স্বাস্থ্যপরীক্ষা ২০ হাজার নাবিকের, আক্রান্ত মিলেনি

42

করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে ৭৮৪ জাহাজে আসা প্রায় ২০ হাজার নাবিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। এদের মধ্যে সংক্রমিত কাউকে পাওয়া যায়নি।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় শুরুর দিকে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি থাকলেও দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ ছিল না। সুরক্ষার অংশ হিসেবে বন্দরের জেটিতে পণ্য খালাসের জন্য আসা জাহাজগুলোর দেশি-বিদেশি সব নাবিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় বলে জানান বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে বন্দর স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নেতৃত্বে কয়েকটি দল জেটিতে আসা জাহাজের নাবিকদের স্ক্রিনিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতার পর গত ৯ ফেব্রূয়ারি থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে স্ক্রিনিং কার্যক্রম শুরু হয়।
বন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোতাহার হোসেন বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের আগে নাবিকদের মধ্যে কয়েকজনকে শুধু রুটিন চেকআপ করা হতো। কিন্তু গত ৯ ফেব্রূয়ারি থেকে ভাইরাসের বৈশ্বিক সতর্কতার জারির পর বন্দরে আসা জাহাজের সব নাবিকদেরই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে।
‘বিশেষ করে নাবিকদের অসুস্থতার ইতিহাস জেনে ইনফ্রারেড হ্যান্ড থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মাপা এবং অন্যান্য চেকআপ করা হচ্ছে।’
গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে বুধবার (৮ জুলাই) পর্যন্ত বন্দর জেটি ও বহির্নোঙ্গরে আসা মোট ৭৮৪ জাহাজের ১৯ হাজার ৮৫৫ জন নাবিকের স্ক্রিনিং করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর মধ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকি আছে এমন কাউকে পাওয়া যায়নি।
ডা. মোতাহার হোসেন বলেন, আমাদের টিম তিন পর্যায়ে নাবিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে। বন্দরের জেটিতে আসা জাহাজে সাধারণ নাবিক থেকে ক্যাপ্টেন পর্যন্ত সকল নাবিককে স্ক্রিনিং করা হয়।
‘বহির্নোঙ্গরে চীন ঘুরে যেসব জাহাজ এসেছে বা আসছে সেখানকার নাবিকদেরও স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। চীন ঘুরে আসা কোনো জাহাজ যদি যাত্রা শুরুর ১৪ দিন আগেই এসে পৌঁছায় তাহলে তাদের ওই সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এছাড়া বন্দরের এক নম্বর জেটি গেইটের ইমিগ্রেশন সেন্টার দিয়ে যেসব নাবিক বের হবে, তাদেরও প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত করোনাভাইরাস সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে।
মোতাহার হোসেন বলেন, গত পাঁচ মাসে কয়েকজন সন্দেহভাজন পাওয়া গেলেও আক্রান্ত কাউকে পাওয়া যায়নি।
তার হিসাব অনুযায়ী, ফেব্রূয়ারি মাসে ১২৭ জাহাজের ২৭৩২, মার্চে ১৫৯ জাহাজের ৫৫৫৫, এপ্রিলে ১৪৫ জাহাজের ৩১৯৩, মে মাসে ১৩৭ জাহাজের ৩৩৪৫, জুনে ১৭৪ জাহাজের ৩৮৫৮ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।
আর জুলাইয়ের আট দিনে ৪২ জাহাজের ১১৭২ নাবিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে একদিনের জন্যও বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ ছিল না। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বন্দরের ২০৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। এর মধ্যে মারা গেছেন নয়জন, সুস্থ হয়েছেন ৬৮জন। আর চিকিৎসা নিচ্ছেন ১২৭জন। খবর বিডিনিউজের