হালদায় নমুনা ডিম না ছাড়লেও গুজব ছড়াচ্ছে অসাধুচক্র

9

হাটহাজারী প্রতিনিধি

হালদায় মা-মাছ নমুনা ডিম ছেড়েছে বলে অপপ্রচার চালিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি করেছে কৃত্রিম পোনা উৎপাদনকারী একটি অসাধু চক্র। গত বৃহস্পতিবার রাতে হালদা নদীতে (হাটহাজারী অংশ) রহমতের ঘোনা ও মাছুয়াঘোনা বাঁকে নমুনা ডিম ছাড়ার গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তবে হালদার পাড়ে অবস্থানরত ডিম সংগ্রহকারী ও হালদা বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়টি গুজব বলে নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নমুনা ডিম ছাড়াকে পুঁজি করে কৃত্রিম পোনা উৎপাদনকারীরা গুজব ছড়িয়েছে।
হাটহাজারী উপজেলার গড়দুয়ারা এলাকার অভিজ্ঞ ডিম সংগ্রহকারী কামাল সওদাগর বলেন, নমুনা ডিম ছাড়ার আগে হালদা নদীতে মা-মাছ খড়কুটো সাথে গা ঘেঁষে। তখন কিছু কিছু মা-মাছের একটা দুইটা ডিম পাওয়া যায়। নদীতে একটা দুইটা ডিম পাওয়া এবং নমুনা ডিমের মধ্যে পার্থক্য আছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে পাওয়া এসব ডিমগুলোকে নমুনা ডিম বলা যায়না।
নমুনা ডিম হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ ডিম ছাড়ার পূর্বশর্ত। নমুনা ডিমের পরিমাণ ৪-৫ গ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। মাছ ডিম ছাড়ার আগে সার্বক্ষণিক জাল বসালে ১-২টা ডিম সবসময় পাওয়া যাবে এটা কখনও নমুনা ডিম হতে পারে না বলে জানিয়েছেন হালদা গবেষক অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া।
তিনি আরও জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের খবরে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত ও প্রতারিত হয়। এ ধরনের নমুনা ডিম ছাড়ার গুজব কিছু অসাধু ডিম সংগ্রহকারীর প্রতারণার অপকৌশল মাত্র। মাছ ডিম ছড়ার আগ মুহূর্তে কৃত্রিম পোনা উৎপাদনকারী একটি অসাধু চক্র এমন গুজবটি ছড়িয়েছে।
নমুনা ডিম ছাড়াকে কেন্দ্র করে একটি অসাধু চক্র প্রতিবারের ন্যায় এবারও বেশ সক্রিয় কি ব্যাপারে জানতে চাইলে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহিদুল আলম জানান, কৃত্রিম পোনা উৎপাদনকারী তথা অসাধু চক্রের ব্যাপারে আমরা বেশ তৎপর আছি। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কমিটি এ কাজ করছে। আমাদের কাছে কৃত্রিম পোনার ব্যাপারে এরকম কোনকিছু যদি দৃশ্যমান হয় তাহলে আমরা তড়িৎগতিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
উল্লেখ্য, হাটহাজারী-রাউজান-ফটিকছড়ি উপজেলা সীমানা দিয়ে বয়ে যাওয়া হালদা নদীতে প্রতি বছর বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে কার্প জাতীয় মা-মাছ ডিম ছাড়ে। এরপর হালদা পাড়ের শত শত ডিম সংগ্রহকারীরা এসব ডিম সংগ্রহ করে। হ্যাচারি পোনার চেয়ে হালদার পোনা দ্রুত বর্ধনশীল বলে এ পোনার কদর সারাদেশে। ডিম সংগ্রহকারীরা ডিম সংগ্রহ করে তা থেকে রেণু ফুটিয়ে বিক্রি করেন। রেণুর আয় দিয়ে পুরো বছর তারা জীবিকা নির্বাহ করেন।