লামায় ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা

19

বান্দরবানের লামা উপজেলায় গভীর রাতে ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় গোলাপী বেগম (৪৭) নামের এক গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল রবিবার ভোরে উপজেলা সদর ইউনিয়নের দূর্গম পাহাড়ি চিউনী খাল পাড়া এলাকায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত গালাপী বেগম চিউনী খালপাড়ার বাসিন্দা মো. শাহ্ জাহানের স্ত্রী ও ছয় সন্তানের জননী। খবর পেয়ে রবিবার সকালে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. আমিনুল হকসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
স্থানীয়রা জানান, ওই এলাকার পুলিশ ক্যাম্পটি প্রত্যাহারের পর ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত চিউনী খাল পাড়া এলাকায় দুই নারীসহ পাঁচ ব্যক্তি খুন হয়। তারা পুনরায় এখানে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের দাবি জানান।
সূত্র জানায়, গৃহবধূ গোলাপী বেগম শনিবার দিনগত রাতে ৬ বছরের মেয়ে আছিয়া বেগম ও নাতনী আমেনা বেগমসহ নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। রাতের কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে তাকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায় এবং বাহির থেকে ঘরের দরজার হুক লাগিয়ে দেয়। রবিবার ভোরে মেয়ে আছিয়া বেগম ঘুম থেকে উঠে মা গোলাপী বেগমের গলা কাটা রক্তাক্ত লাশ দেখে স্বজনদের জানায়। পরে স্বজনেরা পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের খবর দেন।
জানা গেছে, নিহত গোলাপীর স্বামী মো. শাহ্ জাহানের দুই স্ত্রী। ঘটনার দিন রাতে স্বামী শাহ্ জাহান ছোট স্ত্রীর সাথে ছিলেন। নিহত গোলাপী বেগমের ২ ছেলে ও ৪ মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে পাশের বাড়িতে স্ত্রী নিয়ে আলাদা থাকেন। পরিবারের অপর সদস্যরা পাশের ঘরে ঘুমিয়ে ছিলো।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, আগে ওই এলাকায় একটি পুলিশ ক্যাম্প ছিলো। ক্যাম্পটি প্রত্যাহারের পর ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত দুই নারীসহ পাঁচ ব্যক্তিকে খুন করে দুর্বৃত্তরা। তারা আরো জানায়, এলাকা জনশূণ্য করতেই একটি গ্রæপ একের পর এক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটাচ্ছে। তাই চিউনিমুখ নামক ওই পুলিশ ক্যাম্পটি পুন:প্রতিষ্ঠার দাবি জানান তারা।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবুল কাশেম জানান, শাহ্ জাহানের দুই স্ত্রী থাকলেও উভয় পরিবারের মাঝে সুন্দর সম্পর্ক ছিলো। প্রতিবেশীসহ কারো সাথে কোনো বিরোধ ছিলো না।
নিহতের বড় ছেলে মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আমারে ময়ে আমেনা বেগম রাতে আম্মার সাথে ঘুমিয়ে ছিল। কি কারণে, কারা আমার মাকে খুন করেছে আমরা কিছুই জানি না।
এ বিষয়ে লামা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন জানান, দুর্বৃত্তরা কেন গোলাপী বেগমকে হত্যা করেছে তার কারণ জানা যায়নি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমিনুল হক বলেন, ঘটনাস্থল থেকে নিহত গোলাপী বেগমের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বান্দরবান মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে হত্যাকান্ডের কারণ জানা যায়নি। তবে পুলিশ এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন ও ঘাতককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।