ট্রাম্পের বিপক্ষে মার্কিন সিনেটরের অবস্থান

39

ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটকে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বন্ধের ব্যাপারে মত দিয়েছেন মার্কিন সিনেটররা। দেশটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই সহায়তা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে মত দিয়ে আসলেও বৃহস্পতিবার এক ভোটে সহায়তা বন্ধের পক্ষে রায় দেন তারা। এছাড়া তুরস্কে নিহত সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকান্ডে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান জড়িত বলেও একমত হয়েছেন সিনেটররা।
২০১৫ সালে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদিকে উচ্ছেদ করে রাজধানী দখলে নেয় ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা। সৌদি রাজধানী রিয়াদে নির্বাসনে যেতে বাধ্য হন হাদি। হুথিদের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই হাদির অনুগত সেনাবাহিনীর একাংশ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। ২০১৫ সালের মার্চে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মিত্রদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ‘অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। সৌদি জোটের অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে অনেক নারী-শিশুও রয়েছে। অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তানবুল কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার পর এই যুদ্ধের সমালোচনা তীব্র হতে থাকে। ডিসেম্বরের গোড়ার দিকে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনে মানবিক সহায়তার জন্য ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন। বৃহস্পতিবার সিনেটে ইয়েমেন যুদ্ধে সহায়তা বন্ধের বিষয়টি ৫৬-৪১ ভোটে পাশ হয়। সাতজন রিপাবলিকান তাদের দলীয় অবস্থান থেকে বের হয়ে এই সিদ্ধান্তের পক্ষে রায় দেন। এই রায়ে সমর্থন জানানো শীর্ষ রিপাবলিকান সিনেটর মাইক লি বলেন, ‘যুদ্ধ শুধু একটি স্থানে থেমে থাকে না। কিংবা এটি শুধু দুই সেনা সদস্যের গুলির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আধুনিক যুদ্ধে এতে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স বলেন, ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটকে আর সহায়থা করবে না যুক্তরাষ্ট্র। এই সংকটে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছে ৮৫ হাজার শিশু। ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তার কংগ্রেসকে আহব্বান জানান যেন ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে পেন্টাগনের অবস্থানকে নিয়ে কিছু বলা না হয়। পররাষ্ট্রমন্তী মাইক পম্পেও ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস সৌদি আরবকে সহায়তার বিষয়টি ইরানের বিরুদ্ধে লড়াই বলে অভিহিত করেন। গত ৯ নভেম্বর পেন্টাগন ঘোষণা দিয়েছিলো যে তারা সৌদি জোটকে সহায়তা বাড়াচ্ছে। সিনেটররা এদিন জাতিসংঘ সমর্থিত শান্তি আলোচনার দিকে ইঙ্গিত করেন এবং জানান যুক্তরাষ্ট্রেরও চাপ প্রয়োগ করা উচিত।