জলচোরা তিথি

89

১.
মোলায়েম বিকেলের স্নিগ্ধতা গায়ে মেখে রোমাঞ্চকর এক সন্ধ্যা নাবতে শুরু করেছে এই ব্যস্ত শহরে। খানিক তফাতে তফাতে জ্বলে উঠছে নিয়নবাতির আলো। কোনোটার আলো ডিমের কুসুমের মতন হলুদ, আবার কোনোটা দুধ-সাদা আলো ছড়িয়ে হাসছে। ব্যাংক কর্মকর্তা মুনিয়া সাবের সে আলোয় সন্ধ্যার স্নিগ্ধতা শরীরের মেখে শ্রান্ত পায়ে হাঁটছেন।
পায়ের গতি বেশ মন্থর হয়ে এসেছে মুনিয়ার। অদূরে জরিনা ভাবির চায়ের দোকানটা চোখে পড়ে। পুরুষ লোক বিশেষ নেই এখন, দু একজন আছে। তারা অবশ্য চেনা, মুনিয়ার। দিনমজুর রফিক ভাই আর আজাদ ভাই। বাতির আলোতে খেটে খাওয়া মানুষ দুটির মুখের হাসির লেশ যেন মুনিয়ার দৃষ্টি আটকে দিচ্ছে বারবার। গরীর লোক হলে কি হবে! মনে এরা অনেক ধনী। সম্মান করতে জানে মেয়েলোককে। মুনিয়াকে আসতে দেখে উঠে দাঁড়ায়। কুশলাদি বিনিময় করে বসতে দেয়। মুনিয়া আজ খুব একটা মন দিয়ে কথা বলে না ওদের সাথে। পান মুখে দিয়ে দোকান ছাড়ে ওরা।
আজ অবশ্য সপ্তাহের শেষ দিন। ঘরে ফেরার তাড়া নেই মুনিয়া সাবেরের। আসলে কি ঘর আছে? কে আছে, কি আছে সেই ঘরে? প্রশ্নরা জটলা পাকাচ্ছে মনে। এমন প্রশ্নমুখর অস্থিরতায় একটা গল্প প্রায়শ মনে খচখচ করে। সময়ের থোকা থোকা আঁধারে বারো বছরের পুরনো সে স্মৃতি হারিয়ে যেতে পারতো। কিন্তু, কেন যে বেঁচে আছে স্মৃতিটা, সেটাই ভেবে পায় না।
২.
‘ছি! লজ্জা করছে না আপনার?’
মুনিয়ার চোখে যেন পোয়াতি শ্রাবণের জলধারা! বয়ে চলছে বিরামহীন। থামার নামটি নেই। বাহিরে চৈত্রের আকাশ, সূর্যটায় রাক্ষুসে তাপ!
খানিক কাঁদলো মেয়েটা। চোখের জলের শ্রাবণে বিরাম এলো আরো কিছু সময় পরে। চোখ মুছে নিচ্ছে ভার্সিটিপড়ুয়া পলিমার ক্যামিস্ট্রির ফাইনাল ইয়ারের স্টুডেন্ট মুনিয়া। তবে তলপেটের ব্যথাটা বৈতালীর মতন হাসছে, অশান্তি বাড়াচ্ছে খুব।
‘ম্যাম, বিষয়টা আমার ব্যক্তিগত; আপনার নরমাল সেন্সও নেই মনে হচ্ছে! আমার জায়গায় যদি আপনার মেয়ে হত, তাকে কি এত কথা বলতে পারতেন?’ – আপেলরঙা পাতলা গড়নের মেয়েটা বকবকিয়ে মেয়েদের মতন বলে ফেললো কথাগুলো, চোখে উত্তর পাবার নিরাসক্তি।
‘আপনার মেয়ে’ শব্দ দুটি যেন বুকের বামপাশের আবাদী উর্বর প্রেইরি খেতে লিকলিকে আগুন ধরিয়ে দিল। পঞ্চাশ বছরের বয়স-পিরামিডে উত্তীর্ণ ডাক্তার মনিকা মুন যেন চেম্বারে বসেও ফিরে গেলেন ঘরে। যেখানে হয়তো-বা আজ মেহগনি গাছের কাঠ দিয়ে বানানো মধ্যবিত্ত ডৌলের পালঙ্কটা পড়ে থাকে। একটা পড়ার টেবিল, টেবিলের সাথে মাননসই একটা চেয়ার। আর কিছু নেই; দৈর্ঘ্যে পনেরো ফিট, প্রস্থে দশ ফিট দোচালা ঘরটাতে। শুনতে যেমন বেঢপ, চোখের দৃষ্টিতেও তেমন বিশ্রী সে ঘর!
