মুনিরীয়ার কার্যালয়ে ভাঙচুর আরেকটি মামলা, আটক ১

204

রাউজানে আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেল হককে হত্যা চেষ্টার ঘটনার পর প্রশাসনের অনুরোধে অবরোধ স্থগিতের পর দেয়া ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম আজ (শনিবার) সন্ধ্যায় শেষ হচ্ছে। এই ঘটনায় গতকাল শুক্রবার মনছুর আলম (৩৩) নামে আরেক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে কয়েকদিন আগে হামলার শিকার মোহাম্মদপুরের পীর মাওলানা হাফেজ নুরুল আবছারও গতকাল শুক্রবার রাউজান থানায় পৃথক একটি মামলা করেছেন।
এদিকে গতকাল শুক্রবার বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকেরা নিজ দলের নেতাকে হত্যার চেষ্টার প্রতিবাদে মুনিরিয়া যুব তবলীগের মুন্সিরঘাটাস্থ ১ নম্বর শাখা কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। বিকেল ৪ টার দিকে একটি মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় তারা এই হামলা চালায়। তবে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় কোনো হতাহতের সংবাদ পাওয়া যায়নি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা
নিজ দলের নেতাকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। এতে বক্তারা কাগতিয়া দরবারে অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ অস্ত্র ও অর্থ উদ্ধার করতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান। পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে ঘটনা নিয়ে কথা বলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বশির উদ্দিন খান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জমির উদ্দিন পারভেজ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল ইসলাম চৌধুরী রানা, ইউপি চেয়ারম্যান বিএম জসিম উদ্দিন হিরু, জসিম উদ্দিন চৌধুরী, সুমন দে, আকতার হোসেন, শোহাইব খান, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, নাঈম উদ্দিন চৌধুরী, আবদুল লতিফ, ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আবছার বাসি, আবদুল লতিফ, তপন দে, শাখাওয়াত হোসেন চৌধুরী, জিয়াউল হক, আবু সালেক, আজিজ উদ্দিন ইমু।
রাউজান সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান বিএম জসিম উদ্দিন হিরু বলেন, মামলা হওয়ায় মোহাম্মদপুরের অনেক লোকজন এলাকায় নেই। আ’লীগ নেতা মোজাম্মেলের উপর হামলা ছাড়াও কিছু দিন আগে তারা মোহাম্মদপুরের আলেমেদ্বীন মাওলানা হাফেজ নুরুল আবছারের উপরও হামলা করে তাকে গুরুতর আহত করেছে মুনিরিয়া’র নেতা-কর্মীরা।
রাউজান থানার ওসি মো. কেপায়েত উল্লাহ বলেন, ঘটনার পরপর দুই দায়ী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও গতকাল শুক্রবার বিকেলে মোহাম্মদপুরের মনছুর আলম নামে এক মুনিরীয়া কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়াও মোহাম্মদপুরে হামলার শিকার মাওলানা হাফেজ নুরুল আবছারও একটি মামলা করেছেন।
উল্লেখ্য, রাউজান সদর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর এলাকার শাহ আলম চেয়ারম্যান বাড়ির আহমদ কবিরের ছেলে আ’লীগ নেতা মোজাম্মেল হক গত বুধবার বিকেলে বাড়ি ফেরার পথে মুনিরীয়া কার্যালয়ের দক্ষিণে পূর্ব থেকে ওঁত পেতে থাকা এলাকার মুনিরীয়ার সমর্থক কর্মীরা তার উপর হামলা করে। মোজাম্মেলকে মৃত ভেবে তারা একটি বিলে ফেলে দেয়। পরে স্থানীয়রা মোজাম্মেলকে মুমূর্ষ অবস্থায় রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে অবস্থার অবনতি হয়। পরে চিকিৎসকেরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এই ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার দুই জনকে গ্রেপ্তার ও একটি মামলা করা হয় রাউজান থানায়। পরে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি ও কাপ্তাই সড়কে অবরোধ কর্মসূিচ শুরু করে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনসমূহ। পরে প্রশাসনের আশ্বাস পেয়ে অবরোধ প্রত্যাহার এবং সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন তারা যা আজ সন্ধ্যায় শেষ হচ্ছে।