সাতকানিয়ায় শিশুকে হত্যা করে চাচা-চাচীর প্রতিশোধ

67

সাতকানিয়ায় বাবার সাথে টাকার বিরোধ নিয়ে দেড় বছরের এক নিষ্পাপ শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের নাম ইমরান হোসেন ছামিম। শিশুটিকে খুন করে বাড়ির পাশে নলকূপের কিনারায় লাশ গর্ত করে পুতে গুমের চেষ্টাও করে। তবে ঘটনার দিনই লাশটি উদ্ধারের পাশপাশি অভিযুক্তদের আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে স্থানীয়রা।
জানা যায়, গত বুধবার বিকাল থেকে নিখোঁজ ছিল ছামিম। পরে লাশ উদ্ধার হয় রাত ১০টায়। চরতী ইউনিয়নের সুইপুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শফিউল কবীর ও চরতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. রেজাউল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আটককৃতরা হলো বাদশা মিয়ার পুত্র নুরুল আবছার মানিক (২৬) ও তার স্ত্রী মারুফা আক্তার (২০)। তাদের বিরুদ্ধে শিশু ছামিমের মা রিমা আক্তার বাদি হয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার আটককৃতদের আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। আটককৃতরা নিহত ছামিমের সম্পর্কে চাচা-চাচী।
আটককৃত আসামি নুরুল আবছার মানিকের সাথে ছামিমের পিতা মামুনুর রশিদের বিদেশ যাওয়া সংক্রান্তে আর্থিক লেনদেন ছিল। মামুন বর্তমানে দুবাইতে অবস্থান করলেও মানিক মামুনের কাছ থেকে টাকা পায় দাবি করে স্ত্রী রিমার সাথে বার বার ঝগড়া হত। এরই মধ্যে গত বুধবার বিকাল চারটায় ছামিমকে তার দাদীর কাছে দিয়ে রিমা আক্তার (ছামিমের মা) পালিত পশুর জন্য ঘাঁষ কাটতে বিলে যায়। আর ছামিমকে নিজের কাছাকাছি জায়গায় রেখে দাদি নামাজ পড়তে যায়। দাদির নামাজ পড়া শেষে নাতি ছামিমকে ঘরের সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে প্রতিবেশীদের বলে। এরই মধ্যে মা বিল থেকে এসে ছামিম নিখোঁজের সংবাদ শুনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং প্রতিবেশীদের সাথে তিনিও বিভিন্নস্থানে খুঁজতে থাকেন। এক পর্যায়ে রাত আটটায় বাড়ির পার্শ্ববর্তী নলকূপের কিনারায় গর্তে পুতে রাখা অবস্থায় ছামিমের মরদেহটি পাওয়া যায়। এরপর সন্দেহবশত চাচী মারুফা আক্তার ও চাচা মানিককে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে থাকে। পরে তাদের ছামিমের খুনি সন্দেহে পুলিশের কাছে তুলে দেয় স্থানীয়রা। চরতী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. রেজাউল করিম বলেন, ঘটনাস্থলটি পাহাড়বেষ্টিত ও নির্জন। অভিযুক্তদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সফিউল কবীর বলেন, সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। গিয়ে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্টের পর মর্গে প্রেরণের জন্য থানায় নিয়ে আসে। পাশাপাশি জনতার হাতে আটক নুরুল আবছার মানিক ও তার স্ত্রী মারুফা আক্তারকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় উপরোক্ত দুই জনকে আসামি করে নিহতের মা রিমা আক্তার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি ঢেমশা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মজনু মিয়া তদন্ত করছেন।