সাফল্য ধরে রাখা নিয়ে সংশয়

27

নগরীর সর্বত্র দখল হয়েছে ফুটপাত। দোকানের বর্ধিত অংশ এসে পড়েছে সড়কে। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়কেই চলতে হয় পথচারীদের। এমন অবস্থা যখন নগরীর, তখন ফুটপাত হকারমুক্ত করার ঘোষণা দিলেন মেয়র নাছির। ঘোষণার পরেরদিনই শুরু হয়েছে সেই অভিযান। প্রথমদিনে ২শ দোকান উচ্ছেদ করে দখলমুক্ত হয়েছে চকবাজার কাঁচাবাজার মোড় থেকে ফুলতলা পর্যন্ত সড়কের দুইপাশ। এমন উচ্ছেদ অভিযানের পরও আনন্দের চেয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে জনমনে। কারণ উচ্ছেদের পর আবারও দখলে চিত্র পুরনো। ক’দিন দখলমুক্ত থাকবে সড়ক-ফুটপাত এমন প্রশ্ন-ই ঘুরপাক খাচ্ছে জনমনে।
এ বিষয়ে সিটি মেয়র পূর্বদেশকে বলেছেন, সিটি করপোরেশন যে পরিমাণ উচ্ছেদ অভিয়ান চালিয়েছে তা যদি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা যেত তাহলে আমাদের ফুটপাতের এরকম চিত্র দেখতে হতো না। আলোচনা-সমালোচনা সবাই করে। কিন্তু দায়িত্ব কেউ নিতে চায় না। যারা ফুটপাত দখলের কারণে ভুক্তভোগী তারা তো কোনোদিন প্রতিরোধ গড়ে তোলে না। আমাদের সহায়তা চায় না। এখন অভিযান চালিয়ে পরিষ্কার করছি, জনগণের প্রতি উদাত্ত আহব্বান থাকবে, যাতে প্রতিদিন প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এমন পদক্ষেপের সাথে সিটি করপোরেশন, আমি আ জ ম নাছির উদ্দীন সব সময় পাশে থাকবো।
নগরীর চকবাজার এলাকায় রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে গড়া ওঠা অবৈধ ভাসমান বাজার উচ্ছেদ করা হয়েছে। অভিযানে প্রায় ২০০ স্থাপনা অপসারণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে এই অভিযান পরিচালনা করেন সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে নেতৃত্ব দেন সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফিয়া আখতার ও স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা জজ) জাহানারা ফেরদৌস। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রায় চার ঘণ্টা এই অভিযান চলে।
স্থানীয় বাসিন্দা জাফর আহমেদ জানান, নগরের চকবাজার কাঁচাবাজারের আশপাশে সড়ক, ফুটপাতের ওপর বাজার বসে। এ কারণে প্রায় সময় যানজট তৈরি হয়। পথচারীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়কের ওপর চলাচল করতে হয়। এই বাজার উচ্ছেদ করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন তাঁরা। কিন্তু কার্যত পদক্ষেপ দেখা যায়নি। তবে এবারের উচ্ছেদে সন্তুষ্ট তারা। তবে উচ্ছেদের পর দখলদারদের থাবা থেকে কতটুকু সড়ক-ফুটপাত রক্ষা পাবে, সেটা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, দুপুর ১২টার দিকে অভিযান শুরু করেন সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় চকবাজারের কে বি আমান আলী সড়ক ও হাসমত আলী মুন্সেফ লেনের কাঁচাবাজারের দোকানগুলো উচ্ছেদ করা হয়। এ ছাড়া ফুটপাতের জায়গায় দোকানের জিনিসপত্র রেখে পথচারীদের চলাচলে বাধা সৃষ্টির অভিযোগে ছয় দোকানিকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ফুটপাত-সড়ক দখল করার কারণে ছগির স্টোরকে বিশ হাজার, মুরগির দোকানি মো. জাহাঙ্গীরকে দশ হাজার, মাংসের দোকানি মো. ইসমাইলকে দশ হাজার, মুরগির দোকানি মো. রবিউলকে দশ হাজার, মুরগির দোকানি মো. জহিরকে দশ হাজার ও আনোয়ারা কাঠ বিতানকে দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তাদেরকে রাস্তা এবং ফুটপাত অবৈধভাবে দখল না করার জন্য প্রাথমিকভাবে সতর্ক করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।