গ্যাসের বর্ধিত দাম মেনে নিতে বললেন কাদের

57

গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পেছনে যৌক্তিক কারণ রয়েছে মন্তব্য করে সবাইকে তা মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল শুক্রবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি পুনর্বিবেচনার সুযোগ আছে বলে তিনি মনে করেন না।
উচ্চ দামে আমদানি করা এলপিজিতে ভর্তুকির ভার লাঘবের জন্য সমাজের বিভিন্ন অংশের আপত্তির মধ্যেই সম্প্রতি সব পর্যায়ে গ্যাসের দাম গড়ে ৩২.৮ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার।
এ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন চৌদ্দ দলেও যে আপত্তি এসেছে- সে বিষয়ে ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা।
উত্তরে কাদের বলেন, ‘গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে আমি আগেও কথা বলেছি, যৌক্তিক কিছু কারণ এখানে রয়েছে। দামের সমন্বয় করার জন্য এটা অনস্বীকার্য।’-খবর বিডিনিউজের
গ্যাসে এখনও ‘প্রচুর’ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে মন্তব্য করে সরকারের সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এ কারণেই মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে সমন্বয় করা হয়েছে। এরপরও কিন্তু সরকারকে ভর্তুকি গুণতে হবে অনেক বেশি। এ বিষয়টির যৌক্তিক কারণ রয়েছে। কাজেই সবাইকে এইটা মেনে নেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
চৌদ্দ দলের মধ্যে যারা গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে একমত নন, তাদের এই ‘যৌক্তিক বিষয়গুলো অনুধাবন’ করার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
আর চীনের সঙ্গে করা চুক্তি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে তিনি ‘পাওয়ারওয়ালা চশমা’ পরার পরামর্শ দেন।
বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ যে ঋণ চুক্তি করেছে, তাকে বৃহস্পতিবার ‘মেগা দুর্নীতির’ চুক্তি আখ্যায়িত করেন মির্জা ফখরুল।
তার পাল্টায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যে বৈঠক হয়েছে সেটা চীনের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে হয়েছে। সেখানে গিয়ে হঠাৎ করে বাইলেটারাল টক হয় না, সেটা তাদের (বিএনপি) জানা নেই। চুক্তি হয়েছে উন্নয়নের জন্য। উন্নয়ন তাদের চোখে পড়ে না। এই জন্য ফখরুল সাহেবদের পরামর্শ দিচ্ছি পাওয়ারের চশমা পরার জন্য।’
প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়নের জন্য চীন সফরে গিয়েছেন মন্তব্য করে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘দেশের মঙ্গলের জন্য যারা ইনভেস্ট করতে পারে আমরা তাদের কাছে যাব। নিজেরা (বিএনপি) করতে পারেনি বলে গায়ে জ্বালা করছে। বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য তাদের গা জ্বালা করছে। তাদের বিরোধিতা সরকারের বিরুদ্ধে নয়, দেশের বিরুদ্ধে। প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়নের জন্য চীন সফরে গিয়েছেন। এটাই তাদের গাত্রদাহের কারণ।’
চীন সফরে রোহিঙ্গা ইস্যু বেশি গুরুত্ব পেয়েছে মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘মিয়ানমারকে চাপ দেওয়ার ইস্যুটি ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এখন তাদেরকে (মিয়ানমারকে) প্রেসার দেওয়ার ব্যাপারে তারাও (চীন) আশ্বাস দিয়েছে। বলেছে, তারা মিয়ানমারকে চাপ দেবে, বোঝাতে চেষ্টা করবে। মিয়ানমার যেন তাদের নাগরিকদের সম্মানের সঙ্গে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।’
২৫ বছর আগে শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা মামলায় সম্প্রতি আদালতের রায় নিয়ে বিএনপির ‘ক্ষোভ’ প্রকাশের প্রেক্ষিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোনো মামলার রায় বিএনপির বিরুদ্ধে গেলে তারা রায়কে বানোয়াট বলে, সরকারের হস্থক্ষেপ বলে। এখানে নতুনত্ব কিছু নেই। এবারও ব্যতিক্রম কিছু ঘটেনি। তারা গতানুগতিক মন্তব্য করে, সেটা সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপায়, একই ভাবে তারা এই মামলার ক্ষেত্রেও করেছে। বিএনপির ইতিহাসটাই এ রকম।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ত্রাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়–য়া সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।