ঘরটা এমন ছিল না। চিরযৌবনা চাঁদটা নিয়ম করে প্রায়শ বাতাবিলেবুর পাতাকে ভেদ করে অন্ধকারকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কড়াই কাঠের জানালা ছুঁয়ে ঠিক চুমু এঁকে দিত, তিনটা সুখী মানুষের কপোলে।
লাভ ম্যারেজ ছিল। মুবিন আশফাক, তিন মাস বয়সী মেয়ে মাইশা আর ডাক্তার মনিকা— ‘পৃথিবী’ নামের এই গ্রহের সবচে’ সুখী মানুষ ছিল যারা। আজ তারা নিখিলেশ, রমা রায়ের মতন যোগাযোগবিচ্ছিন্ন মানুষ। কারো সাথে কোনো যোগ নেই, যেন পৃথিবী একটা আস্ত বিরানভূমি! যেখানে কোনো মানুষ থাকে না। অমানুষে ভরে গেছে ইঞ্চি ইঞ্চি বসুধা! তুচ্ছ কারণে তালাকপ্রাপ্ত ডাক্তার তাই একা। তিন মাসের সন্তানটাকেও নিয়ে আসতে দেয় নি।
‘ম্যাডাম!’
মুনিয়ার বিরক্তি ভরা কণ্ঠস্বরে যেন চৈতন্য ফিরে পেলেন ডাক্তার। যথাস্থান চেম্বারে মনোনিবেশ করলেন, বুকের ভিতরে কেমন ছ্যাত ছ্যাত করছে এখনো! এতদিন বাদে ঠিক পঁচিশ বছর আগে ফিরে গিয়েছিলেন মনিকা।
চশমাটা নাকের ডগা পর্যন্ত নেমে এলে ডাক্তার লিখতে আরম্ভ করলেন, প্রেসক্রিপশনে। মিনিট পাঁচেক সময় খরচা করে গোটা আটেক পথ্য লিখে দিলেন। কি সব নাম লিখলেন একটা অক্ষরও আন্দাজ করা দায়! ডাক্তারদের হাতের লেখাই এমন।
‘কোথায় থাকা হয়, মেসে না হলে?’
নতমুখে থাকা মুনিয়াকে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন ডাক্তার।
হঠাৎ-ই যেন ‘বোবা-বনে’ রওনা করলো পঁচিশ বছর বয়সী মুনিয়া, ঠোঁট জোড়া লেগে আছে; খুলছে না।
তখন দুপুরের রোদটা নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। শিমুল ঝরা চৈত্রের দুপুর। ভ্যাপসা গরম বাতাসে ভেসে আসছে অদূরে ডেকে যাওয়া কোকিলের মন মাতোয়ারা করা মিষ্টি ডাক।
বোবা-বন থেকে ফিরে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেছে মুনিয়া।
কি এমন কষ্ট মেয়েটার! তাৎক্ষণিক আন্দাজের প্রবল চেষ্টা করলেন ডাক্তার। কিন্তু, বুঝতে পাচ্ছেন না। আসলে এমন কিছু মুহূর্ত আসে যখন মানুষের মনের ভাবগতি আন্দাজ করা বড্ড কঠিন, আচ্ছা বেগতিক হয়ে ওঠে!
‘মা, তুমি চুপ করো প্লিজ!’
মুনিয়ার মনটা কেমন জলের মতন সরল হয়ে গেল মুহূর্তে। ঠিক চার বছর পর যেন ‘মা’ ডাকটা শুনলো মুনিয়া, এমনটাই মনে হলো। কান্না থেমে গেছে ততক্ষণে। ভেতরটা কেমন শীতল হয়ে গেল ‘মা’ ডাকে।
চেম্বার ছেড়ে উঠলেন ডাক্তার। মুখে বললেন: চলো তোমাকে এক জায়গায় নিয়ে যাই, ওখানে তুমি নিরাপদে থাকতে পারবে ক’দিন। ভেবো না, ভয়ের কিছু নেই।
যাবে? নাকি যাবে না? বিপরীতমুখী প্রশ্নরা মাথায় খোঁচা দিচ্ছে যেন!
না, এখন একটা নিরাপদ আশ্রয় দরকার। অন্তত শরীরটা একটু সুস্থ করার জন্য। আর যাই হোক- মেয়েমানুষের শরীর ঠিক তো তার দর ঠিক।
‘আচ্ছা, ম্যাম। চলুন।’
ক্লিনিকের গেট পেরুতেই রিকশাওয়ালাদের ভিড়।
‘আপা, মোর ইসকাত ওটো। মুই বাড়িত নামে দিম এলা। ভাড়া না হইলে পাঁচটা টাকা কম দেন! তাও চলো তোমরা।’
রিকশাওয়ালাদের এমন ন্যাকামি বাজে লাগে মুনিয়ার। ডাক্তারের চোখ খানিক দূরে অবস্থানরত বয়স্কগোছের রিকশাওয়ালার দিকে।
‘ভাই, আমাকে বাসায় নিয়ে যান না একটু!’
