অভিনন্দন ‘মুকুট মণি’ শেখ হাসিনা

15

 

এবার ‘ক্রাউন জুয়েল’ বা ‘মুকুট মণি’ আখ্যা পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ভাবমুর্তিকে আরো একবার উজ্জ্বল করলেন। উন্নয়নের অভিযাত্রায় অতি ঈর্ষনীয়ভাবে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ, যার কাÐারী বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতার আরো একবার প্রমাণ মিলল এ স্বীকৃতির মাধ্যমে। অভিনন্দন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। অভিনন্দন শেখ হাসিনা। সূত্র জানায়, গত সোমবার ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন নিয়ে আয়োজিত নবম বার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ক্রাউন জুয়েল’ বা ‘মুকুট মণি’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আর্থ ইনস্টিটিউট, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, গেøাবাল মাস্টার্স অব ডেভেলপমেন্ট প্র্যাকটিস এবং ইউএন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সল্যুশনস নেটওয়ার্ক তাকে এমন আখ্যা দিয়েছে। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশগ্রহণ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে রয়েছেন। তিনি সেখান থেকে সম্মেলনে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর সময় ‘ক্রাউন জুয়েল’ বা ‘মুকুট মণি’ বলা হয়। সম্মেলনে অংশ নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান ইউএন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সল্যুশনস নেটওয়ার্কের প্রেসিডেন্ট ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশিষ্ট উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ জেফ্রি স্যাক্স। অধিবেশনে জেফ্রি স্যাক্স শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনার সঙ্গে এক হতে পেরে আমরা আনন্দে উদ্বেলিত। আমরা আপনার কথা শুনতে চাই। আমরা যখন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের অগ্রগতি বিশ্লেষণ করি, তখন দেখি- ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অগ্রগতিতে বিশ্বে প্রথম হয়েছে। তাই আমরা সেই অর্জনের জন্য আপনাকে অভিনন্দন জানাতে চাই।’ জেফ্রি স্যাক্স-এর অভিধায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নয় শুধু, বরং বাংলাদেশের মানুষ হিসাবে আমরাও গর্র্বিত। আনন্দিত।
আমরা জানি, বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। এর রূপকার শেখ হাসিনা বিশ্বসভায় আপন মহিমায় স্থান করে নেয়া একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক নানান ইস্যুতে তাঁর বিচক্ষণ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব জাতি হিসেবে আমাদের গৌরবান্বিত করেছে। আশা জাগিয়েছে বাংলাদেশ একদিন তাঁর হাত ধরে উন্নয়নের সব ধাপ অতিক্রম করে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে এককাতারে শামিল হবে। সেটাও বেশিদূর নয়। এখন থেকে মাত্র দুই দশকের প্রান্তসীমায় বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে সমৃদ্ধিশালী দেশ। এ কথা সত্য যে, দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিকদের জন্য শেখ হাসিনা হয়ে গেছেন একজন অনুকরণীয় নেতৃত্ব। তিনি দেশ-বিদেশের নেতাদের কাছে হয়ে গেছেন আস্থা ও ভরসাস্থল। তার একাগ্রতা, দৃঢ়তা ও দূরদর্শী নেতৃত্ব দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। পার্বত্য শান্তি চুক্তি, গঙ্গা চুক্তি, সমুদ্র বিজয়, নিজস্ব স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মহাকাশ বিজয়, নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা সমুজ্জ্বল হয়েছে।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঐতিহাসিক বিজয়ের পর সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের উন্নয়ন আকাক্সক্ষাকে কটাক্ষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ শাসনে আজ দিন বদল হয়েছে। একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকে এসে সেই মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রের এক সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর আদর্শে এগিয়ে যাচ্ছে।’ ভারতের সাবেক প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির মতে, ‘শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে আছে।’ সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন এবং নারী-পুরুষের সামাজিক সমতা অর্জনের জন্য বিশ্বের বুকে অনুকরণীয়।’ বিশ্বনেতাদের এসব প্রশংসা নিছক বাক্যবিলাস নয়, বরং বাংলাদেশের বিস্ময়কর রূপান্তরের স্বীকৃতি, যার রূপকার বাংলার অবিসংবাদী নেতা শেখ হাসিনা।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর নীতি-নির্দেশনায় সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এসডিজি বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় ও বিভাগভিত্তিক সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ, অর্থায়নকৌশল নির্ধারণ, তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি নিরূপণ, এসডিজি স্থানীয়করণসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। নিবিড় পরিবীক্ষণের ফলে এসডিজি অর্জনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে অগ্রসরমান একটি দেশ। গত ২২ আগস্ট পরিকল্পনা কমিশনের একনেক সভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এসডিজি অগ্রগতি প্রতিবেদন ২০২০-এর মোড়ক উন্মোচন করেন। প্রতিবেদন অনুসারে বেশকিছু সূচকের ক্ষেত্রে ২০২০ সালের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা এরই মধ্যে অর্জিত হয়েছে। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সূচকের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অগ্রগতি অর্জনের পথেই রয়েছে। যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেল। এর আগেও শান্তি প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনাকে বিভিন্ন ডিগ্রি ও পুরস্কার প্রদান করে। তিনি বিদেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও ডিগ্রি ও সম্মাননা পেয়েছেন। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি যা পেয়েছেন বাংলাদেশ তো নয়ই, দক্ষিণ এশিয়ার আর কোনো নেতার পক্ষে তা অর্জন করা সম্ভব হয়নি। পুরস্কারের পাশাপাশি তিনি নেতৃত্ব ও ব্যক্তিত্বের কারণেও বিভিন্ন স্বীকৃতি অর্জন করেন।