অপ্রাপ্তবয়স্ক ১১ আসামির বিভিন্ন মেয়াদে সাজা

21

বরগুনায় রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুনের মামলায় ১১ অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বরগুনা শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায়ে ছয়জনকে ১০ বছর করে, চারজনকে পাঁচ বছর করে এবং একজনকে তিন বছর কারাদন্ড দিয়েছেন। এছাড়া অভিযোগপত্রভুক্ত তিন কিশোর আসামি বেকসুর খালাস পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী হুমায়ুন কবির। ১০ বছর সাজাপ্রাপ্তরা ছয়জন হলেন, অভিযোগপত্রে এক, দুই, তিন, চার, ছয় ও সাত নম্বর আসামি, পাঁচ বছর করে সাজাপ্রাপ্ত চারজন হলেন পাঁচ, আট, নয় ও ১০ নম্বর আসামি এবং ১২ নম্বর আসামিকে তিন বছর কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে ।
এছাড়া রায়ে অভিযোগপত্রের ১১, ১৩ ও ১৪ নম্বর আসামি বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
এ রায় প্রদান উপলক্ষে মামলা সংশ্লিষ্টরা ছাড়া অন্যদের আদালতে প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রাঙ্গণে সীমানা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার পর আদালত থেকে বাইরে এসে আইনজীবী হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের রায়ের বিষয়টি জানান।
এছাড়া আসামি পক্ষের অপর এক আইনজীবী নারগিস আক্তার সুরমা বলেন, রায়ে বিচারক সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
হত্যাকান্ডের সময় সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা কিশোর থাকলেও রায়ের সময় তাদের বয়স ১৮ বছর পেরিয়ে যাওয়ায় তাদের সংশোধন কেন্দ্রের বদলে কারাগারে পাঠানোর এই আদেশ বিচারক দিয়েছেন বলে জানান তিনি। খবর বিডিনিউজের
সকালে কিশোর সংশোধন কেন্দ্র থেকে ছয়জন আসামিকে আদালতে উপস্থিত করা হয়েছে। এছাড়া জামিনে থাকা আট কিশোরও আদালতে হাজির হন বলে আইনজীবীরা জানান।
এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর এ হত্যাকান্ডে প্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের রায়ে রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ছয়জনের ফাঁসির আদেশ দেয় আদালত। এ ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন মিন্নি।
এদিকে, গত ৮ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বরগুনার শিশু আদালত।
৭৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ এবং উভয়পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের পর ৬৩ কার্যদিবসে এর বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়। এরপর ১৪ অক্টোবর বরগুনা শিশু আদালত রায়ের দিন ধার্য করে।
গত বছরের ২৬ জুন বরগুনার কলেজ রোড এলাকায় দিনের বেলা কয়েকজন যুবক রিফাত শরীফের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। রিফাত শরীফের সাথে তখন তার স্ত্রী মিন্নি ছিলেন। পরে তাকেও আসামি করা হয়।
এ হত্যাকান্ডের দুই মাস ছয় দিন পর গত বছরের পহেলা সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ূন কবির ২৪ জনকে আসামিকে প্রাপ্ত এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ভিত্তিতে দুই ভাগে বিভক্ত করে বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে দুইটি পৃথক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
তাতে ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক আসামি এবং ১৪ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে রিফাত হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।