চসিক নির্বাচনী প্রচারে বাড়ছে সহিংসতা নির্বাচন কমিশনকে কঠোর হতে হবে

26

নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনী সহিংসতা। অভিযোগের স্তুপও বাড়ছে চট্টগ্রাম নির্বাচন কমিশনে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন অনিয়ম ও সহিংসতা বন্ধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিয়েছেন-এমনটি এখনও দৃশ্যমান হয়নি। সম্প্রতি ডবলমুরিং থানার ২৮ নম্বর পাঠানটুলী ওয়ার্ডের মগপুকুর পাড় এলাকায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহতের ঘটনায় চসিক নির্বাচনী মাঠে সহিংসতার উত্তাপ ছড়াচ্ছে। নির্বাচনী সহিংসতা বৃদ্ধি ও অনিয়ম রোধে দায়িত্বপ্রাপ্ত মেজিস্ট্রেটদের নির্লিপ্ততায় বিভ্রত হচ্ছেন নির্বাচন কমিশন-এমনটি সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বিষয়টি নগরবাসীকে আতঙ্ক ও উদ্বিগ্ন করে তুলবে। আমরা মনে করি, নির্বাচন হচ্ছে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার একটি প্রধান হাতিয়ার। শুদ্ধাচার, নৈতিকতা ও সুশানের অন্যতম শর্ত গণতন্ত্র। আর গণতন্ত্রই পারে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও দেশ গঠন করতে। সম্প্রতি বছরগুলোতে আমাদের দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে এবং হচ্ছে তা শুধু দেমে নয়; আন্তর্জাতিক বিশ্বেও প্রশংসিত হচ্ছে। অর্থনৈতিক অগ্রসরতা বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল-এ বক্তব্যের সাথে কারো দ্বিমত থাকার কথা নয়। তবে প্রাপ্তির মধ্যে স্বীকার করতেই হবে দূর্নীতির লাগামহীনতা আমাদের আরো বহু আর্জনকে থমকে দিচ্ছে। এ অবস্থায় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর ও অর্থনৈতিক প্রবাহে প্রথম বন্দর শহর চট্টগ্রামের নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হওয়া বাঞ্চনীয়। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন, স্থানীয় প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ও প্রতিদ্বন্ধি রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করতে হবে। পাশাপাশি নগরবাসীকেও সচেতন হতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, নগরবাসী তাদের স্বার্থ, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ও আধুনিক নগর গঠনে চট্টগ্রামের উন্নয়নে কাজ করবেন, অধিকন্তু সৎ, বিনয়ী ও ভালো প্রার্থীর প্রতি আস্থা রাখবেন। সুতরাং এর জন্য সংঘাত-সংঘর্ষের প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন প্রার্থী নিজেদের নগরবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য তোলার প্রতি মনোযোগী হওয়া। এছাড়া সম্প্রতি সংঘাত ও সংঘর্ষের ক্ষেত্রে ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীদের অগ্রগণ্য দেখা যাচ্ছে। দলের ওয়ার্ড পর্যায়ে বিদ্রোহ প্রার্থী ও প্রতিপক্ষ দলের প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীদের সংঘাত এলাকা ভিত্তিক হলেও মনে রাখতে হবে, এমনটি সংঘাত সমগ্র নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। দলীর ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয়। যা করো জন্য কল্যানকর নয়। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। মনে রাখতে হবে সময়ে এক ফোঁড়, অসময়ে দশ ফেঁড়। মানুষ মান্তিপুর্ণবাবে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে চাই, সেখানে যেকোন অমান্তি ও বিশৃঙ্খলা রোধে সংশ্লিষ্টদের কঠোর এবং দায়িত্বশীল হতে হবে। গত মঙ্গলবার পাঠানটুলীতে যে সহিংসতা ও খুনের ঘটনা ঘটেছে তাতে আমরা মর্মাহত। এ ধরণের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা চসিক নির্বাচনে বিরোপ প্রভাব ফেরবে। এ ঘটনা যে নিহত হয়েছেন, তিনি একজন দলীয প্রার্থীর সমর্থক, তার খুনের আগে তিনি যে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন, তাতে ধরে নেয়া যায়, নিহত আজগর আলী আগে থেকে বুঝতে পেরেছিলেন, তাকে এমন নির্মম পরিস্থিতির স্বীকার হতে পারে। কারা এ ঘটনার জন্য দায়ী তা নিঃসন্দেহে ইতোমধ্যে স্পষ্ট হয়েছে। কবরে প্রকাশ ইতোমধ্যে খুনের সাথে জড়িত এমন ৯জনকে গ্রেপতার করেছে পুলিম। আমরা আশা করি, নির্বাচনী সহিংসতা ও খুনের মত নিষ্টুরতার সাথে যারাই জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। সামনের দিনগুলোতে এ ধরণের আর কোন সংঘাতে যেন কেউ না জড়ায়- সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে।