‘হামাগুড়ি দিয়ে ভাঙা জানালা বেয়ে পালিয়ে যাই’

58

নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ৪১ জন নিহত হয়েছে। ঘটনার সময় মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে যাওয়া ব্যক্তিরা ভয়াবহ ওই অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন। যাদের একজন নূর। তিনি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমি সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ছিলাম। প্রথমে বাইরে গুলির শব্দ হয়। তারপর বন্দুকধারী ভেতরে এসে এলোপাতাড়ি গুলি করা শুরু করে। “আমার চোখের সামনে গুলিবিদ্ধ লোকজন মাটিতে পড়ে যাচ্ছিল। গুলি মসজিদের দেয়ালে আঘাত করছিল। আমি হামাগুড়ি দিয়ে দেয়ালের দিকে সরে গিয়ে ভাঙা জানালা দিয়ে বেরিয়ে যাই।” অন্য কেউ পালিয়ে যাওয়ার জন্য জানালার কাঁচ ভেঙ্গে ফেলেছিল জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “জানালা দিয়ে বেরিয়ে পাশের একটি দেয়াল টপকে আমি ছুটতে থাকি। দৌড়ে ওই ব্লক পেরিয়ে যাওয়ার পরও গুলির আওয়াজ পাচ্ছিলাম।”
মসজিদে হামলার সময় সেখানে প্রায় দুইশ মানুষ ছিল জানিয়ে মহান ইব্রাহিম নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী নিউ জিল্যান্ড হেরাল্ডকে বলেন, “শুরুতে আমি ভেবেছিলাম বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে এমনটা হচ্ছে। পরে দেখি সবাই দৌড়াতে শুরু করেছে।” যখন তিনি কথা বলছিলেন তখনও তার কয়েকজন বন্ধু মসজিদের ভেতর থেকে বের হতে পারেনি বলে জানিয়েছিলেন তিনি। মসজিদ থেকে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের সাহায্যকারী অন্য এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, হামলাকারী সামরিকবাহিনীর মত পোশাক পরে ছিল। হাতে থাকা স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে সে ক্রামগত গুলি ছুড়ছিল। মসজিদের কাঁচের দরজা ভেঙ্গে বাইরে বেরিয়ে আসা আহমদ আল-মাহমুদ নামে এক ব্যক্তি বলেন, “তার কাছে বড় একটি বন্দুক ছিলৃ সে ভেতরে ঢুকে সবদিকে গুলি করছিল।” তখনও শার্টে রক্তের দাগ লেগে থাকা অন্য একজন বলেন, প্রাণ বাঁচাতে তিনি একটি বেঞ্চের নিচে লুকিয়ে ছিলেন।
“আমি শুধু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছিলাম প্রার্থনা করছিলাম যেন তার বন্দুকের গুলি শেষ হয়ে যায়। “গুলি চলছি, চলছি। আমাদের সঙ্গে থাকা এক নারীর হাতে গুলি লাগে। যখন গুলি থামে, আমি মসজিদের বেড়ার ওপাশে তাকাই, সেখানে একজন তার বন্দুক পাল্টাচ্ছিল।”
টিভি নিউ জিল্যান্ডকে অন্য একজন বলেন, তিনি বন্দুকধারীকে এক ব্যক্তির বুকে গুলি করতে দেখেছেন। তারপর সে প্রথমে পুরুষদের নামাজের কক্ষের দিকে এবং পরে নারীদের নামাজের কক্ষের দিকে যায়। “অপেক্ষা করা এবং প্রার্থনা করা ছাড়া আমার কী বা করার ছিল? ঈশ্বর দয়া করুন, এই ব্যক্তির গুলি যেন ফুরিয়ে যায়।”