সাগরিকায় নকল চিপস তৈরির কারখানা সিলগালা কারখানার মালিককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা

95

আবাসিক ভবনেই গড়ে তোলা হয়েছে শিশুখাদ্য তৈরির কারখানা। নামকরা প্রায় সব ব্রান্ডের চিপস তৈরি হয় সেই কারখানায়। শিশুখাদ্য উৎপাদনে সংশ্লিষ্ট কোনো সংস্থার অনুমোদন না থাকলেও পণ্যের গায়ে লাগানো হয় অনুমোদনের ‘লেভেল’। শুধু নকল মোড়ক বা লেভেলেই সীমাবদ্ধ নয়, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সাথে ব্যবহৃত প্রত্যেকটি উপাদানও ভেজাল।
এমনই এক কারখানার সন্ধান পেয়েছে সরকারের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার চট্টগ্রাম নগর শাখা। তাদের তথ্য ও প্রত্যক্ষ উপস্থিতিতে অভিযান পরিচালনা করে ভোক্তা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম। তথ্যগুলো জানান ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান।
তিনি পূর্বদেশকে জানান, রবিবার সকালে নগরীর পাহাড়তলী থানার বশির শাহ মাজার এলাকায় ছদু চৌধুরী রোডের ‘বিসমিল্লাহ ফুড প্রোডাক্ট’ কারখানায় অভিযান চালনো হয়েছে। ওই কারখানায় শিশুদের জনপ্রিয় ব্রান্ডের চিপস ভেজাল উপাদান দিয়ে তৈরি করা হত। বিএসটিআইয়ের কোনো অনুমোদন না থাকলেও পণ্যের গায়ে অনুমোদনের লেভেল লাগানো হতো। যেসব উপাদন ব্যবহার করা হত তার প্রত্যেকটি ভেজাল। এমনকি চিপস তৈরিতে যে রং ব্যবহার করা হতো সেটা খাবারের উপযোগী নয়। তারা এসব চিপস তৈরি করে বাজারজাত শিশু স্বাস্থ্যকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে। এই অপরাধে কারখানার মালিককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা ও কারখানাটিকে সিলগালা করে দেওয়া হয়। কারখানার মালিক জয়নাল আবেদিনকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে জরিমানা পরিশোধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অভিযান কালে প্রায় ৫০ হাজার প্যাকেট নকল চিপস ও ব্যবহৃত ভেজাল কাঁচামাল জব্দ করা হয়।
গত কিছুদিন ধরে ভেজাল ও নকল পণ্য উৎপাদনকারী চক্রের সন্ধানে মাঠে নেমেছে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি মূলহোতা ধরা পড়ে। গতকাল রবিবার নকল চিপস তৈরি কারখানার সন্ধান মেলে। বেশ কয়েকদিন ধরে কারখানাটি নজরে রাখার পর অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার নগর শাখা। দুইদলে ভাগ হয়ে সকালে অভিযান শুরু করে। একটি দল মালিক জয়নাল আবেদিন নজরে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে গাড়িযোগে দ্রæত পালিয়ে যায়। পরে এনএসআইয়ের আরেকদর ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তাদের নিয়ে কারখানাটি জব্দ করে।
সূত্র জানায়, শুধু বিসমিল্লাহ ফুড প্রোডাক্ট না, নগরীতে নীরবে শিশুখাদ্যে ভেজাল দিয়ে নকল পণ্য তৈরি করছে একটি চক্র। শিশুদের আগ্রহে থাকা পণ্যটি ভেজাল উপাদান দিয়ে নকল করে বাজারজাত করছে। বিশেষ করে গ্রাম এলাকায় এসব পণ্য সহজেই বাজারজাত হয়। দামে কম হওয়ায় বেশি লাভের আশায় সহজেই বিক্রি করতে সংগ্রহ করে বিক্রেতারা। ফলে চরম ঝুঁকির পড়ছে শিশুস্বাস্থ্য। এছাড়াও প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে ভোক্তা অধিদপ্তর চট্টগ্রামের কর্মকর্তারা।