মাঝারি পেঁয়াজের দাম ১২০ টাকায় নেমেছে

20

খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের আড়তে মিয়ানমারের পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা এবং চীনা পেঁয়াজ সর্বনিম্ন ৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের মূল্য এখন নিম্নমুখি। খুচরা বাজারে ছোট ও মাঝারি সাইজের পেঁয়াজ (মিয়ানমারের) ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় সাইজের পেঁয়াজ (চীন ও মিশর) কেজি প্রতি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহ মণপ্রতি সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৭০ টাকা পর্যন্ত। একই সাথে পাম অয়েল বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ৭২০ টাকা পর্যন্ত। গত বৃহস্পতিবার খাতুনগঞ্জে ঘুরে এসব তথ্য জানা যায়।
কাজীর দেউড়ী বাজারে আসা এক ভোক্তা হুমায়ুন বলেন, ভোগ্যপণ্যের দাম কিছুটা হাতের নাগালে আসলেও পুরোপুরি আসেনি। কারণ এখনো কয়েকটি পণ্যের দাম বাড়তি। এসব বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো উচিত। যাতে কোন সিন্ডিকেট মাথাচাড়া দিয়ে না উঠে।
পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, পর্যাপ্ত আমদানি, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ট্রাকে করে বিক্রি, চাহিদা কমে যাওয়া, দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসাসহ নানা কারণে পেঁয়াজের দাম কমা শুরু হয়েছে।
চীনের পেঁয়াজগুলো দামে সস্তা হওয়ার কারণ জানতে চাইলে আড়তদাররা জানান, চীনা বড় পেঁয়াজগুলোর স্বাদ অন্যান্য (মিয়ানমার, ভারতের নাসিক) পেঁয়াজের তুলনায় অনেক কম। কিন্তু তুলনামূলক সস্তা হওয়ায় মোটামুটি ভালোই চলছে। কাজীর দেউড়ীর খুচরা ব্যবসায়ী মো. লোকমান বলেন, আমরা খুচরা পেঁয়াজে প্রতি কেজি ৫ থেকে ১০ টাকা লাভ করছি, তার বেশি করতে পারছি না। আমরা অতিরিক্ত পেঁয়াজ কিনতে পারি না, কারণ পঁচে যাওয়ার ভয় আছে। সেজন্যে চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি করি।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সভাপতি সোলায়মান বাদশা বলেন, বৃহস্পতিবার ৫০টি পেঁয়াজের ট্রাক বাজারে এসেছে। তার মধ্যে মিয়ানমারের পেঁয়াজ হবে ২০০ টনের মত বাকি এক দেড়শো টন অন্যান্য। তবে এটা বলা যায়, মিয়ানমার, চীন ও তুরস্কের পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। সরবরাহের তুলনায় পাইকারি বাজারে চাহিদা ও বিক্রি দুটোই কম। পেঁয়াজের দরপতনে আমদানিকারকদের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
লাভ লোকসানের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি বা দরপতনে আড়তদারদের কোনো লাভ-ক্ষতি নেই। আমরা শুধু কেজি প্রতি ৩০ পয়সা করে আড়তদারি পেয়ে থাকি।
তেলের ব্যাপারে খাতুনগঞ্জের পিএন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী এমদাদুল হক রায়হান বলেন, সয়াবিন তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজার অনুযায়ী বিক্রি করলে ৩ হাজার ৩০০ টাকার বেশি বিক্রি করার কথা। কিন্তু এখনো বাজারে ৩ হাজার ১০০ টাকার মধ্যে আছে। অর্থাৎ ব্যবসায়ীরা আগের দরেই বিক্রি করছেন।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন পূর্বদেশকে বলেন, খাতুনগঞ্জ বাজারে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ আসছে। কিছুদিনের মধ্যে পেঁয়াজের সঙ্কট কমে আসবে। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা কম দামে কিনলে ভোক্তা পর্যায়ে দামটা আরও কমে বিক্রি করতে পারবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের বাজার মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে। কোন অসঙ্গতি পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।