দেশে আরও ৫ জন শনাক্ত আক্রান্ত বেড়ে ৬১

63

দেশে আরো পাঁচজনের মধ্যে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬১ জন। গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এই তথ্য তুলে ধরেন। নতুন করে কারও মৃত্যুর তথ্য না আসায় বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এ মৃতের মোট সংখ্যা আগের মতই ৬ জনে রয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ২৬ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সবাইকে অনুরোধ করব, আপনারা বাসায় থাকার চেষ্টা করবেন, সেল্ফ ডিসটেন্স মেনে চলবেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা, আইইডিসআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, এমআইএস শাখার পরিচালক ডা. হাবিবুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে। এদিন তাদের সবার মুখে মাস্ক দেখা যায়। মন্ত্রীর বক্তব্যের পর সংবাদ সম্মেলনে নতুন আক্রান্তদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানান ডা. আজাদ।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যে ৬ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকায় মারা যাওয়া নারীও রয়েছেন।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, দেশের ৪৩ জেলা থেকে নভেল করোনাভাইরাস পরীক্ষার তথ্য এ পর্যন্ত পাওয়া গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১৩টি নমুনা সংগ্রহের পর পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে আইইডিসিআর ১২৬টি নমুনা পরীক্ষা করেছে। বাকিগুলো অন্যান্য ল্যাব এবং জেলায় করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, আইইডিসিআরের বাইরের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে তিনটি নমুনা পজেটিভ এসেছে। আমরা সংক্রমণ হয়েছে ধরে নিয়ে যে সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার তা করছি। তাদের কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং, আইসোলেশন এই কাজগুলো করা হচ্ছে। কিন্তু যেহেতু নতুন ল্যাবরেটরি, সেগুলো হয়তে আমরা আরেকটু যাচাই বাছাই করব। খবর বিডিনিউজের
আক্রান্তদের মধ্যে ২৯ জন বর্তমানে পর্যবেক্ষণে আছেন। তাদের মধ্যে ২২ জন হাসপাতালে, বাকিরা বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, মানুষের মধ্যে যেন আতঙ্ক না থাকে, সেজন্য তারা ২৬ জন সুস্থ হওয়ার বিষয়টিতে জোর দিতে চান। এটার একটু ব্যাখ্যা প্রয়োজন। যখন কারও শরীর করোনাভাইরাস থাকে, তিনি অসুস্থ নাও হতে পারেন। তার শরীরে অনেক সময় মৃদু লক্ষণ থাকে, দুই-একদিনের মধ্যেই হয়তো মৃদু লক্ষণও চলে যায়। কিন্তু পরপর দুইবার পরীক্ষার পর যদি তার শরীরে ভাইরাস না পাওয়া যায় তখন তাকে আমরা বলতে পারি যে আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়েছেন। এ কারণে সময় বেশি লাগে। নইলে আরও আগে আরও বেশি মানুষকে ছুটি দিতে পারতাম।
এই সময়ে জ্বর ও সর্দিসহ শ্বাসতন্ত্রের রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে। আবার কোভিড-১৯ হলেও সর্দিকাশি হতে পারে। এ কারণে মানুষ আগের চেয়ে বেশি ভয় পাচ্ছে জানিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, “আমাদের পরামর্শ হল, কারও যদি সামান্য জ্বর-গলাব্যথা থাকে তারা বাড়িতেই চিকিৎসা নিন। জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল খাবেন, গলাব্যাথা থাকলে কুসুম গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করবেন। সর্দিকাশির জন্য এন্টিহিস্টামিন সিরাপ খেতে পারেন। অবস্থা জটিল না হলে হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন নাই।”
বেশি অসুবিধা হলে ১৬২৬৩, ৩৩৩, ১০৬৫৫ এসব হটলাইনে ফোন করে পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানান ডা. আজাদ। তিনি বলেন, এখন পর্যন্তদেশে ৬৪ হাজার ২৩৬ জনকে কোয়ারেন্টিন, ২৪৮ জনকে প্রাতিষ্ঠানি কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৫৪৭ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে এবং ৫ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে।