করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর লড়াইয়ে সফল হতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বয় বাড়ানোর উপর জোর দিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। লাইসেন্সবিহীন রিজেন্ট হাসপাতালকে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া নিয়ে মন্ত্রণালয়ে ও অধিদপ্তরের পাল্টাপাল্টি দোষারোপের মধ্যে এ নিয়ে কথা বললেন কাদের। তিনি মঙ্গলবার নিজের বাসায় থেকে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় বলেন, “মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য বিভাগের মাঝে সমন্বয়ের অভাব আছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
“এ নিয়ে করোনা চিকিৎসার সংক্রমণ রোধ ও অন্যান্য রোগের চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে সুসমন্বয় প্রতিষ্ঠা করা জরুরি হয়ে পড়েছে।”
করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা বাড়িয়ে আক্রান্তদের শনাক্ত করে আলাদাভাবে চিকিৎসার উপরও জোর দিন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী কাদের। তিনি বলেন, “গত কয়েকদিনে আমরা লক্ষ্য করছি করোনা পরীক্ষার নমুনা ক্রমশ বাড়ছে। আবার পরীক্ষিত নমুনা বিবেচনায় আক্রান্তের শতকরা হার বেশি, যা আজকের হিসাবে প্রায় চারভাগের একভাগ। নমুনা পরীক্ষার বাহিরে আক্রান্ত রোগী থাকা অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ এবং সংক্রমণ ছড়াতে পারে দ্রুত।
“তাই নমুনা পরীক্ষা আরও বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ করছি। ল্যাবগুলোর সক্ষমতা অনুযায়ী পরীক্ষা করতে প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রেরণে স্বাস্থ্য বিভাগের কার্যকর ও দ্রুত উদ্যোগ প্রত্যাশা করছি।”
নমুনা পরীক্ষার ফির জন্য যেন পরীক্ষা করানোর প্রবণতা কমে না যায়, সেদিকটি বিবেচনায় নিয়ে করণীয় নির্ধারণে সংশ্লিষ্টদের আহব্বান জানান তিনি। করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া সনদ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সজাগ থাকার আহব্বান জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, “নমুনা পরীক্ষার ভুয়া সনদ একদিকে আমাদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। অন্যদিকে বিদেশে দেশের ইমেজ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে। এই ধরণের অপকর্ম নিন্দনীয় ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আর কোন প্রতিষ্ঠান যেন এই ধরনের অপরাধ করতে না পারে সেই জন্য সংশ্লিষ্টদের নজরদারি বাড়ানোর আহব্বান জানাচ্ছি।”
বন্যা মোকাবেলায় সরকারের নেওয়া পদক্ষেপও তুলে ধরেন মন্ত্রী কাদের।
তিনি বলেন, “দেশে প্রায় ১৫টি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এই বন্যায় আরও অন্যান্য জেলায় ছড়িয়ে পড়তে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বন্যার পানিতে মানুষের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি ফসল, গবাদি পশু এবং অন্যান্য সম্পদ বিনষ্ট হচ্ছে।
“বন্যাদুর্গত এলাকার পানিবন্দি মানুষের সহায়তায় ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে। সরকার পানিবন্দি মানুষকে ইতিমধ্যে আশ্রয়ণ কেন্দ্রে সরিয়ে নিচ্ছে। সেকারণে ১ হাজার আশ্রয়ণ কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে।
“জেলায় জেলায় খাদ্য মজুদ পর্যাপ্ত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্গত এলাকার মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার সরবরাহ করার নির্দেশ দিয়েছেন।”
বন্যাদুর্গত মানুষের মাঝে খাবার সরবরাহ এবং মানবিক সহায়তায় প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আহব্বান জানান কাদের।
কোরবানির হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “বিভিন্ন জেলায় কোরবানির পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না বলে গণমাধ্যমে সংবাদ এসেছে। ক্রেতা-বিক্রেতার অবাধ বিচরণ এবং স্বাস্থ্যবিধির প্রতি অবহেলা পরিস্থিতি ভয়াবহ করে তুলতে পরে।
“তাই পশুর হাটের ইজারাগ্রহিতা, স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ বাহিনীর প্রতি পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য আরও কঠোর হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি “
এই সময়ে অনলাইনে কোরবানির পশু কেনাবেচার জনসাধারণ উৎসাহ দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহব্বানও জানান তিনি।