বাঁশখালীতে রেঞ্জ কর্মকর্তার যোগসাজশে বন উজাড়!

73

বাঁশখালীতে সামাজিক বনায়ন উড়াজ করছে অস্ত্রধারী সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্তরা। নৌকা তৈরিতে গর্জন গাছের স্থানীয় চাহিদা থাকায় রাতের আঁধারে অসাধু চক্রটি গাছ কেটে বিক্রি করে দিচ্ছে। চলমান করোনা ভাইরাসের দুর্যোগের সময়টাতে এমন তান্ডব চালাচ্ছে তারা। তবে পুরো প্রক্রিয়াটি বনরক্ষার দায়িত্বে থাকা রেঞ্জ অফিসারের যোগসাজশে হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের চট্টগ্রাম অঞ্চলের বাঁশখালী উপজেলার জলদী রেঞ্জের অধীনে পূর্ব পুঁইছড়ি বিটে। এমনকি স্থানীয় এলাকাবাসী অবৈধভাবে কাটা গাছ জব্দ করে বুঝিয়ে দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিস জামান শেখ।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত তিনমাস ধরে পূর্ব পুঁইছড়ি এলাকায় সামাজিক বনায়নের শত শত গর্জন গাছ কেটেছে দুবর্ৃৃত্তরা। এ নিয়ে বনরক্ষার দায়িত্বে থাকা রেঞ্জ কর্মকর্তা ও স্থানীয় বিট অফিসার আবদুর রশিদ জেনেও না জানার ভান করে থাকেন। এমনটি গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় জনতা অবৈধ গাছ জব্দ করে বন কর্মকর্তাদের হস্তান্তর করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
এদিকে গাছ কাটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা ভুক্তভোগীদের স্থানীয় সংঘবদ্ধ চক্রটি মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী জানান, রাতের আঁধারে সামাজিক বনায়নে গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে একটি অসাধু চক্র। তারা সবাই বন বিভাগের কমিনিউটি পেট্রোলিং গ্রূপের সদস্য। কথা ছিল বন সংরক্ষণে বন বিভাগকে সহায়তা করবে এই গ্রূপটি। কিন্তু বাস্তবে রেঞ্জ কর্মকর্তা ও বিট অফিসারের লোলুপ দৃষ্টিতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চক্রটি। চুরি করে কাটা গাছগুলো বাজারজাত করে বাদশা, জমির, সমদ, বাহাদুর, নুরচ্ছবি, মঞ্জুরসহ আরও কয়েকজনের চক্রটি।
স্থানীয় লোকজন সমুদ্রে মাছ ধরার পেশার সাথে জড়িত থাকায় নৌকা তৈরিতে গর্জন গাছের বেশ চাহিদা রয়েছে। আর এই চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে কাঁচা টাকা হাতিয়ে নিতে এমনটা করছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এলাকাবাসী আরও জানান, সামাজিক বনায়নগুলোতে আশ্রয় নিয়ে আস্তানা গড়ে তোলে এক শ্রেণির অস্ত্রধারী বনদস্যু চক্র। ওই এলাকার সামাজিক বনায়নের গাছপালা সমৃদ্ধ হতে থাকলে তার উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে অস্ত্রধারী বনদস্যুদের। এ সময় সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সামাজিক বনায়নে অস্ত্রধারী বনদস্যুরা সুযোগ বুঝে দলবল নিয়ে সশস্ত্র মহড়া ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটায়। এলাকায় ভীতি ছড়িয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে নিরীহ বনবাসী ও সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীদের জিম্মি করে রাতে নির্বিচারে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সামাজিক বনায়নের গাছাপালা নির্বিচারে নিধন করে। আর বনরক্ষার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা নিজেরাই জড়িয়ে পড়েছেন এসব কর্মকান্ডে। ফলে সাধারণ বনবাসী ও সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীদের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশা।
এসব বিষয় নিয়ে রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিস জামান শেখের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুয়েক দিনের মধ্যে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হবে। এছাড়া গাছকাটা চক্রের সাথে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি মিথ্যা বলে দাবি করেন।