‘আচ্ছা, আপা। আইসো।’
রিকশায় উঠলো ডাক্তার ও মুনিয়া। রিকশা নির্বাচনে এমন সিদ্ধান্তে প্রথমে মুনিয়া অবাক হলেও এখন ব্যাপারটা বুঝতে পারল। যে দুজন রিকশাওয়ালা পাঁচ টাকা কমেও নিয়ে যেতে চাইলো, ওদের রিকশা এই রিকশার মতন ‘অটোরিকশা’ নয়। আর ওদের একজনের রিকশায় গেলে অন্যজন ঠিক পরে ঝগড়া বেঁধে দিত। তাই ডাক্তার বুড়ো চাচার রিকশা নিয়ে ভালোই করেছেন।
প্রসব বেদনায় কুঁকড়ে যাওয়া অজগরের মতন একটা পাকা সড়ক। রিকশায় বসে না গিয়ে হেঁটে যাওয়া শতগুণ নয়, হাজারগুণ ভালো ছিল। শরীরে ব্যথাটা কেমন চিনচিনিয়ে উঠছে মুনিয়ার।
যাক, এমন অন্ধকারের সময় ‘নিয়নবাতির আলো’র মতন ডাক্তার ম্যাডাম পাশে দাঁড়ালেন। না হলে পড়াতে গিয়ে স্টুডেন্টের বাবার কাছে টগবগে যৌবনে পুষিয়ে রাখা সতীত্ব হারানো মেয়েকে এ জগতে কে ঠাঁই দেয়? বাপ-মা তো নাই, এতিমখানার বুয়া রুপসী চাচি ছিল মা আর রজিদ চাচা-ই বাবা। সড়ক দূর্ঘটনায় ওপারে চলে গেল তারা। ততদিনে ভার্সিটি পর্যন্ত উঠেছে মুনিয়া। দুই-তিনটে টিউশনি-ই চলার ভরসা ছিল।
সন্ধ্যা সাতটা। কাজের মেয়েটা তখনো আসে নি, পারুদের বাড়ির। পারু পড়া শেষ করে পাশের গলিতে বান্ধুবীর বাড়ি গেছে, নোট আনতে; এইচএসসি পরীক্ষা সামনে। ওর মা ফেরে নি, অফিস থেকে। রাকেস সাহেব আছেন।
‘চা, খাবে?’
‘খাওয়া যায়। তবে ভাইয়া আমার এ মাসের টাকা আজ দিলে ভালো হত।’
‘আচ্ছা, দিচ্ছি।’ বলে মানিব্যাগটা খুঁজলেন, পেলেন, হাজার টাকার পাঁচটা নোট হাতে ধরিয়ে দিলেন মুনিয়ার।
ব্যস! তারপর। চায়ের সাথে তন্দ্রাঘন করার ওষুধ বোধ হয় মিশিয়ে ছিলেন। নিরুপায় মুনিয়া বাঁধা দেয়ার শক্তি হারিয়ে ফেলেছিল সেদিন। নইলে জীবনের প্রথম পুরুষের ছোঁয়াটা এভাবে নিত না সে। সম্ভোগের পর ঘর থেকে সরে পড়ে পারুর বাবা।
লজ্জা, ক্ষোভে মরে যেতে চেয়েও মরে নি সেদিন। নিজের শরীরের কাপড়-চোপড় সব এলোমেলো। ঝাপসা চোখটা দেয়ালঘড়িতে পড়লে দেখে- রাত নয়টা। বাসা সুনসান। ভাবি, কাজের লোকটা, পারু কেউ ফেরে নি।
কোনোমতে নিজেকে সামলে রাতের আঁধারে পালিয়ে এই চিরচেনা মফস্বল শহরে আসে মুনিয়া। যে এতিমখানায় বড় হয়েছে সেখানেই ওঠে। দুই মাস থাকার পর তার কাছে মনে হচ্ছে এখানে থাকাটা উচিত হবে না আর। অন্য কোথাও উঠতে হবে। কারণ, এখানকার অনেকেই তার মেসের আশপাশে রিকশা চালাতে যায়। এই জঘন্য ঘটনার খবর রাষ্ট্র হয়ে গেছে দু একদিন হলো। একজনের মুখে শুনেছে সকালবেলা। এখানে মুখ দেখানো মুশকিল হতে পারে, এখন।
ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে গর্ভপাতটা করানোই তাই ঠিক সিন্ধান্ত মনে হয় মুনিয়ার। প্রথম পুরুষের নোংরা স্মৃতি কখনই পবিত্রতায় বেঁচে থাকতে পারবে না। কে নেবে এই সন্তানের পিতৃত্বের ভার? পারুর বাবা? ওই মাদারচোদ নেবে না কখনোই। এরা শুধু মজা নিতে জানে। খানকি বানাতে জানে। প্রেমিক মামুনই বা এসব সহ্য করবে কি করে? কেন করবে? বিয়ে করবে এসব শুনলে? তবে ও মামুনকে বঞ্চিত করলো। কোনোদিন ওকে জড়িয়ে পর্যন্ত ধরতে দেয় নি মুনিয়া। অথচ দু’মাস আগেৃ! সে ঘটনা আর মনে করতে চায় না মুনিয়া।
ডাক্তার ভাবছে আরেক কথা। বাড়ি সেই বরিশাল, আর পড়ে আছে গত ছয় বছর ধরে রংপুরে, বিভিন্ন উপজেলায় ছিল। এর আগে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জে গার্মেন্টসে কাজ করেছে। তবে রংপুরে গত পাঁচটা মাস কেটেছে আরামে, ডাক্তারি কোনো জ্ঞান না থেকেও বড় ডাক্তারের সাথে থেকে থেকে চেম্বারে বসার সুযোগ হয়েছে। এরচে’ বড় সুখ আর কি!
