২০ মে থেকে ২৩ জুলাই বহাল রাখার দাবি

35

পূর্বনির্ধারিত নিয়ম অনুসারে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত যান্ত্রিক নৌযান দ্বারা বঙ্গোপসাগরে মৎস্য আহরণ অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন নতুন ফিশারিঘাট ব্যবসায়ীরা। গতকাল সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি করেন তারা। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যান্ত্রিক নৌযান মালিক মাঝিমাল্ল­ার পক্ষে আমিনুল হক সরকার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মৎস্যশিল্পে ৩ কোটি মানুষ জড়িত। গার্মেন্টস শিল্প ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে গার্মেন্টস পরিচালনা করে আর মৎস্য শিল্পের ব্যবসায়ীরা নিজের গচ্ছিত অর্থ দিয়ে ব্যবসা করার কারণে ফোকাস হয় না। এই মৎস্য ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের সিংহভাগ রাজস্বের যোগান দিয়ে থাকে।
তিনি জানান, বাংলাদেশের জিডিপিতে মৎস্যখাতের অবদান এখন ৩.৫৭ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপিতে এ খাতের অবদান ২৫.৩০ শতাংশ। আর দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ১১ শতাংশের অধিক লোক মৎস্য আহরণে জড়িত। ২০১৭-১৮ সালে দেশ প্রায় ৬৯ হাজার মেট্রিকটন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রফতানি করে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করেছে।
আমিনুল হক সরকার আরও জানান, যান্ত্রিক মৎস্য নৌযান মালিক/মাঝি মাল্লাগণ আহরিত মাছের লাভ লোকসানের সমান অংশীদার এবং আর্থিকভাবে কেহই স্বচ্ছল নয়। আমাদের মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগ মাঝিমাল্লা মৎস্য আহরণ বন্ধ হলে পরিবার পরিজন নিয়ে উপোস করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।
তিনি জানান, ২০১৫ সাল থেকে বঙ্গোপসাগর থেকে মৎস্য আহরণ চলে আসা নিয়মে জাতি এর সুফল পেয়ে আসছে। কিন্তু গতবছর ২০ সেপ্টেম্বর সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ, ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন বিষয়ক সভায় জানতে পারি ২০১৯ সালে সরকার বাণিজ্যিক ট্রলারের সাথে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত যান্ত্রিক মৎস্য নৌযান দ্বারা মৎস্য আহরণ বন্ধ করার চিন্তাভাবনা করছে। সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরার জাল যে সাইজ দেয়া আছে উহাতে সুনির্দিষ্ট সাইজের ইলিশ মাছ ব্যতীত অন্য কোন মাছ ধরার বা আটকা পড়ার সম্ভাবনা নেই। সরকারি হিসাবে ১০/১২ হাজার ভাসান জালের মাধ্যমে মৎস্য আহরণকারী দেখানো হলেও প্রকৃত সংখ্যা ৬০ হাজারের অধিক। তাদেরকেও সরকারি হিসাবের আওতায় আনা হলে সরকার ও ভাসান জাল ব্যবহারকারী উভয়েই সার্বিকভাবে উপকৃত হবে।
তিনি আরো জানান, ১ নভেম্বর থেকে ৩১ মে পর্যন্ত জাটকার জন্য অনেকেই সরাসরি ফিশিং বন্ধ রাখেন। ইলিশের প্রজননকালীন সময়ে আমরা সম্পূর্ণ মৎস্য আহরণ বন্ধ রাখি। এরপর আছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। প্রতিমাসে কয়েকবার করে সামুদ্রিক বিপদ সংকেত দেখানো হয়। জাটকা নিধন ৬ মাস, প্রজননকালীন বন্ধ ২২ দিন, সাগরের বৈরি আবহাওয়ার জন্য ৩ মাস অর্থাৎ এই সময়ের মধ্যে সব ধরনের মাছ আহরণ বন্ধ থাকে। এরপর আবার নতুন করে সরকার কর্তৃক ২০ মে হতে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মৎস্য আহরণ বন্ধ করার প্রজ্ঞাপন কার্যকর হলে আমরা মৎস্যজীবীগণ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হব। এমতাবস্থায়, ইলিশের ভরা মৌসুমে ৬৫ দিন যদি ইলিশ মাছ আহরণ বন্ধ করে দেয়া হয় ইলিশ জেলারা সমূলে ধ্বংস হয়ে যাবে। মৎস্যজীবীদের এই বিষয়টি সরেজমিনে তদন্তপূর্বক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও মৎস্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সংবাদ সম্মলনে বোট মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী সওদাগর, সহসভাপতি মো. নূর হোসেন, একেএম ফজলুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।