সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একই ‘পাঠ পরিকল্পনা’

135

দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সপ্তাহের কোনদিন, কোন বিষয়ের কতটুকু অংশ পড়ানো হবে তা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই অনুসরণ করবে সেই ‘পাঠ পরিকল্পনা’ বা লেসন প্ল্যান।
জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা অ্যাকাডেমি (নেপ) এই পাঠ পরিকল্পনার একটি খসড়া এরই মধ্যে তৈরি করেছে। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম-আল-হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ওই লেসন প্ল্যান চূড়ান্ত করে প্রত্যেক স্কুলে পাঠিয়ে দেব। বাংলাদেশের প্রত্যেক স্কুলের লেসন প্ল্যান হবে এক রকম।
বিষয়টির ব্যাখ্যায় সচিব বলেন, ঢাকার নীলক্ষেত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যে পাঠদান হবে, পঞ্চগড়ের একটা প্রত্যন্ত স্কুলের বাংলায় সেই একই পাঠ হবে। কর্মকর্তারা মনিটরিং করবে স্কুলে গিয়ে ওই টিচারের কোনটি পড়ানোর কথা ছিল, সে কোথায় পড়াচ্ছে। একটা মনিটরিংয়ের মাধ্যমে করাপশনকে জিরো করার জন্য এ পদ্ধতি অবলম্বন করেছি।
ঢাকা জেলার চারটি উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা এবং শিক্ষকদের সঙ্গে সচিবালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এসব কথা বলেন গণশিক্ষা সচিব। অনুষ্ঠানে নতুন প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনও ছিলেন। খবর বিডিনিউজের
প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে শিক্ষকদের মা-বাবার ভূমিকায় আসার আহবান জানিয়ে বলেন, আপনারা তাদের ভালোভাবে তৈরি করতে পারলে আগামী বাংলাদেশ ভালোভাবে তৈরি হবে। প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি নিয়ে হয়রানির বিষয়েও কথা বলেন নতুন গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির।
আমি লক্ষ্য করেছি আপনাদের বদলি নিয়ে টিও অফিসে ঝুট-ঝামেলা হয়। অনেক দালাল-ফালাল আপনাদের পেছনে লাগানো আছে, আমি এগুলো টলারেট করব না। কোনো শিক্ষা কর্মকর্তা যদি আমার শিক্ষকদের হয়রানি করেন, আমি তাদের মার্সি করব না, কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হব।
গণশিক্ষা সচিব বলেন, আমাদের সার্কুলার আছে যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সন্তানদের প্রাথমিক বিদ্যালয়েই পড়াতে হবে। আমরা সেটা আবারও তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেব। অর্থাৎ আমরা আবার নিশ্চিত করব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিচারদের ছেলেমেয়েরা কিন্ডার গার্টেনে পড়তে পারবে না।
আগামী দুই মাসের মধ্যে প্রাথমিকের সব শিক্ষকের সার্ভিসবুক সংক্রান্ত ডেটাবেইজ তৈরি করা হবে জানিয়ে সচিব আকরাম বলেন, কোন শিক্ষক কত তারিখে পিআরএলে যাবেন সেটা তাকে এক মাস আগে জানিয়ে দিতে হবে এবং পিআরএল শুরু হওয়ার দুই মাসের মধ্যে সমস্ত আর্থিক সুবিধা নিয়ে যেতে পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এর ব্যত্যয় হলে সেই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিক্ষক সমাজ যাতে কোনোভাবে হয়রানির শিকার না হয়।
প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য নিয়ে সচিব বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে সেটি নিয়ে কাজ করছি, একটা কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে।
আমি ইতোমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, অর্থসচিব ও জন প্রশাসন সচিবের সাথে কথা বলেছি। তারা আমার সাথে একমত পোষণ করেছেন যে, বেতন বৈষম্য দূরীভূত হওয়া দরকার এবং আমরা দ্রুত কার্যক্রম শুরু করেছি। এটা শেষ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেব এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এ সমস্যা সমাধান হবে।
সহকারী শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষকদের নিয়োগ নীতিমালা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অনুমোদন করেছে জানিয়ে সচিব বলেন, এখন তা ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে আছে, আজ-কালের মধ্যে পাওয়ার কথা। এটা পাওয়া গেলে সরকারি কর্ম কমিশনে যাদেরকে প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের পিএসসির সুপারিশ নিয়ে দ্রæত পদোন্নতির ব্যবস্থা করা হবে।