কুকুরের মুখে নবজাতক, উদ্ধার করলেন এসআই

48

নগরীতে কুকুরের মুখ থেকে এক নবজাতককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন এক পুলিশ সদস্য। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড় থেকে মেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেন ডবলমুরিং থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (ডবলমুরিং জোন) আশিকুর রহমান জানান, আগ্রাবাদ সোনালী ব্যাংকের সামনে তিনটি কুকুর বাচ্চাটিকে নিয়ে টানাটানি করছিল। সেখানে দায়িত্বরত ডবলমুরিং থানার এসআই মোস্তাফিজ সেটা দেখে বাচ্চাটাকে উদ্ধার করে প্রথমে মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে শিশুটিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এসআই মোস্তাফিজ বলেন, রাতের ডিউটির শেষভাগে দলের সহকর্মীদের সঙ্গে আক্তারুজ্জামান সেন্টারের সামনে ছিলেন তিনি। ওই সময় রাস্তার উল্টো দিকে সোনালী ব্যাংকের সামনে দুটি কুকুরকে মারামারি করতে দেখেন তিনি। আরেকটি কুকুর কিছু একটা নিয়ে টানাটানি করছিল দেখে তার কৌতুহল হয়।
এগিয়ে গিয়ে দেখি একটা বাচ্চা, মনে হয় সদ্যজাত শিশু। কুকুরগুলো তাকে নিয়ে টানাটানি করছে। আমি তখন ওই রাস্তায় প্রাতঃভ্রমণে বের হওয়া এক নারীর সাহায্য চাইলাম। তিনিও এগিয়ে আসেন। রাস্তার পাশে একটি টং দোকান থেকে কাপড় নিয়ে বাচ্চাটাকে মুড়িয়ে ওই নারীকে সঙ্গে নিয়ে গেলাম আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে।
মা ও শিশু হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসকরা শিশুটিকে পরিষ্কার করে দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন বলে জানান মোস্তাফিজ।
এসআই মোস্তাফিজ জানান, মেডিকেলে যাওয়ার পথে আবার বাদামতলী মোড় দিয়ে যাওয়ার সময় জনতা ব্যাংকের সামনে আনুমানিক ২৫ বছর বয়েসী এক নারীকে খানিকটা রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় বসে থাকতে দেখেন তিনি। খবর বিডিনিউজের
স্থানীয়রা জানায়, ওই নারী মানসিক ভারসাম্যহীন, রাস্তাতেই থাকে। নাম জিজ্ঞেস করলে কথা বলছিল না। শুধু রাস্তার উল্টো দিকে দেখাচ্ছিল হাত দিয়ে। ওই জায়গাতেই বাচ্চাটাকে নিয়ে কুকুরগুলো টানাটানি করছিল তখন।
ওই নারীর আকার ইঙ্গিত থেকে এসআই মোস্তাফিজের ধারণা হয়, সোনালী ব্যাংকের সামনে সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর রাস্তার অন্যপাড়ে এসে বসে ছিলেন তিনি। আর কুকুরগুলো তখন নবজাতকের গায়ে লেগে থাকা নাড়ি নিয়ে টানাটানি করছিল।
পরে নবজাতকের সঙ্গে ওই নারীকে নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান এসআই মোস্তাফিজ। তাদের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
এই পুলিশ সদস্য বলেন, বাচ্চাটা সুস্থ আছে। ডাক্তাররা বলেছেন, কুকুরের কামড় তার গায়ে লাগেনি। আর ওই নারীকে গাইনি ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।