দেশের ১ কোটি মানুষ এখন কর দিতে সক্ষম

44

আমাদের মাথাপিছু আয় যেখানে তিনগুণ বেড়েছে, জিডিপি ৪ গুণ বেড়েছে সেখানে করদাতা আশানুরূপ বাড়েনি। আমি মনে করি দেশের ১ কোটি মানুষ এখন কর দিতে সক্ষম। কর দেওয়াকে দায়িত্ব মনে করতে হবে। গতকাল বুধবার জিইসি কনভেনশন সেন্টারে সেরা করদাতা সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন। খবর বাংলানিউজের
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের মাথাপিছু জমি কম, জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি। কৃষি জমি কমছে। তারপরও দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা মিঠাপানির মাছ ও সবজি উৎপাদনে চতুর্থ, আলু উৎপাদনে সপ্তম।
বাংলাদেশ টেকসই হবে কিনা পাকিস্তানিদের কাছে সংশয় ছিল। এখন পাকিস্তানের টেলিভিশনে বুদ্ধিজীবীরা আক্ষেপ করে বলেন- তাদের বাংলাদেশের মতো বানিয়ে দিতে। আমাদের রিজার্ভ ৩২-৩৩ বিলিয়ন ডলার। আমরা মানব উন্নয়ন সূচকে ভারত পাকিস্তানকে অতিক্রম করেছি।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বিশ্বাস করেন রাষ্ট্রীয় জীবনে স্বপ্ন থাকতে হয়। আমরা স্বপ্নের ঠিকানা অতিক্রম করতে চাই। এর জন্য আমাদের কর দিতে হবে।
জিডিপিতে করের অবদান ১০ শতাংশ, যা নেপালের চেয়ে কম। করদাতা সম্মাননা মানুষকে কর দিতে উৎসাহিত করছে। এটি উপজেলা পর্যায়েও নিয়ে যেতে হবে, ছড়িয়ে দিতে হবে। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশ গড়তে হবে।
অনেক সময় করদাতাদের নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা হয়। যারা করের আওতার বাইরে তাদের কর দিতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সবাই কর দিলে ২০৪১ সালের আগেই আমাদের দেশ স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছে যাবে।
কর কমিশনার জিএম আবুল কালাম কায়কোবাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ এনামুল হক, কর আপিলাত ট্রাইব্যুনালের সদস্য আবু দাউদ, কর কমিশনার ইকবাল হোসেন, মাহবুবুর রহমান, কর আপিল অঞ্চলের কমিশনার হেলাল উদ্দিন সিকদার, ব্যারিস্টার মুনতাসির বিল্লাহ ফারুকী প্রমুখ।
চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, দেশে প্রচুর অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে। পদ্মা সেতু, টানেল, অর্থনৈতিক জোন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ অনেক মেগা প্রকল্প হচ্ছে দেশে। এগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। দেশের মানুষ কর দিচ্ছেন বলে এটা সম্ভব হচ্ছে।
তিনি বলেন, ভ্যাট ট্যাক্সের নামে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা যাবে না। চট্টগ্রামে আধুনিক কর ভবনের যে দাবি উঠেছে তা অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত।
চট্টগ্রাম কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি জামাল উদ্দিন চট্টগ্রামে কর ভবন নির্মাণের দাবি জানান। অনুষ্ঠানে ৩৮ জন সেরা করদাতাকে সম্মাননা দেওয়া হয়।
খান পরিবারের ৪ জনকে সম্মাননা : নগরে ২০১৮-১৯ করবর্ষে দীর্ঘ সময় করদাতা বিভাগে সম্মাননা পেয়েছেন শুলকবহরের এবিএমএ বাসেত ও উত্তর কাট্টলীর আমজাদুল ফেরদৌস চৌধুরী। সর্বোচ্চ করদাতার সম্মাননা পেয়েছেন প্রয়াত একে খানের তিন ছেলে ও এক মেয়ে সদরউদ্দিন খান, আবু মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন খান ও সালাহউদ্দিন কাসেম খান এবং সর্বোচ্চ নারী করদাতা শামিম হাসান। ৪০ বছরের নিচে সর্বোচ্চ করদাতার সম্মাননা পেয়েছেন মো. শাহাদাত হোসাইন।
চট্টগ্রাম জেলা : চট্টগ্রাম জেলায় দীর্ঘ সময় করদাতা বিভাগে রাউজানের মো. হাজী মুছা ও সীতাকুÐের মো. কামাল উল্লাহ, সর্বোচ্চ করদাতা বিভাগে মো. লোকমান, মোহাম্মদ সেলিম ও শেখ নবী, তরুণ করদাতা বিভাগে মো. জাহেদ চৌধুরী এবং নারী করদাতা বিভাগে জান্নাতুল মাওয়া সম্মাননা পেয়েছেন।
কক্সবাজার : কক্সবাজারে দীর্ঘ সময় করদাতা বিভাগে হাবিবুল ইসলাম ও রফিকুল হুদা চৌধুরী, সর্বোচ্চ করদাতা বিভাগে আতিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ আবু কাউসার, প্রকৌশলী মো. আলমগীর, তরুণ বিভাগে সাজ্জাদুল করিম, নারী করদাতা বিভাগে কামরুন নাহার সম্মাননা পেয়েছেন।
খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়িতে দীর্ঘসময় করদাতা বিভাগে শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়া ও মো. শানে আলম। সর্বোচ্চ করদাতা বিভাগে স্বপন চন্দ্র দেবনাথ, মো. নূর আলম ও মোসাম্মৎ ফরিদা আক্তার। তরুণ করদাতা বিভাগে মো. শওকত বাহার এবং নারী করদাতা বিভাগে সুপর্ণা পাল।
রাঙামাটি : দীর্ঘ সময় করদাতা বিভাগে মো. আসাদুজ্জামান মহসিন, সর্বোচ্চ করদাতা বিভাগে লোকমান হোসেন, মো. রফিকুল আলম লিটন ও বদিউল আলম। তরুণ বিভাগে তোফাজ্জল হোসেন। নারী করদাতা বিভাগে চিত্রা চাকমা।
বান্দরবান : সর্বোচ্চ করদাতা বিভাগে মোহাম্মদ নুরুল আবছার, আবদুস শুক্কুর, অমল কান্তি দাশ এবং নারী করদাতা বিভাগে মে হ্লা।