হামাসের ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে ব্যর্থ ইসরায়েলের আধুনিক ‘আয়রন ডোম’

33

স¤প্রতি অবরুদ্ধ গাজা থেকে ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্র বা রকেটের ৬৫ শতাংশই ঠেকাতে পারেনি ইহুদিবাদী ইসরায়েলের অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘আয়রন ডোম’। ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা বাহিনী রিসার্চ ডিপার্টমেন্টের সাবেক প্রধান একথা স্বীকার করেছেন। তিনি খোলাখুলিভাবেই স্বীকার করেন, গাজা থেকে ছোঁড়া সব রকেট ঠেকাতে পারেনি ‘আয়রন ডোম’। খবর জেরুজালেম পোস্টের।
নিজেদের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা আয়রন ডোমকে সর্বাধুনিক ও অত্যন্ত নিখুঁত হিসেবে তুলে ধরেছে ইসরায়েল। তবে এবার তাদের সেই দাবির জোর কমে গিয়েছে। জেরুজালেম পোস্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের রিসার্চ বিভাগের সাবেক প্রধান ইয়াকোভ আমিড্রোর দাবি করেন, অনেকগুলো ক্ষেপণাস্ত্র খুবই নিকট থেকে ছোঁড়া হয়েছে। ফলে এসব ঠেকানোর ব্যবস্থা নেয়ার মতো সময়ও পায়নি আয়রন ডোম। এছাড়া, খালি বা জনমানব বসতিহীন অঞ্চলকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রকে ঠেকানোর কোনো চেষ্টাও করে না আয়রন ডোম। আয়রন ডোমকে তৈরি করার সময়ই এমন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
চলতি মাসের ৪ তারিখে গাজা থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া শুরু হয়। এভাবে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় ৬৯০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়। এরমধ্যে আয়রন ডোম মাত্র ২৪০টিকে প্রতিহত করতে পেরেছে। গাজার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৪ ইসরায়েলি নিহত হওয়ার কথাও স্বীকার করেছে তেল আবিব।
এদিকে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন ইসলামি জিহাদের সশস্ত্র শাখা আল-কুদস ব্রিগেড নিজেদের তৈরি নতুন ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করেছে। ইসরায়েলের অধিকৃত অঞ্চল লক্ষ্য করে নিক্ষেপের মাধ্যমে বদর থ্রি নামের এই ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করা হয়। এর আগে একই ধাঁচের ক্ষেপণাস্ত্র ৪০ কিলোগ্রাম বোমা বা ওয়ারহেড বহন করতে পারলেও বদর থ্রি বহন করতে পারে আড়াইশ কিলোগ্রাম বোমা। ইসরায়েলের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আল-কুদস ব্রিগেড বলেছ, এরপর যা আসছে তা হবে আরও অনেক বড় এবং শক্তিশালী। ইসরায়েলি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে স্বীকার করা হয়েছে যে আয়রন ডোম পরিচালনা ব্যবস্থা খুবই ব্যয়বহুল। একবার মাত্র ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে আয়রন ডোমের ব্যয় হয় ৮০ হাজার ডলার। একে অধিক কার্যকর করার জন্য ডেভিড সিং বা অ্যারো টু ক্ষেপণাস্ত্র সহযোগে ব্যবহার করা হলে এ খরচের পরিমাণ এক ধাক্কায় ২০ লাখ ডলার স্পর্শ করে। রকেট প্রতিহত করার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে দীর্ঘ সময়ের দরকার। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলনগুলোকে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে তেমন কোনো খরচের ধকল সামলাতে হয় না।
ফিলিস্তিনিদের ক্ষেপণাস্ত্র ভান্ডার সম্পর্কে ইসরায়েল হাইওম নামের সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, ফিলিস্তিনে যে ক্ষেপনাস্ত্র মজুদ রয়েছে তা দিয়ে তারা তেল আবিবের বিরুদ্ধে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ অনায়াসে চালিয়ে যেতে পারবে।