নিশুথি ডাহুক ডাকে

101

এমনি করে রাতগুলো কেটে যায়
শিউলীরা ঝরে পড়ে টুপটাপ শব্দ করে
তারারা হারায় মেঘে মেঘে
তবুও কী দারুণ উদ্ধেগে
আমি বসে থাকি একাকী জানালায়।
কুয়াশায় ঢেকে যায় ল্যামপোস্টের প্রহর
নিশ্চুপ ঘুমিয়ে যায় ব্যস্ত শহর
স্বপ্নেরা তবুও আমাকে
নিশুথি ডাহুকের মু ডাকে
কী এক মায়ায় কাঁদি নিরালায়।
হতাশার জালগুলো ছিরি বারে বারে
অজানা আবেগে মন করে ভার
ঘাসফড়িং এর মন
করে কত আয়োজন
আলো মাখে রোজ মেঘের ভেলায়।

অন্ধকারে বিলীন হবো
স্বপন শর্মা

মরচে ধরা শরীরে
পকেটভর্তি আয়ুষ্কাল কী প্রয়োজন?
অবাধ্য আত্মসম্মানী ভাবনার বলয় থেকে
বেরিয়ে আসার আপ্রাণ চেষ্টা

দেহের সকল অঙ্গ যখন বিকল হলো, দেখেছি-
অবাধ্য সন্তান লক্ষণরেখা ডিঙাতে
আমি বেড়াজালের আবদ্ধতা কেটে উঠি
কোনো সংশয় রাখি না আর
বিগত সময়গুলো ঝেড়ে ফেলি
বাঁচতেই হবে যখন পরাধীনতায়…!

চোখভরা ঘোলাটে নোনাজল মুছতে, মুছতে
শাসন প্রক্রিয়া ভুলে যাই
প্রতিটি রাত-দিনকে বেঈমান ভেবে
রাত জাগা পাখির মতো সাগর পাড়ে দাঁড়িয়ে
চেয়ে দেখি সময় স্রোতের ডাকে
জলে নেমে আসে আঁধার।

তিমির অন্ধকারে একদিন আমিও বিলীন হবো।

বিমুক্তি
মাসুদ পারভেজ

চন্দ্রাবিহীন রাতের বুকে দাঁড়িয়ে ছিলাম
আমার কোন ছায়া ছিলো না,
দিন ফুরোবার সাথে সাথে যেভাবে বৃক্ষ তার ছায়া হারায়।
থেমে যাওয়া ইচ্ছের সাথে সময় কখনোই তাল মেলায় না।
মন বাড়িয়ে বিমুখ পৃথিবীর ব্যাসার্ধের বাইরে খুঁজে দেখি
চলমান সবকিছুর মাঝে শুধু নক্ষত্ররা আমার সাথে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে;
সত্য শুধু একটাই মানুষ কখনোই একা নয়।

স্যান্নাসীর সাথে তার ধ্যান, পাপিষ্ঠের সাথে পাপ,
আর একাকীত্বের সাথে নীরব কিছু কথা।
বেঁচে থাকার জন্য কেনই বা তোমাকে দরকার হবে,
জীবনের পরেই তো জীবনের শুরু।

পৃথিবী ও খুনের গল্প
সাইয়্যিদ মঞ্জু

হিংস্রতার প্রশ্নে বিমুর্ত এই মন
উত্তর পত্রের সাদা পাতায় লিখি
অসহিষ্ণু পৃথিবীও তার বিরূপ মুখ
অথবা মানুষ খুনের গল্প।

জাগতিক চাকচিক্য এই রহস্যপুরী
এখানে মরে না বাঘের থাবায় বাঘ
না এমন-
কুকুরের আক্রান্তে স্বজাতির মৃত্যু
অথচ আছে হিংস্র নখ, বিষদাঁত-মন।

মানুষ মানুষে খেলে প্রাণ সংহার খেলা
প্রাণীকুলেও এ যে বিস্ময়
মানুষ সভ্যতার এই নিত্যকার রূপ
দ্বিধায় দ্যাখি মৃত পৃথিবীর এক মুখ?

শারদা
সুজন কুমার বিশ্বাস

নদীর ঘাটে বালুকা বেলায়
শারদা দাঁড়ায় শিউলিদের মালায়।
সাদা মেঘের পাহাড় থেকে-
তরুণরা দেয় উঁকি।
প্রভাত শিশির সম
বালার মুচকি হাঁসি।
কাশকুমারী নাচে
কুয়াশার আবডালে।
আলো-ছায়ায় ভেলায়
সবুজ বাগান দোলে।

মীম মিজানের
পাঁচটি হাইকু
১. হেমন্তের সকাল

রোদটা মিষ্টি;
সাথে এককাপ চা;
সুখের বিষ্টি।

২. শীতের রস

খেজুর রস;
কাঁপে ঠোঁট ঠান্ডায়;
আহ্ কী জোস!

৩, আরাম খোঁজে

কম্বল গায়ে;
মাথায় মাফলার;
আদুল ভায়ে।

৪. রাতের চিত্র

নিশুত রাত;
হিমহিম লাগেরে;
ভয়ে কাঁপেরে।

৫. প্রথম রাত

ঝিঁঝিঁ ডাকছে;
টুপটাপ শিশির;
শীত হাকছে।

মুজিবকে পড়ে মনে
নুর আহমদ সিদ্দিকী

উনিশ বিশে জন্ম যার পঁচাত্তরেই ইতি
আমরা কদ ভুলবনা সেই বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি
ভাষণে যার অগ্নি ঝরেছে গর্জে উঠেছে দেশ
এক মুজিবের হুংকারে সেদিন জুলুম হয়েছে শেষ।

কবিতার মাঝে মুজিব আসে ইতিহাসে আসে বীর
জালিমের ভয়ে করেনি নত মুজিবের উঁচু শীর
মুজিবের ডাকে জেগেছে দামাল লড়েছে মৃত্যু সনে
আজিকে আবার বিপ্লবী নেতা মুজিবকে পড়ে মনে।