৪ কোটিরও বেশি টাকা ফেরত দিয়ে কউক চেয়ারম্যান প্রশংসিত

18

রাসেল চৌধুরী, কক্সবাজার

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ভবণ নির্মাণের পর ৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা বাঁচিয়ে সরকারকে ফেরত দিয়েছে কউক। এ ঘটনায় কউক চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমেদের প্রশংসা করছেন নাগরিক সমাজ। এ ঘটনাকে কক্সবাজারের ইতিহাসে নজিরবিহীন বলে দাবী করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা ঘিরে ২০১৬ সালে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) যাত্রা শুরু হয়েছিল। শুরুতে স্থায়ী অফিস ভবন ছিল না। এ অবস্থায় ১০তলা স্থায়ী অফিস ভবন নির্মাণের জন্য ১১৪ কোটি ৮৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। এরই মধ্যে ভবনের কাজ শেষ করে ৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা বাঁচিয়ে সরকারকে ফেরত দেয় কউক।
আগামিকাল বুধবার (১৮ মে) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভবনটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে উদ্বোধন কার্যক্রমের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর ১২ টায় কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. ফোরকান আহমদ (অব.) প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ফোরকান আহমদ বলেন, আগামি বুধবার সকাল ১০ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কউকের অফিস ভবন উদ্বোধন করবেন। অনুষ্ঠানে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, সচিব, সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
কউক চেয়ারম্যান আরও বলেন, ২০১৭ সালের ২৭ মার্চ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ভূমি বরাদ্দ কমিটির সভায় কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বহুতল অফিস ভবন নির্মাণের জন্য এক একর ২১ শতক জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের ৬ মে প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বহুতল অফিস ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় কউকের বহুতল অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। একই বছরের ১৫ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে অফিস এবং ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বর প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে।ফোরকান আহমদ বলেন, বহুতল অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল ১১৪ কোটি ৮৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা। কাজ শেষে টাকা বেঁচে যায় ৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা। তা সরকারি ফান্ডে ফেরত দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ভবনের নকশা প্রণয়ন করে স্থাপত্য অধিদফতর। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও গণপূর্ত অধিদফতর যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। এই ভবনে অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ভবনে মুক্ত বাতাস চলাচল নিশ্চিতকরণে ভেন্টিলেটরসহ ক্রস ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা, স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি), নবায়নযোগ্য জ্বালানি হিসেবে সোলার প্যানেল ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বৈদ্যুতিক ফিটিংস যন্ত্রপাতি, রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং, আরবরিকালচার, সিসিটিভি, ফায়ার প্রোটেকশন সিস্টেম, সিকিউরিটি পাইটিং, ২০০ আসন বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস হল, ১৫০ আসন বিশিষ্ট তিনটি সেমিনার হল, ১৫০ আসন বিশিষ্ট দুটি কনফারেন্স হল, বজ্রপাত প্রতিরোধ ব্যবস্থা এবং ভবনের ১০ তলায় রেস্টহাউস।
২০১৫ সালের ৬ জুলাই কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হয়। কক্সবাজারকে আধুনিক ও আকর্ষণীয় পর্যটন নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠা এবং এই অঞ্চলে উন্নয়নের লক্ষ্যে এটি প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশ গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।