ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ নয়, ট্রাম্পকে ৭৬ সাবেক কর্মকর্তা

33

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন একের পর এক মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছেন, ঠিক তখনই দেশটির সাবেক সামরিক শীর্ষ কর্মকর্তারা ট্রাম্পকে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে না জড়াতে সতর্ক করেছেন। পরিস্থিতি বিপরীতও হতে পারে উল্লেখ করে একটি চিঠিতে তারা বলেছেন, ট্রাম্পের বিবৃতি সত্তে¡ও ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চালানোর কোনো ইচ্ছে তাদের নেই। চালালে পাল্টা যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও হুমকির সৃষ্টি হতে পারে। অবশ্য পারস্য উপসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক হারে সামরিক উপস্থিতিকে পাত্তা দিচ্ছে না তেহরান। পাল্টা হুমকি দিচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি ওয়াশিংটনের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না, কিন্তু পশ্চিমা স্বার্থের টানে যুদ্ধ লেগে গেলে ছাড় দেবে না বলে ছয় জাতি পরমাণু চুক্তির প্রসঙ্গ টেনে ট্রাম্পকে সতর্কও করছে। যে কারণে ট্রাম্প ইরানকে ঘায়েল করতে এতোদিন যে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছেন পারস্য উপসাগরে, তাতে তিনি এখন সন্তুষ্ট নন। তেহরানের নতুন হুমকি মোকাবিলায় পেন্টাগনকে আরও তৎপর হতে বলছেন। এমনকি মধ্যপ্রাচ্যে অতিরিক্ত আরও দেড় হাজার সেনা পাঠানোর নির্দেশ দিলেন। যা শুক্রবার পাঠিয়েও দিয়েছে পেন্টাগন। যাকে আবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তুতি হিসেবে ‘তুলনামুলক ছোট’ পদক্ষেপও বলছেন ট্রাম্প।
ইরানের মুখ বন্ধ করতে ট্রাম্প যখন এতোকিছু করছেন, তখন দেশটির সাবেক সামরিক শীর্ষ কর্মকর্তাদের তেহরানের সঙ্গে যুদ্ধে না যাওয়ার সতর্কতা কী তিনি শুনবেন? অবশ্য শুনলে শুনতেও পারেন। কেননা ট্রাম্প নিজেও বলে আসছেন ইরানের সঙ্গে তারা যুদ্ধে যেতে চান না। শুধু মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ বাঁচিয়ে রাখতে তারা তৎপর। যদিও এখনও সে ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি, যে কারণে ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধে নামতে হবে। তবে উত্তেজিত হয়ে ঘটনা যেভাবে এগোচ্ছে, এতে বলা যায়, সামান্য একটু উসকানির সৃষ্টি হলেই দু’দেশের মধ্যে যুদ্ধ লেগে যেতে পারে। কিন্তু দু’দেশের মধ্যে চলমান পাল্টাপাল্টি হুমকির পরিস্থিতির মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন সামরিক কর্র্মতারা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে যুদ্ধে না যাওয়ার আহব্বানও জানালেন।
ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে লেখা দেশটির ৭৬ জেনারেল, অ্যাডমিরাল এবং অ্যাম্বাসেডর স্বাক্ষরিত ওই খোলা চিঠিটিতে বলা হয়েছে, আরব উপসাগরীয় অঞ্চলে ইরানের বর্তমান শক্তি বৃদ্ধির বিষয়ে আমাদের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করার জন্য আমরা আপনাকে লিখছি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে বর্তমানের পারস্পরিক উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে পারস্য উপসাগরে একটি মার্কিন এয়াক্রাফট বাহক স্ট্রাইক গ্রুপ এবং বি-২৫ বোমা হামলার দ্রুততম স্থাপনা সত্ত্বেও কূটনৈতিক সুবিধা কাজে লাগিয়ে মার্কিন সামরিক বাহিনীকে যে ইরান হামলা করতে পারে, সে বিষয়ে তেহরানের প্রস্তুতির বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, ইরানের প্রস্তুতি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সম্ভাব্য মারাত্বক মোকাবিলাও হতে পারে। এছাড়া ইরানের সঙ্গে একটি যুদ্ধ ভুল ধারণাও হতে পারে। একইসঙ্গে মার্কিন হামলা অস্থিতিশীল মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে নাটকীয় প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। পাশাপাশি একটি যুদ্ধের সৃষ্টি হলে যুক্তরাষ্ট্রকে বিশাল আর্থিক, মানবিক এবং ভূ-রাজনৈতিক খরচ নিয়ে সশস্ত্র সংঘাতের দিকে পড়তে হবে।