ডাবের পানিতে মেশানো হয় অজ্ঞান হওয়ার ওষুধ!

147

নগরীর নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে অজ্ঞান পার্টির চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত সোমবার সন্ধ্যায় বাকলিয়া ও কোতোয়ালী থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মেহেদী সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, খুলনা জেলার রুপসা থানার বাগমারা এলাকার আবদুল ছমেদ হাওলাদারের ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম (৩০), একই এলাকার জয়নাল সর্দারের ছেলে মো. বাবুল (৩৬), ফিরোজপুর জেলার মঠবাড়ি থানার হাসান আলীর ছেলে রতন মিয়া (৮৫) ও বরগুনা জেলার বামনা থানার মধ্য আমতলী এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে মো. হারুন (৩১)।
এসএম মেহেদী হাসান বলেন, অজ্ঞান পার্টির চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ছিনতাইকৃত টাকা, ১০০টি ক্লোনোজেপাম ইপিট্রা ২ ট্যাবলেট, ৩২০টি ক্লোনোজেপাম লোনাজেপ-২ ট্যাবলেট ও ১৫টি সিরিঞ্জ উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি জানান, এ চক্রের বৃদ্ধ সদস্য ডাব বিক্রেতা হিসেবে কাজ করেন। একই জায়গায় আরেকজন ডাব ক্রেতা হিসেবে অবস্থান করেন। টার্গেট নির্দিষ্ট করার পর বৃদ্ধ ডাব বিক্রেতা ওই লোককে অনুনয় করেন তার কাছ থেকে একটি ডাব কেনার জন্য। বিশ্বাস জমানোর জন্য এ চক্রের অপর সদস্য একটি ডাব কিনেন বৃদ্ধের কাছ থেকে। সবার সামনে সেটি পান করেন। টার্গেটকৃত ব্যক্তি ডাব কেনার আগ্রহ প্রকাশ করলে তাকে অজ্ঞান হওয়ার ওষুধ মেশানো ডাবটি দেওয়া হয়।
ডাব খাওয়ার পর ওই লোক হাঁটা শুরু করলে তার পেছনে এই চক্রের দুই সদস্য যান। যদি ওই ব্যক্তি গাড়িতে উঠেন তাহলে তারা দুইজনও গাড়িতে উঠেন। টার্গেট ব্যক্তি যদি অজ্ঞান হয়ে যান তাহলে এ চক্রের সদস্যরা তাকে আত্মীয় পরিচয় দিয়ে হাসপাতালে নেওয়ার কথা বলে সবার সামনে থেকে তুলে নিয়ে চলে যান। পরে সুবিধামত জায়গায় সব ছিনিয়ে নিয়ে তাকে ফেলে যান বলেন এস এম মেহেদী হাসান।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, সোমবার নতুন ব্রিজ এলাকায় মো. মামুনুর রশিদ নামে এক ফল বিক্রেতাকে অজ্ঞান করে তার কাছ থেকে ২ হাজার ২৫০ টাকা ছিনিয়ে নেন। পরে মামুনুর রশিদের পরিবার থানায় অভিযোগ করলে অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি নেজাম জানান, এ চক্রের সদস্যরা সম্প্রতি আরও কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটান। ২৪ আগস্ট নিউ মার্কেট এলাকায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মেহেদী হাসান রকিকে অজ্ঞান করে তার কাছ থেকে মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়।
সংবাদ সম্মেলনে সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মুহাম্মদ আবদুর রউফ, চকবাজার জোনের সহকারী কমিশনার মুহাম্মদ রাইস্লু ইসলাম ও কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীনসহ অভিযান পারিচালনাকারী টিমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।