মিনিট পঁয়তাল্লিশের মতন সময় লাগল। একটা বাসার সামনে এসে দাঁড়ালো রিকশাটা। আশেপাশে কোনো বাড়ি নেই, আছে বাঁশঝাড়। রিকশাওয়ালা ভাড়া নিয়ে চলে যাবার আগে মুনিয়াকে দেখে অদ্ভুত একটা হাসি দিল, খুব ভয়ানক! ভীষণ অচেনা মনে হলো লোকটাকে। কেন এমন করলো! খানিকটা শঙ্কিত হচ্ছে মুনিয়া।
‘কি হলো? ভেতরে চলো!’
হাত ধরে বাসার ভেতরে মুনিয়াকে নিয়ে গেল ডাক্তার। এত্ত সুন্দর বাড়ি! বাহির থেকে বোঝা যায় না, পাঁচিলের জন্য।
‘কি জপিদ ভাই, বাড়ি আছো?’
‘আরে ডাক্তার, কি খবর? ‘
‘দেখতেই পাচ্ছো, চলবে কি না এটা দেখো তো, এবার আমারে টাকা পাঁচ লাখ দিতে তো তোমার সমস্যা নেই, কি বলো?’
‘ওহ! সেই জিনিস আনছো, তোমারে কি দিয়ে যে খুশি করব!’
‘কিছু লাগবে না। তোমার কাছে টাকা চাইতাম, তুমি ভাই এমনি এমনি দিতে না, আগের দুইটার এক আর এটার চার মিলে পাঁচ দাও, আমি ঢাকায় যাই। রংপুর টু ঢাকা। ইয়াহু, কি মজা!’
মুনিয়া যেন নিজের কান, চোখকে বিশ্বাস করতে পাচ্ছে না। কি হচ্ছে এসব!
‘হ্যাঁ, তাই ভালো। তোমার এ চাকরি তো আর করে লাভ নাই। তুমি ঢাকায় যাও, ফেসবুকে নক দিও। নতুন যত দিবা বিদেশী বাবুরা তত রুপি, ডলার দিবে, কমিশন পাবা তুমি; জীবন ফুরফুরা তোমারৃহা হা..”
৩.
তেঁতুলিয়া জিরো পয়েন্টে পুলিশ এবং বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সহায়তায় বেঁচে যায় মুনিয়া সাবের-সহ বারোজন মেয়ে। ধরা পড়ে নারীপাচারকারী চক্রটি।
এরপর নিজের সাথে কি নিদারুণ যুদ্ধ মুনিয়ার! পারিপার্শ্বিকতার সাথে যুদ্ধ করে পড়াশুনাটা শেষ করে মুনিয়া। চাকরিটা হয় অনেক অপেক্ষার প্রহর গুনে।
সব আছে আজ, আবার কিছুই নেই। এই যে শহর জুড়ে নিয়নবাতি জেগে আছে। অথচ মুনিয়ার কাছে মনে হচ্ছে: অন্ধকার, অন্ধকার শহর। ডাক্তার মনিকা, সেই খারাপ পুরুষ জপিদ আর রাকেস বাবু! প্রত্যেকে যেন তাকে নিয়ে নগ্নখেলায় মেতে আছে।
আর অদূরে দাঁড়িয়ে প্রেমিক মামুন যেন ঘেন্নাভরা মুখে বলছে: শালী মাগি! এই তোর পবিত্র শরীর! এসব করে বেড়াস আর আমার কাছে ভালো মানুষী!