করছেন সংস্থাটি। যদিও ১৯৯৫ সাল ও ২০০৮ সালে তৈরি হওয়া প্ল্যানের শতভাগ বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি বলে দাবি করেন খোদ সংস্থাটির চেয়ারম্যান। গতকাল মঙ্গলবার ড্রোন উড়িয়ে সিডিএ’র পক্ষ থেকে এ মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কাজ উদ্বোধন করেন সিডিএ চেয়ারম্যান এম. জহরিুল আলম দোভাষ। উদ্বোধন শেষে সিডিএ চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এসময় তিনি বলেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ১৯৯৫ সালে মাস্টারপ্ল্যান করে। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান তৈরি করা হয়। বর্তমানে সরকারের রূপকল্প ২০৪১ এর সঙ্গে মিল রেখে ‘চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার মাস্টারপ্ল্যান (২০২০-২০৪১) প্রণয়ন’- র্শীষক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
দোভাষ বলেন, এবার আমরা আধুনিক পদ্ধতিতে সার্ভে করছি। যাতে ভুলভ্রান্তি কম হয়। ড্রোনের মাধ্যমে করলে একটি ডকুমেন্ট আকারে সংরক্ষণ করা যায়। আগে যখন সার্ভে করা হতো, তা ফিজিক্যালি ঘুরে ঘুরে করা হতো। এতে একজন যে রিপোর্ট দিত, তা ভুল হলেও আরেকজন সম্মতি দিয়ে দিত।
আগের মাস্টারপ্ল্যানগুলো কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন মাস্টারপ্ল্যান পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয় না। তবে একটি প্ল্যান তৈরি থাকলে, তা দিয়ে পরিকল্পিত নগরায়ন করা যায়।
এদিকে মাস্টারপ্ল্যান তৈরির এ প্রকল্প চলবে আগামী দুই বছর। সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে একটি পুর্ণাঙ্গ প্ল্যান পাওয়া যাবে। তবে নগরের সকল স্টেকহোল্ডরদের সঙ্গে আলাপ করে বাস্তবায়নযোগ্য মাস্টারপ্ল্যান উপহার দিতে চান সিডিএ চেয়ারম্যান।
প্রকল্প পরিচালক ও উপ-প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আবু ঈসা আনছারী বলেন, প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো চট্টগ্রাম মেট্রোপলটিন মাস্টারপ্ল্যানের উন্নয়নের জন্য একটি কৌশলগত কাঠামো নীতি ও গাইডলাইনগুলি পর্যালোচনা করা এবং ২০২০-৪১ সালের জন্য একটি নতুন মাস্টারপ্ল্যান প্রস্তুত করা। ইতোমধ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও বাংলাদশে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ মাস্টারপ্ল্যানভুক্ত এলাকায় ড্রোন উড্ডয়নরে অনুমতি প্রদান করেছেন। এ পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য ফিজিক্যাল ফিচার সার্ভে’র তথ্য-উপাত্তের সঠিকতা নিশ্চিত করতে ড্রোন সার্ভে মাসব্যাপী সম্পন্ন হবে। এ কাজের জন্য কারিগরি সহায়তা প্রদান করবে ‘ডেটেক্স টিলার’।
মাস্টারপ্ল্যান তৈরির অংশ হিসেবে গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় চউক অফিস প্রাঙ্গণে এবং ভূতাত্তি¡ক সার্ভে কার্যক্রম চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল এন্ড কলেজে অনুষ্ঠিত হয়। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চউক এর বোর্ড মেম্বার জিনাত সোহানা চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস, সচিব মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা, উপ-প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ ও প্রকল্প পরিচালক মো. আবু ঈসা আনছারী, স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা আফরোজ চৌধুরী, উপসচিব অমল গুহসহ চউকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ মাস্টারপ্ল্যানভুক্ত এলাকায় ড্রোন উড্ডয়নের অনুমতি প্রদান করেছেন। এ মহাপরিকল্পনার প্রনয়নের জন্য যাবতীয় তথ্য-উপাত্তের সূ²তা ও সঠিকতা নিশ্চিত করতে ড্রোন সার্ভে মাসব্যাপী সম্পন্ন হবে।
প্রকল্প পরিচালক আরো বলেন, ডাটা সংগ্রহের জন্যে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি ও ক্ষমতা সম্পন্ন ঔঙটঅঠ-০০৭ মডেলের ড্রোন। ইতোমধ্যে সেকেন্ডারি ডাটা ও মৌজা ম্যাপ সংগ্রহ, মৌজা ম্যাপ ডিজিটাইজেশন, বিএম পিলার স্থাপন, ফিজিক্যাল ফিচার/টপোগ্রাফি/ভূমি ব্যবহার তথ্য সংগ্রহ, স্যাটেলাইট ইমেইজ সংগ্রহ, Photogrammetric ওয়ার্ক স্টেশন স্থাপন, সামাজিক/পরিবেশগত/ট্রাফিক/ভূতত্ত¡ তথ্য সংগ্রহ, বোরহোল/মাটির গুনাগুন এর কাজ শুরু হয়েছে। অত্যাধুনিক সার্ভে প্রযুক্তি/যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে।