বাঁশখালীতে গণধর্ষণের আসামি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার

28

বাঁশখালী উপজেলার শেখেরখীল ও চাম্বলে পৃথক অভিযানে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে তিনজন চোরাই কাঠ পাচারচক্রের সদস্য ও একজন গণধর্ষণ মামলার আসামি। গণধর্ষণে অভিযুক্ত আসামির কাছ থেকে একটি ছোরা ও একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে। কাঠ পাচারের সাথে জড়িত তিনজনের কাছ থেকে ৪৫৩ ঘনফুট সেগুন ও গর্জন কাঠ উদ্ধার করা হয়েছে।
র‌্যাব জানায়, রবিবার সকালে গণধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি জসিম উদ্দিন প্রকাশ পুতুইয়া ডাকাতকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে বাঁশখালীর পূর্ব চাম্বল এলাকার মো. কালুর ছেলে। ২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট চাম্বল এলাকায় এক কিশোরী গণধর্ষণের শিকার হয়। গণধর্ষণের মূলহোতা ও এজাহারে প্রধান অভিযুক্ত ছিল জসিম উদ্দিন প্রকাশ পুতুইয়া ডাকাত। গ্রেপ্তারকালে পুতুইয়ার কাছ থেকে একটি একনলা বন্দুক ও একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়। অপর এক অভিযানে শেখেরখীল রাস্তার মাথা এলাকার একটি স’মিলে অভিযান চালানো হয়। এই স’মিলে সরকারি বন থেকে চুরি করে মজুদ রাখা ৪৫৩ ঘনফুট কাঠ জব্দ করার পাশাপাশি তিনজনকে আটক করা হয়। আটক তিনজন হলো- বাঁশখালীর পূর্ব চাম্বল এলাকার কালু মিয়ার ছেলে সাবের আহমেদ (৫০), আবুল হাসেমের ছেলে মো. ফিরোজুল ইসলাম (৩৮) ও আলতাফ মিয়ার ছেলে আলী আহমদ (৩৫)।
র‌্যাব-৭ এর সহকারী পুলিশ সুপার কাজী মোহাম্মদ তারেক আজিজ বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাঁশখালী শেখেরখীলে একটি স’মিলে অভিযান চালিয়ে সরকারি বন থেকে চুরি করে মজুদ করা ৪৫৩ ঘটফুট সেগুন ও গর্জন কাঠ জব্দ করা হয়েছে। কাঠ পাচারের সঙ্গে জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। অপর এক অভিযানে গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে একটি একনলা বন্দুক ও একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।
বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) কামাল উদ্দীন পূর্বদেশকে বলেন, ‘চোরাই কাঠসহ আটক হওয়া তিনজনকে কোর্টে নিয়ে যায় র‌্যাব। কোর্ট আসামিদের হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিলে আমাদের কাছে আনা হয়। অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ধর্ষণ মামলার আসামিকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাদের কাছে আনা হয়নি।’
স্থানীয়রা জানান, দক্ষিণ বাঁশখালীর পাহাড়ি জনপদে বৃক্ষনিধনের সাথে জড়িত আছে সংঘবদ্ধ চক্র। এরা বন বিভাগের লোকজনকে ম্যানেজ করেই নিয়মিত গাছ কর্তন করছে। বিশেষ করে সেগুন ও গর্জন গাছের উপর এ চক্রের দৃষ্টি বেশি। দীর্ঘদিন ধরে এ বনাঞ্চল রক্ষায় দায়িত্ব পালন করা এক কর্মকর্তার সাথে গাছ চোরদের সখ্যতা আছে। এরা নিয়মিত বনভূমি উজাড় করে স্থানীয় সমিল পাঠায় গাছগুলো। স’মিলগুলোতে মাসের পর মাস কাঠগুলো পড়ে থাকলেও বন বিভাগ কোন ধরনের অভিযান পরিচালনা করে না। চাম্বল এলাকায় বনভূমি উজাড় করা সিন্ডিকেটের দাপট বেশি। চাম্বলের বনভূমি উজাড়ের নেতৃত্বে আছেন একজন গডফাদার। তাকে গ্রেপ্তার করলেই বনভূমি উজাড় বন্ধ হবে বলে এলাকাবাসীর দাবি।
জানতে চাইলে ইকোপার্কের রেঞ্জার শেখ আনিসুজ্জামান পূর্বদেশকে বলেন, ‘৫১টি গর্জন বল্লী, ৪২ ফুট গর্জন কাঠ, ২৭ ফুট সেগুন কাঠসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তবে যাদের ধরেছে তাদের বিরুদ্ধে গাছ চুরির মামলা নেই। এরা নতুন সিন্ডিকেট। বড় একটি সিন্ডিকেট এখানে গাছ কর্তন করে। আমরা র‌্যাবের কাছে বিভিন্ন সময় সহযোগিতা চাওয়ায় তারা অভিযান চালিয়েছে।’ গাছ চোরদের বিরুদ্ধে বন বিভাগের করণীয় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এককভাবে অভিযান চালাতে পারি না। এখানে স’মিলে যে গাছগুলো আনা হয়েছে সবগুলো বাঁশখালীর নয়। এখানে চকরিয়া, পুঁইছড়ি ও চাম্বলের পাহাড়ের কাঠ আছে।’