চন্দ্রঘোনা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেরানী সাসপেন্ড

630

স্কুলের ২৮ লাখ টাকা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা আদর্শ বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরনজিত চন্দ্র বড়ুয়া ও কেরানী সুরনাথ দাশকে স্কুল পরিচালনা কমিটি সভায় গত ৭ জুন সাসপেন্ড করে। স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক আবু হেনা মোস্তফা কামালের নিকট অব্যাহতি প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গত সোমবার স্কুলের যাবতীয় দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়। জানা যায়, গত ৭ জুন স্কুল পরিচালনা কমিটির সভায় সাসপেন্ড কৃত প্রধান শিক্ষক এজেন্ডায় তার আত্মসাত কৃত টাকা তিনি আত্মসাত করেছেন বলে স্বীকার করে এবং ইতোমধ্যে ২ কিস্তিতে স্কুল ফান্ডে ৪ লাখ টাকা জমা করেন। বাকী টাকা কিস্তি করে দেওয়ার অনুমতি চাইলে পরিচালনা কমিটি তাকে সাসফেন্ড করে। স্কুলের যাবতীয় কর্মকান্ড সিনিয়র শিক্ষক আবু হেনা মোস্তফা কামালকে বুঝিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অপর দিকে স্কুলের কেরানী সুরনাথ দাশ আত্নসাত কৃত টাকার ৫০ হাজার স্কুল ফান্ডে জমা করেন। তিনিও বাকী টাকা কিস্তিতে দেওয়ার সময় প্রার্থনা করলে পরিচালনা পর্ষদ তাকেও সাসফেন্ড করে। একাধিক সুত্রে জানান যায়, স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও কেরানীর বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে এলাকায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জেএসসি প্রবেশ পত্র বাবদ স্কুল ফান্ডে টাকা জমা না দেওয়া, এসএসসি ছাত্র ছাত্রীদের ফরম পূরনের টাকা আত্নসাত ছাত্র ছাত্রীদের মাসিক বেতন স্কুল ফান্ডে জমা না দেওয়া, স্কুলের ডাব বিক্রি থেকে না কাজে নিজে টাকা আত্নসাত, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় রাইজিং সান কেজি স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের ফরম ও রেজিস্ট্রেশন ফি স্কুল ফান্ডে জমা না দিয়ে নিজে আত্মসাত করেন। বিভিন্ন ভাবে ভাইচার করে গত ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল এ ৫ বছরে ২৮ লাখ টাকা আত্মসাত করে। কেরানী ও ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে টাকা নিয়ে স্কুল ফান্ডে কিংবা ব্যাকে জমা করেনি। গত ৫ বছরে ছাত্র ছাত্রীদের সকল বেতন পরিশোধ করলেও স্কুলের ফান্ডে কোন টাকা জমা করেনি সাসপেন্ডকৃত প্রধান শিক্ষক ও কেরানী। ২০১৩ সালে প্রধান শিক্ষক স্ট্রোক করে। এর পর থেকে তিনি বছর খানেক স্কুলে আসতে পারেনি। সে সময়ে মানবিক চিন্তা করে তাকে স্কুলে আবারও দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর পওে ২০১৯ সালে তাকে আবারও দায়িত্ত থেকে বাদ দওয়া হয়। সেবারেও উচ্চ পর্য়ায়ে নানা তদবির করে স্কুলে আবার দায়িত্ব নেন। এমনি বড় ধরেন সড়ক দুর্ঘটনায় তার দুটো পা চলাচলে অক্ষমতা দেখা যায়। সে হিসেবে তিনি প্রতিবন্ধি হয়ে স্কুল চালাতে ব্যার্থ হন। ২০১২ সালে তিনি স্কুলের প্রধান শিক্ষক হযে যোগদান করেন। তার আমলে স্কুলের সার্বিক কার্য্যক্রম চলে অনেকটা তার ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। শিক্ষার মান একেবারে নিম্ন পর্যায়ের পাশের হার কোন রকমে। সব মিলিয়ে চন্দ্রঘোনা কদমতলী ইউনিয়নে একমাত্র মার্ধমিক স্কুলটি শিক্ষার মান এত পিছিয়ে রয়েছে তা বছরের পর বছর উত্তরনের কোন সম্ভানা সৃষ্টি করেনি। এতে পরিচালনা পরিষদও দায় এড়াতে পারে না। এলাকাবাসী স্কুলটির প্রতি লেখাপড়া না হওয়ায় আস্থা হারিয়েছে অনেক আগে। স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও চন্দ্রঘোনা কদমতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আজগর জানান, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তাকে বিধি মোতাবেক ৩বার কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করি। তিনি এর কোন জবারও দেয়নি। গত ৭ জুনের পরিচালনা কমিটির সভায় তাকেও কেরানীকে সর্বসম্মতি ক্রমে সাসফেন্ড করা হয়। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ও কেরানীকে মুঠোফোনে একাধিবার চেষ্টা করেও তারা দুইজনে ফোন রিসিভ করেনি। এতে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।