শ্রীলঙ্কায় ফের হামলা চালাতে জঙ্গিদের নতুন কৌশল!

47

শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডে’র সিরিজ বিস্ফোরণের নেপথ্যে থাকা উগ্রবাদী গোষ্ঠীর সদস্যরা সে দেশে আবারও হামলা চালাতে নতুন কৌশল অবলম্বনের পরিকল্পনা করছে বলে দাবি করেছে সে দেশের নিরাপত্তা সূত্র। সামরিক পোশাক পরে গাড়িতে চড়ে এই হামলার পরিকল্পনা হয়েছে বলে দাবি করেছে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। পুলিশের একটি ইউনিটের পক্ষ থেকে আইনপ্রণেতা ও বিভিন্ন নিরাপত্তা দফতরে পাঠানো এক চিঠিকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রবিবার ও সোমবার এই হামলা হতে পারে। তবে রবিবার দিনটিতে কোনও হামলার মুখোমুখি হয়নি দেশটি।
২১ এপ্রিল খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ইস্টার সানডে উদযাপনকালে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো ও তার আশপাশের তিনটি গির্জা এবং তিনটি হোটেলসহ আটটি স্থানে সিরিজ বোমা হামলায় অন্তত ২৫৩ জন নিহত হয়। হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তাওহিদ জামাত বা এনটিজে নামে পরিচিত শ্রীলঙ্কার স্থানীয় উগ্রবাদী গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা জাহরান হাশিম মোহাম্মদকে হামলার মূল হোতা হিসেবে সন্দেহ করছে সে দেশের সরকার। আইএস-এর পক্ষ থেকেও দাবি করা হয়েছে, বাগদাদির প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে হাশিমের পরিকল্পনা মাফিক ওই হামলা হয়েছে। শ্রীলঙ্কার নিরাপত্তা বাহিনীর দাবি, নতুন করে সেখানে আবারও হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
আরও কয়েক দফা হামলার আশঙ্কা জানিয়ে শ্রীলঙ্কার আইনপ্রণেতা ও বিভিন্ন নিরাপত্তা দফতরকে চিঠি পাঠিয়েছেন পুলিশের এমএসডি (মন্ত্রিপরিষদের নিরাপত্তা বিভাগ) ইউনিটের প্রধান। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘প্রাসঙ্গিক তথ্য থেকে আরও জানা গেছে, সামরিক পোশাক পরে জঙ্গিরা একটি গাড়ি ব্যবহার করে এ হামলা চালাতে পারে।’ রবিবার কিংবা সোমবার জঙ্গিরা পূর্ব উপকূলীয় বাট্টিকালোয়া শহরসহ পাঁচটি এলাকায় এমন হামলার পরিকল্পনা করেছে বলেও সতর্ক করা হয়। ২১ এপ্রিল ওই বাট্টিকালোয়ার এক গির্জায় হামলার বলি হয়েছিল ২৭ জন। তবে ওই শহর ছাড়া নতুন করে আর কোথায় কোথায় হামলা হতে পারে তা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়নি।
অবশ্য, ২৮ এপ্রিল দেশজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা জারি থাকায় কোনও হামলা সংঘটিত হয়নি। ২১ এপ্রিলের হামলার পর এদিন রাতে প্রথমবারের মতো কারফিউ প্রত্যাহার করে শ্রীলঙ্কার সরকার। তবে রাজধানী কলম্বোতে এদিন জোরালো তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। দুই মন্ত্রিপরিষদ সদস্য ও দুইজন বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তারা নতুন সতর্ক বার্তার ব্যাপারে অবগত আছেন। ২১ এপ্রিলের ওই হামলার ব্যাপারে আগাম গোয়েন্দা তথ্য থাকার পরও তা প্রতিহত করার ব্যর্থতা নিয়ে তুমুল সমালোচনার মুখে রয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার।
মার্কিন স¤প্রচারমাধ্যম সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে হামলা-পূর্ববর্তী সময়ে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যকার পূর্ব দ্ব›দ্ব আরও স্পষ্ট হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে। মন্ত্রিপরিষদের একজন সদস্য বলছেন,প্রধানমন্ত্রী হামলার ব্যাপারে অন্ধকারে ছিলেন। এদিকে দেশটির প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা দাবি করেছেন, পুলিশ ও প্রতিরক্ষা প্রধানরা হামলার আশঙ্কা সম্পর্কে তাকে আগে থেকে কিছু জানায়নি।