সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের বর্ণাঢ্য জীবনের অবসান

79

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ৯০ বছর বয়সে ইহলোক ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজেউন)। তিনি বাংলাদেশে সেনা প্রধান হতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হন। দীর্ঘ আট বছর দেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। ভালোমন্দ মিশিয়ে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ দেশের প্রশাসনিক বিকেন্দ্রিকরণের প্রতিষ্ঠাতা। তার হাতে উপজেলা পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা পায়। দেশের উন্নয়নে তার উল্লেখ যোগ্য ভ‚মিকা রয়েছে। চট্টগ্রামে তিনিই সর্বপ্রথম কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু তৈরি করে ছিলেন। যা পরবর্তীতে স্থানীয় শাহআমানত সেতুতে রূপান্তরিত হয়। দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায়ও তার অবদান কম নয়। ক্ষমতা থেকে বিদায় নেয়ার পর তিনি দীর্ঘদিন জেলে থাকার পরও বাংলাদেশের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ক্ষমতার টানাপোড়নে এরশাদ বারবার আলোচ্য থেকেছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে। মৃত্যুর পূর্বেও তিনি দেশের বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে নির্বাচিত ছিলেন। রাজনীতির প্লট পরিবর্তনের প্রাসঙ্গিকতায় এরশাদের জাতীয় পার্টি সব সময় রাজনীতিতে সক্রিয় থেকেছে তার নেতৃত্বে।
হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, জাতীয় সংসদের স্পীকারসহ বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ শোক প্রকাশ করেছেন। দেশের পত্র-পত্রিকায় এরশাদের মৃত্যু সংবাদ গুরুত্বের সাথে প্রচার করা হয়। এরশাদের নানা সমালোচনা থাকলেও তিনি জীবদ্দশায় দেশের কল্যাণে বহু কাজ করেছেন। বিশেষ করে রংপুর বিভাগের রাজনীতিতে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত ছিলেন। আট বছর শাসন আসলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তার একটি বলয় তিনি সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। যার কারণে ক্ষমতা থেকে বিদায়ের পরও তিনি তার দল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসন পেয়েছে। রংপুর অঞ্চলের উন্নয়নে তিনি যে অবদান রেখেছেন তার অবদানের কথা রংপুরবাসী পরবর্তীতে ভুলেনি। তারা এরশাদকে তাদের এলাকার উন্নয়নের রূপকার হিসেবে অন্তরে গেঁথে রেখে নির্বাচনে বার বার তার প্রতিদান দিয়েছেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এরশাদ কতটুকু টিকে থাকবেন তা জানি না। তবে একথা সত্য যে, এরশাদ মৃত্যুর পূর্ব মুহ‚র্ত পর্যন্ত দেশের রাজনীতির উত্থান পতনের সাথে সম্পৃক্ত থেকেছেন।
সাবেক রাষ্ট্রতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ মধ্যপ্রাচ্যের সাথে দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে জনশক্তি রপ্তানিতে ভ‚মিকা পালন করতে সক্ষম হয়ে ছিলেন। পরবর্তী সরকারদের আমলে তা আরো সম্প্রসারিত হয়েছে। দেশের উন্নয়নের পরিকল্পনায় এরশাদের সুদূর প্রসারী চিন্তাগুলোকে পরবর্তী সরকারসমূহ আমলে নিয়ে দেশের উন্নয়নকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়েছে। তার প্রবর্তিত উপজেলা পদ্ধতি দেশের রাজনীতিতে প্রশংসিত হয়েছে। এতে কোন সন্দেহ নেই।