কঠোর নিরাপত্তাবলয় রামু পেকুয়া ও মহেশখালী

37

দেশের পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপ আজ রবিবার অনুষ্ঠিত হবে। তৃতীয় ধাপের এ নির্বাচনে অংশ নিবে কক্সবাজারের তিন উপজেলা রামু, পেকুয়া ও মহেশখালী উপজেলার জনগণ।
চকরিয়া : সকাল ৮টা থেকে একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসন সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পর পুরো উপজেলাকে ঢেকেছে কঠোর নিরাপত্তার চাদরে। নির্বাচন উপলক্ষে পেকুয়ায় সাতজন ম্যাজিস্ট্রেট, পাঁচ প্লাটুন বিজিবি, পুলিশের ১০টি মোবাইল টিম ও ৩টি স্ট্রাইকিং ফোর্সের পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের নিয়োজিত করা হয়েছে। এছাড়া সহিংসতা ঠেকাতে নির্বাচনের দুইদিন আগে থেকেই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে টহল জোরদার করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এবারে পেকুয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন, ভাইস-চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ছয়জন এবং মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম. স্বতন্ত্র প্রার্থী কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এস এম গিয়াস উদ্দিন (আনারস) এবং পেকুয়া উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম (দোয়াত কলম)। এলাকার সাধারণ ভোটারদের ধারণা স্বতন্ত্র প্রার্থী যে কোন এক জনের সাথেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের। এছাড়া ভাইস-চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন নাছির উদ্দিন বাদশা (মাইক), কায়সার উদ্দিন (উড়োজাহাজ), মেহেদী হাসান ফরায়েজী (বই), মেহের আলী (তালা), সাজ্জাদুল ইসলাম (টিউবওয়েল) ও আজিজুল হক (চশমা)। তাদের মধ্যে নাছির উদ্দিন বাদশা, সাজ্জাদুল ইসলাম ও কায়সার উদ্দিনের মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে সাধারণ ভোটারদের ধারণা। অপরদিকে মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন। তার হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য উম্মে কুলসুম মিনু (ফুটবল), বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান নাজনীন ফারজানা লাভলী (হাঁস) ও হাছিনা বেগম (প্রজাপতি)। তাদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য উম্মে কুলসুম মিনু ও বর্তমান নারী ভাইস চেয়ারম্যান নাজনীন ফারজানা লাভলীর মধ্যেই মুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, পেকুয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ৪০টি ভোট কেন্দ্রের ১৯৯টি বুথে ১ লাখ ৬ হাজার ২৭৯জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে পুরো উপজেলাকে ঢাকা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তার চাদরে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষে পেকুয়ায় সাতজন ম্যাজিস্ট্রেট, পাঁচ প্লাটুন বিজিবি, পুলিশের ১০টি মোবাইল টিম ও ৩টি স্ট্রাইকিং ফোর্সের পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের নিয়োজিত করা হয়েছে। তারপরও নির্বাচনকে ঘিরে কোন পক্ষ গন্ডগোল ও সন্ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। সুতরাং সকল ভয়ভীতি উপেক্ষা করে ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশেই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
মহেশখালী : মহেশখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আজ। এতে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোছাইন ইব্রাহীম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আনারস প্রতীকে মো. শরীফ বাদশা, দোয়াত কলম প্রতীকের মহেশখালী উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক সাজেদুল করিম ও মিনার প্রতীকে মো. ইরফান উল্লাহ। পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান বৈদ্যুতিক ভাল্ব প্রতীকে মো. জহির উদ্দিন, চশমা প্রতীকে নেওয়াজ কামাল, মাইক প্রতীকে মাহাবুব আলম, তালা প্রতীকে মো. ফরিদুল আলম, টিউবওয়েল প্রতীকে মো. গিয়াস উদ্দিন, বই প্রতীকে মো. আবু ছালেহ। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন পদ্মফুল প্রতীকে মিনুয়ারা ছৈয়দ, কলস প্রতীকে মনোয়ারা কাজল।
মহেশখালী উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মহেশখালীতে মোট ভোটার ২ লক্ষ ১১ হাজার ৬ শত ৫৪ জন। ১টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নের ৭৪টি কেন্দ্রে এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান উপহার দিতে প্রশাসনের পক্ষ হতে সমস্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচনে ৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ৫ প্লাটুন বিজিবি, ৩৫৯ জন পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও ভিডিপি মোতায়েন করা হয়েছে। যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
গতকাল শনিবার বিকালে বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের সরঞ্জামাদি ও দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের পৌছানো হয়েছে।
মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর জানান- একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে মহেশখালী থানার পুলিশের পক্ষ হতে সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে এবং প্রত্যেক প্রার্থীকে প্রশাসনের পক্ষ হতে নিষেধ করা হয়েছে, কেন্দ্রে যাতে কোন ধরনের গন্ডগোল করা না হয়। ভোটাররা নির্বিঘেœ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পারে মতো ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোন রকমের অপ্রীতিকর ঘটনা বা অবৈধভাবে ভোটের ব্যালটে হাত দিলে গুলি করা হবে বলে ঘোষণা দেয় ওসি।