সংযুক্ত আরব আমিরাতের শাসকদের ওপর ‘নজরদারি নেই সিআইএর’

31

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনেক ক্ষেত্রেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মতবিরোধ এমনকি কখনো কখনো দৃশ্যত বিরোধী অবস্থানে থাকার পরও সিআইএ সংযুক্ত আরব আমিরাতের শাসকদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করে না বলে মার্কিন এ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তারা বলেছেন, মার্কিন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইরান কিংবা আল-কায়েদার মতো শত্রুদের বিষয়ে নিয়মিত তথ্য আদানপ্রদান করলেও অন্য অনেক কিছুতেই তাদের অবস্থান পরস্পরবিরোধী।
দুবাই লিবিয়ার জাতিসংঘ সমর্থিত সরকার উচ্ছেদে চেষ্টারত এক সামরিক নেতাকে অর্থ ও অস্ত্র দিচ্ছে; যুক্তরাষ্ট্র বিরোধ মিটিয়ে ফেলতে অনুরোধ করার পরও কাতারের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিতে সৌদি আরবসহ অনেকগুলো প্রভাবশালী দেশকে নিয়ে জোট করেছে এমনকী যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) সাবেক কর্মীদের ভাড়া করে মার্কিনিদের ওপরই নজদারি চালাচ্ছে। কিন্তু এরপরও ‘অস্বাভাবিকভাবে’ সিআইএ সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারের ওপর কোনো ধরনের নজরদারি কর্মসূচি চালাচ্ছে না বলে এ বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থাটির সাবেক তিন কর্মকর্তা দাবি করেছেন। একে দেশে দেশে শাসকগোষ্ঠী ও অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি সংস্থার ওপর গোয়েন্দাগিরি চালানোর জন্য খ্যাত সিআইএর ‘বিপজ্জনক দুর্বলতা’ হিসেবেই দেখছেন অনেক মার্কিন বিশ্লেষক। তারা বলছেন, ওপেকের ছোট কিন্তু প্রভাবশালী এ সুন্নি দেশটি মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার দেশে দেশে এমন কিছু যুদ্ধ ও গোপন অভিযান চালাচ্ছে; অর্থনীতিকে ব্যবহার করে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক মানচিত্র বদলাতে এমন কিছু খেলায় নেমেছে যা ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রমবর্ধমান সামরিক ও রাজনৈতিক উচ্চাকাক্সক্ষার আকার ধরতে এ ব্যর্থতাকে সিআএর ‘দায়িত্ব পালনে অবহেলা’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছেন গোয়েন্দা সংস্থাটির সাবেক আরেক কর্মকর্তা। রয়টার্স বলছে, এনএসএ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভেতর স্বল্প পরিসরে নজরদারি চালালেও সিআইএ সংযুক্ত আরব আমিরাতের তথ্যদাতাদের কাছ থেকে দেশটির স্বৈরশাসকদের ব্যাপারে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে তৎপর নয় বলে তিন সাবেক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটি মোটা দাগে মার্কিন গুপ্তচরবৃত্তির তালিকার বাইরে থাকা অন্য চারটি দেশ-অস্ট্রেলিয়া, নিউ জিল্যান্ড, কানাডা, যুক্তরাজ্যের মতোই সুবিধা পেয়ে আসছে বলেও মন্তব্য তাদের। যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ আছে এমন প্রায় সব দেশেই গোয়েন্দা নজরদারি চালায় সিআইএ, এর মধ্যে প্রভাবশালী মিত্র দেশগুলোও আছে। সিআইএর সাবেক কর্মকর্তারা এক্ষেত্রে সৌদি আরবের প্রসঙ্গও এনেছেন।