স্বপ্নের পদ্মা বহুমুখীসেতু দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অর্থনীতিতে আনবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন

41

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন পদ্মাসেতু নির্মাণের দুরূহ স্থাপনার জন্য। তিনিই সর্বপ্রথম কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ করে চট্টগ্রামবাসীকে ঋণী করছেন। চট্টগ্রামকে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নগরী হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠা করছেন। দেশের দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চলের রেল যোগাযোগ পর্যটন শহর কক্সবাজার পর্যন্ত সম্প্রসারণের ব্যবস্থা করেছেন। যার জন্য চট্টগ্রামবাসী তাঁর কথা কখনো বিস্মৃত হবে না। এমনিভাবে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে তাঁর অবদান স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে ইতিহাসের পাতায়। পদ্মাসেতু এক সময় দেশের মানুষের স্বপ্ন ছিল। সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগ গ্রহণ করলে বিশ্ব ব্যাংকসহ দাতা সংস্থাসমূহ স্বাভাবিকভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি। যার কারণে পদ্মাসেতু নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় অবস্থান নিয়ে অনেকেই হাসাহাসি করতেও দেখা গেছে। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনা সম্পূর্ণ দেশের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। এটি ছিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুঃসাহসিক পদক্ষেপ। নানা প্রতিকূল পরিবেশের মোকাবিলা করে বহু চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে প্রধানমন্ত্রী পদ্মাসেতু নির্মাণে যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তা দেশের মানুষের পক্ষে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। ৪১টি স্প্যানের সংযোজনে দীর্ঘ এ সেতুর কাজ বর্তমানে সমাপ্তির পথে। পত্রিকার প্রতিবেদন হতে জানা যায় পদ্মাসেতুর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ইতোমধ্যে ৪০তম স্প্যান স্থাপনকার্য সমাপ্ত হয়েছে। এ স্প্যান স্থাপনের মাধ্যমে দীর্ঘ ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মাসেতু দৃশ্যমান হলো। ১৫০ মিটার দীর্ঘ আর একটি স্প্যান স্থাপন হলেই পদ্মাসেতু স্বপ্ন নয়, বাস্তব রূপ ধারণ করবে। পদ্মাসেতুর খুঁটির সংখ্যা ৪২টি। একটা খুঁটির সাথে অন্য খুঁটির দূরত্ব ১৫০ মিটার। আর একটি স্প্যান স্থাপিত হলে ৬.১৫০ কিলোমিটার সেতুটি মাওয়া হতে জাজিরা পর্যন্ত দৃশ্যমান হবে। এ চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস্তব রূপ দিচ্ছেন। বিশ্ব ব্যাংক ও দাতা সংস্থার বিরূপ মনোভাব উপেক্ষা করে অসম্ভবকে সম্ভবে পরিণত করে তুলছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। দেশের রেল ও সড়ক যোগাযোগের প্রেক্ষাপটে এটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করবে নিঃসন্দেহে। পদ্মাসেতুর মাধ্যমে শরীয়তপুর, মুন্সীগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। পদ্মা নদীর উপর ৬ কিলোমিটারের অধিক দীর্ঘ এ সেতুটি দেশের দীর্ঘতম রেল ও সড়কসেতু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে সম্পন্ন করার এ দুঃসাহসিক কাজের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নের স্থপতি হিসেবে ইতিহাসে প্রতিষ্ঠা পাবেন। তিনি যা বলেন তা করে দেখান। দেশের প্রায় পঞ্চাশ বছরের ইতিহাসে শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকাÐ এদেশের উন্নয়নের সকল পরিসংখ্যানকে ছাড়িয়ে গেছে। কৃষি, অর্থনীতি, সড়ক ও রেল যোগাযোগ এবং শিল্প উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অদ্বিতীয়। জয়তু প্রধানমন্ত্রী।