আজ ডিসিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স প্রধানমন্ত্রীর

59

নভেল করোনা ভাইরাসের মহামারী সামলাতে মাঠ প্রশাসন কিভাবে কাজ করছে তা জানার পাশাপাশি তাদের দিকনির্দেশনা দিতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে ডিসিদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন।
গতকাল সোমবার তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে সকল বিভাগীয় কমিশনারদের ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত করা হবে। বিভাগীয় কমিশনাররা তাদের আওতাধীন জেলার ডিসিদের যুক্ত রাখবেন। প্রধানমন্ত্রী যখন যে ডিসির সঙ্গে কথা বলতে চাইবেন তখন সেই ডিসিকে যুক্ত করা হবে। এভাবে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী’।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ডিসিরা কিভাবে কাজ করছেন সে বিষয়ে জানবেন সরকারপ্রধান। এছাড়া এই সময় তাদের কিভাবে কাজ করতে হবে এবং অসহায়দের কাছে কিভাবে খাবার পৌঁছে দিতে হবে সে বিষয়েও প্রধানমন্ত্রী দিকনির্দেশনা দেবেন বলে জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা ভাইরাসের কারণে শহর ও গ্রামে খাদ্য সমস্যায় থাকা কর্মহীনদের তালিকা তৈরি করে তাদেরকে ত্রাণ বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। গত রবিবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল স্বাক্ষরিত এই নির্দেশনা সংক্রান্ত চিঠি সকল জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, সারাদেশে করোনাভাইরাসের কারণে শহর ও গ্রামে কর্মজীবী মানুষ কর্মহীন অবস্থায় আছে। যেসকল কর্মজীবী মানুষ কর্মহীন হয়ে খাদ্য সমস্যায় আছেন প্রধানমন্ত্রী সেই সকল কর্মহীন লোক (যেমন- ভিক্ষুক, ভবঘুরে, দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, পরিবহন শ্রমিক, রেস্টুরেন্ট শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, চায়ের দোকানদার) যারা দৈনিক আয়ের ভিত্তিতে সংসার চালায় তাদের তালিকা প্রস্তুত করে খাদ্য সহায়তা প্রদানের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পর্যায়ে ওয়ার্ড ভিত্তিক, কৃষি শ্রমিকসহ উপকারভোগীদের তালিকা প্রস্তুত করে খাদ্য সহায়তা দিতে হবে। এছাড়াও স্থানীয় পর্যায়ে বিত্তশালী ব্যক্তি, সংগঠন, এনজিও কোনো খাদ্য সহায়তা দিলে জেলা প্রশাসকরা প্রস্তুতকৃত তালিকার সঙ্গে সমন্বয় করবেন, যাতে দ্বৈততা পরিহার করা যায় এবং কোনো কর্মহীন মানুষ যেন বাদ না পড়ে। সামগ্রিকভাবে সমন্বিত কার্যক্রম এ মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
সরকারের আরেকজন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী বলেছেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সম্পৃক্ত বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-সচিবদেরও মঙ্গলবারের ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত রাখা হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছাড়াও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা ওই ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত থাকবেন বলে জানান ওই মন্ত্রী।
দেশে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে ২৬ মার্চ থেকে দেশে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। সেই সঙ্গে সড়ক, নৌ, আকাশ পথে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রেখে সবাইকে বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছে।
এই অবরুদ্ধ দশার মধ্যে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ যেন খাদ্য সঙ্কটে না পড়ে সে বিষয়ে ২৫ মার্চ রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, নিম্ন আয়ের ব্যক্তিদের ‘ঘরে-ফেরা’ কর্মসূচির আওতায় নিজ নিজ গ্রামে সহায়তা প্রদান করা হবে। গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য বিনামূল্যে ঘর, ৬ মাসের খাদ্য এবং নগদ অর্থ প্রদান করা হবে। জেলা প্রশাসনকে এ ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খবর বিডিনিউজের
ভাষাণচরে ১ লাখ মানুষের থাকার ও কর্মসংস্থান উপযোগী আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে কেউ যেতে চাইলে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। বিনামূল্যে ভিজিডি, ভিজিএফ এবং ১০ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। একইভাবে বিনামূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসা সেবা ও দেওয়া হচ্ছে।