‘৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে’ চীন-তাইওয়ান উত্তেজনা

1

৪০ বছরের মধ্যে চীনের সঙ্গে তাইওয়ানের সামরিক উত্তেজনা সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে মন্তব্য করেছেন তাইওয়ানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী চিউ কুও-চেং। দ্বীপদেশ তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা জোনে (এআইডিজেড) চীন রেকর্ড সংখ্যক যুদ্ধবিমান পাঠানোর পর বুধবার চিউ এমন কথা বললেন। দু’পক্ষের মধ্যে দুর্ঘটনাবশত হামলা হওয়ার ঝুঁকির ব্যাপারেও সতর্ক করেছেন তিনি।
তাইওয়ানকে নিজেদের মূল ভূখন্ডে থেকে বিচ্ছিন্ন একটি প্রদেশ বলে মনে করে চীন। অন্যদিকে, তাইওয়ান দাবি করে তারা স্বাধীন, সার্বভৌম। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তাইওয়ানকে নিয়ন্ত্রণে রাখা ‘অনিবার্য’ বলে মনে করেন এবং এ লক্ষ্যে তিনি দ্বীপটিকে নানা দিক থেকেই চাপে রাখছেন। গত শুক্রবার থেকে বেইজিংয়ের প্রবল চাপের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাইওয়ানকে। ওই দিন থেকে শুরু করে গত চারদিনে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা সীমানায় প্রায় ১৫০টি যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে চীন।
চীনের যুদ্ধবিমান বার বার তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা এলাকা দিয়ে উড়ে যাওয়ায় তাইপে এবং বেইজিংয়ের মধ্যে উত্তেজনা নতুন করে বৃদ্ধি পেয়েছে। চীনা যুদ্ধবিমানগুলো যদিও তাইওয়ানের মূল ভূখÐ থেকে দূরে ছিল এবং কোনো গুলিও চলেনি; তারপরও বর্তমান পরিস্থিতিতে তাইওয়ান প্রণালীতে ভুল করে গুলি ছোড়ার মতো ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে বলে সতর্ক করেছেন তাইওয়ানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। চীনের সঙ্গে এই সামরিক উত্তেজনা নিয়ে তাইওয়ানের পার্লামেন্টে এক আইনপ্রণেতার প্রশ্নের জবাবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী চিউ কুও-চেং বলেন, তিনি সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর ‘৪০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এখনই চীন-তাইওয়ান উত্তেজনা সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে’।
বিবিসি জানায়, তাইওয়ান তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা জোন থেকে কোনওরকম হুমকির ওপর নজর রাখে। এই প্রতিরক্ষা এলাকা তাইওয়ান প্রণালী এবং চীনের মূল ভূখন্ডের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। বেইজিংয়ের যুদ্ধবিমানগুলো চীন এবং তাইওয়ানের মধ্যকার অনানুষ্ঠানিক রেখা পার হলেই তা অনুপ্রবেশ বলে গণ্য হয়।
চীন ২০২৫ সালের মধ্যে তাইওয়ানে পুরোদস্তুর আগ্রাসন চালাতে সক্ষম বলে সতর্ক করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী চিউ। তাইপে-তে পার্লান্টোরি কমিটির বক্তব্যে তিনি এই সতর্কবার্তা দেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, তাইওয়ান সরকার দ্বীপরাষ্ট্রটির পূর্ণ স্বাধীনতা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করার পথে এগুচ্ছে বলে বেইজিং দিন দিনই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছে। এ উদ্বেগের কারণে চীন দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই-ইং-ওয়েনের ওই পথে যাওয়া থেকে ঠেকিয়ে রাখতে চাইছে।
ফলে তাইওয়ান অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ে চীন খোলাখুলিভাবেই তাদের সামরিক শক্তি প্রদর্শন করছে। তাইওয়ানের বেশ কিছু সংখ্যক পশ্চিমা মিত্রদেশ চীনের এই অবস্থান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।