২৫ চেয়ারম্যান প্রার্থীর ২০ জনই ব্যবসায়ী

104

চট্টগ্রামে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ২৫ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। প্রার্থীদের মধ্যে ২০ জনই পেশাগতভাবে ব্যবসায়ী। বাকিদের মধ্যে একজন আইনজীবী সহকারী, একজন চাকরিজীবী, একজন কৃষিকাজ, একজন গৃহস্থী ও আরেকজনের পেশা উল্লেখ নাই। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া ১৩ প্রার্থীর মধ্যে ১১ জনই ব্যবসায়ী। বরাবরের মতো এবারের নির্বাচনেও ব্যবসায়ীদের আধিক্য আছে।
শিক্ষাগত যোগ্যতায় চেয়ারম্যান পদের ১৪ জন প্রার্থী ¯œাতক উত্তীর্ণ। বাকিদের মধ্যে ছয়জন এইচএসসি ও আলীম পাস, তিনজন স্বশিক্ষিত এবং একজন শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন নবম শ্রেণী। মনোনয়নপত্রের সাথে জমা দেওয়া হলফনামায় প্রার্থীরা শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পেশাগত এসব তথ্য দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র জমা দেয়া ২৫ প্রার্থীর মধ্যে এবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন সাতজন।
চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান পূর্বদেশকে বলেন, সাত উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে এবং আরো কয়েকটি উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে একাধিক প্রার্থী না থাকায় নির্বাচন হবে না। হলফনামায় প্রার্থীরা যেসব তথ্য উল্লেখ করেছেন আমরা সেগুলো প্রচার করেছি। প্রার্থীদের হলফনামা যাচাইবাছাই শেষে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, আনোয়ারা, মিরসরাই, রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, স›দ্বীপ, সীতাকুন্ড ও হাটহাজারীতে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিনাভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি উপজেলাগুলোর মধ্যে চন্দনাইশে দুইজন, পটিয়ায় তিনজন, ফটিকছড়িতে তিনজন, বাঁশখালীতে তিনজন, বোয়ালখালীতে চারজন ও লোহাগাড়ায় তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতায় আছেন।
প্রার্থীদের হলফনামায় দেখা যায়, চন্দনাইশে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের বিএ পাস প্রার্থী একেএম নাজিম উদ্দিন পেশায় ব্যবসায়ী। তাঁর প্রতিদ্ব›দ্বী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল জব্বার চৌধুরী শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন বিকম। পেশাগতভাবে তিনি জেকে শার্ট এন্ড ফেব্রিক লি. ও এজেসি এগ্রো এন্ড পল্ট্রি লিমিটেড নামে দুইটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক।
পটিয়ার তিনজন প্রার্থীর মধ্যে নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ এবং পেশাগতভাবে ব্যবসায়ী। প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী মুহাম্মদ সাজ্জাত হোসেনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি। তিনিও একজন ব্যবসায়ী। অপর প্রার্থী আফরোজা বেগমের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ হলেও তিনি পেশা উল্লেখ করেছেন ‘প্রযোজ্য নহে’।
ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. নাজিম উদ্দিন প্রথমে এইচএসসি পাস উল্লেখ করলেও পরে তিনি সম্পূরক হলফনামায় স্বশিক্ষায় শিক্ষিত বলে উল্লেখ করেছেন। পেশাগতভাবে ব্যবসায়ী এই প্রার্থী ফ্রেন্ডস এবং ফেন্ডস কোম্পানির একটি মেশিনারিজ পার্টস প্রতিষ্ঠানের আমদানিকারক। আনারস প্রতীকের প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) এসএম আবু তৈয়বের শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি। তিনি বিডিএনভি ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত। লাঙ্গল প্রতীকের জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. আছহাব উদ্দিন স্বশিক্ষিত ও পেশায় একজন আইনজীবী সহকারী।
বাঁশখালীতে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী চৌধুরী মুহাম্মদ গালিব সাদলীর শিক্ষাগত যোগ্যতা বিবিএ এবং পেশাগতভাবে ব্যবসায়ী। আনারস প্রতীকে (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) প্রার্থী খোরশেদ আলম চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি। পেশাগতভাবে তিনি সওজের ঠিকাদার এবং কেএস এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সত্ত¡াধিকারী। কাপ-পিরিচ প্রতীকের (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) প্রার্থী মৌলভী নুর হোসেনের শিক্ষাগত যোগ্যতা আলীম এবং পেশাগতভাবে তিনি বেসরকারি চাকরিজীবী।
বোয়ালখালীতে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. নুরুল আলমের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ। পেশাগতভাবে তিনি ঠিকাদারি ব্যবসার সাথে যুক্ত। আনারস প্রতীকে (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) প্রার্থী মো. আবদুল কাদেরের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিকম এবং পেশায় ব্যবসায়ী। মোটরসাইকেল প্রতীকে সৈয়দুল আলমের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ এবং পেশায় ব্যবসায়ী। জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মো. দিদারুল আলম ফজু পেশায় একজন ব্যবসায়ী।
লোহাগাড়ায় আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী খোরশেদ আলম চৌধুরী স্বশিক্ষিত। পেশাগতভাবে তিনি মেসার্স কেএ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে ঠিকাদারি ও সরবরাহকারী কাজে যুক্ত। দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী এসএম ছলিম উদ্দিন খোকন চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ। তিনিও মোসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কমিশন এজেন্ট। আনারস প্রতীকের প্রার্থী জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুলের শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি। ঠিকাদারি ব্যবসার সাথে যুক্ত এই প্রার্থী মেসার্স হক এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক।
বিনাভোটে নির্বাচিত হতে যাওয়া চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীদের মধ্যে হাটহাজারীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এসএম রাশেদুল আলমের শিক্ষাগত যোগ্যতা মাস্টার্স অব সায়েন্স এবং পেশাগতভাবে ব্যবসায়ী। সীতাকুন্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এসএম আল মামুনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এমবিএ। পেশাগতভাবে তিনি শিপ ব্রেকিং, ডিপ সী ফিশিং ও ট্রেডিং ব্যবসার সাথে যুক্ত। স›দ্বীপে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. শাহজাহানের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ এবং পেশাগতভাবে তিনি গৃহস্থী। রাউজান আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ.কে.এম এহেছানুল হায়দর চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক। পেশাগতভাবে তিনি মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের মালিক এবং প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার ও সরবরাহকারী। রাঙ্গুনিয়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী খলিলুর রহমান চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নবম শ্রেণি। পেশাগতভাবে তিনি কৃষিকাজ ও মৌসুমি চাষাবাদে যুক্ত। মিরসরাইয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. জসীম উদ্দিনের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ। ব্যবসায়ী এ প্রার্থী মেসার্স প্রমি এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স সানজিদ এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স এপলো ও মেসার্স শাহজালাল স্টোরের সাথে যুক্ত। আনোয়ারায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী তৌহিদুল হক চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএ এবং পেশাগতভাবে তিনিও একজন ব্যবসায়ী।