২৭ মাসেও বেতন নেই ৩ কর্মচারীর

8

রাঙামাটি প্রতিনিধি

চাকরির দীর্ঘ ২৭ মাসেও কোনো প্রকার বেতন-ভাতা নেই রাঙামাটির তিন উপজেলা ভূমি অফিসের ৩ কর্মচারীর। এ তিন অফিস সহায়ক হলেন- কাউখালীর মেথুইচং মারমা, কাপ্তাইয়ের চিকো চাকমা ও বাঘাইছড়ির রুপ মনি চাকমা। একসঙ্গে নিয়োগ পাওয়া ১৫ জনের মধ্যে অপর ১২ জনকে সম্পূর্ণ বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হলেও তিন অফিস সহায়ককে তাদের পাওনা পরিশোধ নিয়ে আজ পর্যন্ত কোনো কিছুই বলা হচ্ছে না। তাদের ওপর চরম অন্যায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ৩ কর্মচারীর। বর্তমানে হতাশাগ্রস্ত হয়ে চরম মানবেতর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে তারা।
জানা যায়, সরকারি বিধি অনুযায়ী আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদের স্বাক্ষরে এক আদেশে জেলার কাউখালী উপজেলা ভূমি অফিসে মেথুইচং মারমাকে, কাপ্তাই উপজেলা ভূমি অফিসে চিকো চাকমাকে এবং বাঘাইছড়ি উপজেলা ভূমি অফিসে রুপ মনি চাকমাকে অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। আদেশের নির্দিষ্ট সময়ে নিজেদের কর্মস্থলে যোগদান করেছিলেন তারা। একই আদেশে এ তিন অফিস সহায়ক ছাড়াও চেইনম্যান, প্রসেস সার্ভার ও নিরাপত্তা প্রহরি পদে আরও ১২ কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে তাদের ৩ জন নিরাপত্তা প্রহরি, ৪ জন চেইনম্যান এবং ৫ জন প্রসেস সার্ভারের সম্পূর্ণ বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে। ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর ভূমি সংস্কার বোর্ডের সহকারী ভূমি সংস্কার কমিশনার মো. মামুন শিবলী স্বাক্ষরিত আদেশমূলে ওই ১২ কর্মচারীর পাওনা পরিশোধ করা হয়। কিন্তু নিয়োগ সংক্রান্ত প্রশাসনিক জটিলতার অজুহাতে তিন অফিস সহায়ককে আজ পর্যন্ত কোনো প্রকার বেতন-ভাতা বা পাওনা পরিশোধ করা হয়নি। এর ফলে করোনা মহামারির মধ্যে তাদের পরিবারে চরম মানবেতর অবস্থা বিরাজ করছে। অথচ নিরলস শ্রম দিয়ে চাকরি করেও ওই তিন কর্মচারীর পাওনা বেতন-ভাতা পরিশোধে নির্বিকার সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষ। মানবিক বিবেচনায় তাদের সম্পূর্ণ পাওনা বেতন-ভাতা পরিশোধসহ চাকরি স্থায়ীকরণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ভুক্তভোগী এ তিন কর্মচারী।
ভুক্তভোগী কর্মচারীরা বলেন, আমরা এখন সম্পূর্ণ অক্ষম ও নিরুপায়। করার কিছুই নেই। কোথাও যাওয়ার উপায় নেই। জানি না আমাদের কী দোষ ? এতটা দিন বেতন-ভাতা ছাড়া সেবা দেওয়াটাই কী তাহলে আমাদের অপরাধ ? এ কঠিন পরিস্থিতিতে কেন এভাবে আমাদের ওপর এতটা অন্যায় করা হচ্ছে- তা একেবারে বোধগম্য নয়। বিষয়টি নিয়ে আমরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় হস্তক্ষেপ চেয়েছি। কিন্তু ফল কিছুই পাচ্ছি না।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমরা ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। এটির জটিলতা নিস্পত্তির দরকার। আশা করছি, মন্ত্রণালয় হতে নির্দেশনা পাঠানো হবে। বিষয়টি নজরে রয়েছে।