শিক্ষাখাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে

36

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই শিক্ষার মানোন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়। শিক্ষাখাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে। ভবিষ্যতেও এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে আমাদের চেষ্টা থাকবে। গতকাল শনিবার সকালে নগরের চশমা হিলের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এসব কথা বলেন। খবর বাংলানিউজের
১৮ বছর আগেও দেশে শিক্ষা ব্যবস্থার এমন চিত্র ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে গেলে পুনরায় স্নাতক শ্রেণিতে পড়তে হতো। এখন দেশে শিক্ষার মান উন্নত হয়েছে এবং সনদও আন্তর্জাতিক মানের হওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সহজেই মেধাবী শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা নিতে পারছে। এই মান ধরে রাখতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জমির অপ্রতুলতায় নতুন সরকারি বিদ্যালয় স্থাপন সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বানিয়ে সেটিকে প্রতিষ্ঠিত করতে যে সময় ও অর্থ ব্যয় হবে, তার চাইতে বিভিন্ন এলাকার ঐতিহ্যবাহি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে শিক্ষক সংখ্যা বাড়ানোর দিকেই নজর দিচ্ছি। প্রয়োজনে সরকারিকরণ করে অধিক শিক্ষার্থীর চাপ সামলাতে দুই শিফটে পাঠদানের ব্যবস্থা করার পরামর্শও এসেছে তৃণমূল থেকে।
নামি-দামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি অভিভাবকদের নির্ভরশীলতা কমাতে প্রান্তিক এলাকার শিক্ষাঙ্গনে লেখাপড়ার মান বৃদ্ধিতে যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করার ওপরও গুরুত্ব দেন নওফেল। এক প্রশ্নের জবাবে পিইসি পরীক্ষার সার্টিফিকেটের প্রয়োজন আছে বলেও জানান তিনি। নওফেল বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণের পরই মেয়াদ শেষ হওয়া এক প্রকল্পের ৬ হাজার শিক্ষকের জন্য তদবির করতে চলে এসেছেন তাদের প্রতিনিধি। জনপ্রতিনিধিদের কাছে ভর্তি ও নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে এলাকার লোকজনের আবদার থাকে। এসব আবদার নিয়ে কেউ মন্ত্রণালয়ে এলে বিব্রত হতে হয়। মেয়েদেরকে স্কুল-কলেজে না দিতে এবং দিলেও সর্বোচ্চ ক্লাস ফোর বা ফাইভ পর্যন্ত পড়ানোর জন্য ওয়াদা নেয়ার বিষয়ে আহমদ শফীর প্রতি ইঙ্গিত করে নওফেল বলেন, নারীরা শিক্ষায় এখন অনেক এগিয়ে। কারও ব্যক্তিগত অভিমত এই অগ্রযাত্রায় প্রভাব ফেলতে পারবে না। বর্তমান সরকার নারীশিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। দেশের শিক্ষানীতি প্রণয়ন বা পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি কোনো নির্বাহী দায়িত্বে নেই। আমরা যারা বাকস্বাধীনতার চর্চা করছি, তাদের মনে রাখতে হবে-সংবিধানে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।
পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িকীকরণ প্রসঙ্গে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, পড়ালেখায় সাম্প্রদায়িকীকরণ করা হলে অদূর ভবিষ্যতে তা আমাদের জন্য ভয়াবহ হয়ে দাঁড়াবে। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মানসিকতায় বিভক্তি সৃষ্টি হবে, নষ্ট হবে সমাজের স্থিতিশীলতা।
আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী উল্লেখ করে তিনি বলেন, হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান প্রত্যেকেই যার যার ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলবে। ধর্মীয় শিক্ষার মানোন্নয়ন হলে সমাজে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হবে না।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ার ও সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমুদ্দিন শ্যামল, স্বাচিপ নেতা ডা. শেখ শফিউল আজম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বেদারুল আলম চৌধুরী সহ নেতাকর্মীরা।