তুমি তুলনাহীনা জননেত্রী শেখ হাসিনা শুভ জন্মদিন

117

বাংলাদেশে গণমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামী চেতনার মানবিক নাম শেখ হাসিনা। তিনি গণতন্ত্রের মানস কন্যা। হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের অবিসংবাদিত নেত্রী। পিতা বঙ্গবন্ধু, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের রূপকার। পরাজিত শত্রুর দল সপরিবারে হত্যা করেছে তাকে। এরপর পরাজিত শক্তিবঙ্গবন্ধুর সোনারবাংলাকে দীর্ঘকাল ক্ষত-বিক্ষত করেছে বিকৃত উল্লাসে। উত্তর কালের বাংলাদেশে দুই যুগ ধরে চলেছে বীভৎস শকুন-উৎসব। এই অরাজক স্বপ্নভুক বৈরীস্রোতে ঘুরে দাঁড়ালেন এক জন। মানব মুক্তির অঙ্গীকারে দৃঢ় দৃপ্ত সংকল্প তার। ধ্বংসের দ্বার প্রান্ত থেকে ডুবন্ত জাতিকে টেনে তুললেন। তিনি আর কেউ নন। তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা, দেশরতœ, তিনি তুলনা হীনা জননেত্রীÑ শেখ হাসিনা।


শেখ হাসিনা অন্ধকার কালের গর্ভে প্রজ্বলিত আলোক শিখা। যখন নেমে আসে ঘোর অমানিশা, ক্রান্তিকাল; তিনি এগিয়ে এসে সাহস দেন, পথ দেখান। তিনি আশা হত বাঙালির ভরসা, দুর্বলের সাহস, হতভাগ্য জাতির ভাগ্যবিধাতা। বিভেদ, বিভ্রান্তি আর হতাশার বালুচরে তিনি গড়ে তোলেন আশার বসতি। তার চোখজুড়ে স্বপ্ন, হৃদয় জুড়ে বাংলাদেশ। মানুষের কল্যাণে তাঁর আত্মনিবেদন। তিনি বহুর মাঝে ঐক্যের যোগসূত্র, দ্বিধা বিভক্ত জাতির জীবনে পরম আশীর্বাদ। পরাজিত শত্রুর আতংক তিনি, সপক্ষ শক্তির অনিঃশেষ সাহস। ক্রান্তি কালের বিশ্বস্ত বান্ধব তিনি, বৈরীস্রোতে নির্ভীক নাবিক। দিক ভ্রান্তজাতির পথদ্রষ্টা তিনি, বৈরী কালের সাহসী সৈনিক। পিতৃমাতৃহীন পরিজন হীন নিঃসঙ্গ, অথচ তিনিই আজ পিতৃহারা জাতির প্রিয় অভিভাবক। তিনি মানবতার অতন্ত্র প্রহরি, জননী মানবতার। মৃত্যুর দ্বার প্রান্তে দাঁড়িয়েও তিনি প্রতিনিয়ত দুহাত বাড়িয়ে দেন মানুষের দিকে। মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন তিনি মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে। জীবনকে ভালবাসেন তিনি মানুষকে ভালবাসার জন্যে। তিনি ত্রাতা, জাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেন। ব্যর্থতার করুণ জমিনে করেন ফসল আবাদ। তিনি দাতা, সোনালি ফসলে ভরে দেন জীবনের মাঠ। তার ব্যক্তিত্ব পর্বতের মতো। গগনস্পর্শী। সিদ্ধান্তে স্থির, অটল, অবিচল, যেন ঐ শিখর হিমাদ্রির। বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতির অপূর্ব সমন্বয় তিনি। আবহমান বাঙালির মূর্ত প্রতীক। তার অন্তর আন্তরিকতায় পূর্ণ, মমতায় মমতাময়ী তিনি, শাসনে প্রশাসনে কোমলে কঠোর। তিনি পথ দেখান পথ হারা জাতিকে। অত্যাচারিত, নিপীড়িত, নিরন্ন, অসহায় মানুষ তার মাঝে খুঁজে পায় পরম আশ্রয়। ভূমিহীন, রাষ্ট্রহীন, বাস্তুহীন মানুষ খুঁজেপায় বেঁচে থাকার সাহস। তিনি জিতলে বাংলাদেশ জিতেযায়। বাংলার মানুষ কিছু পায়। তিনি হারলে হেরে যায় বাংলাদেশ, সবকিছু হারায়। তার স্পর্শে পালটে যায় দেশ। বিশ্ব অবাক তাকিয়ে থাকে। কী এমন শক্তিতার! না, কোনো অলৌকিক প্রণোদনায় নয়, নয় কোনো দৈবিক প্রেরণায়। দেশকে ভালবাসার অসীম ক্ষমতায় তিনি ক্ষমতাবান। মানুষের পাশে থেকে মানুষকে নিবিড় ভাবে ভালবাসতে পারেন একজন, তিনি জননেত্রী হাসিনা, আর কেউ নন। তিনি উদার, পরমত সহিষ্ণু, বিনয়ী অভিভাবক। তিনি স্বপ্নবান। তাঁর স্বপ্ন আকাশ কুসুম নয়। বাস্তব তার রুঢ় জমিতে তার অবস্থান। হাজারো সমস্যা জর্জরিত দেশকে তিনি নিয়ে গেছেন সম্ভাবনার স্বর্ণ শিখরে। বেকারত্ব, হতাশা, দারিদ্র্য পীড়িত দেশকে তিনি উন্নীত করেছেন মধ্য আয়ে। তিনি অসা¤প্রদায়িক বাংলাদেশের বিশ্বস্ত ঠিকানা। তার কাছে মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ, দেশ বিরোধী চক্র আজ পরাজিত, পশ্চাদপদ চিন্তার প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের মুখোশ আজ উন্মোচিত। তার হাতে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী আজ সুদৃঢ়। তিনি অহিংস, নির্মূল করেছেন সহিংসতার অপরাজ নীতি। তিনি বন্ধুবৎসল, বাড়িয়েছেন বন্ধুরাষ্ট্র। তার হাতে বিকশিত হয় এদেশ, তার হাতে সবচেয়ে নিরাপদ বাংলাদেশ। তার যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের অনুকরণীয় আইকন। তলা বিহীন ঝুড়ির অপবাদ মুছিয়ে দিয়েছেন তিনি। এখন বাংলাদেশ আর দরিদ্র নয়, সচ্ছল সফল।
শেখ হাসিনার স্বপ্ন আর আবহমান বাঙালির স্বপ্ন অভিন্ন। একটি অসাম্প্রদয়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলা তার আজন্ম প্রত্যয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি শোষণমুক্ত, গণতান্ত্রিক, প্রগতি শীল, মানবিক সমাজ বিনির্মাণে তিনি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তার প্রত্যয় ও প্রত্যাশার বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতি ফিরে পাবে তার কাক্সিক্ষত বাংলাদেশ। সে বাংলাদেশ হবে সুখী সমৃদ্ধ ও মর্যাদাপূর্ণ বাংলাদেশ। আমরা সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছি।

লেখক : নাট্য ব্যক্তিত্ব