সুধী-পাঠকের ভালোবাসায় সিক্ত পূর্বদেশ

19

 

গতকাল উদযাপিত হলো চট্টগ্রাম হতে প্রকাশিত পাঠকনন্দিত পত্রিকা দৈনিক পূর্বদেশ-এর দশম বর্ষপূর্তি ও একাদশবর্ষে পদার্পণ। এ উপলক্ষে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে অনুষ্ঠিত হলো পূর্বদেশের লেখক, পাঠক, সুধীদের অনুভূতি প্রকাশের এক অনুষ্ঠান। এতে চট্টগ্রামের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত হয়ে তাঁদের অনুভূতি ও মতামত প্রকাশ করেন। বর্তমান সময়ে একটি পত্রিকা যাত্রা শুরু করার পর সদর্পে একটি দশক পার হওয়া সামান্য বিষয় নয়। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার স্বর্ণযুগে দৈনিক পত্রিকার প্রকাশনা টিকিয়ে রাখা খুবই কঠিন। দেশে কাগজের মূল্য যে হারে বেড়েছে এবং ছাপাখরচ যে পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে প্রিন্টিং মিডিয়ার মালিকদের নাভিশ্বাস উঠছে। তাছাড়া একটি দৈনিকের প্রচার সংখ্যা সন্তোষজনক রাখতে কর্তৃপক্ষকে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়। সব কিছুতে আর্থিক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। ব্যয়বহুল এ সংবাদপত্র শিল্পে টিকে থাকা খুবই সংকটজনক। যে কারণে দেশে বহু নামিদামি পত্রিকাও বন্ধ হতে দেখা যায়। অনেকে যেনতেন প্রকারে পত্রিকার প্রকাশনাটি টিকিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। শুধুমাত্র সরকারি ডিএফপি’র সহায়তায় তো কোন পত্রিকা চালানো সম্ভব নয়। গ্রাহক, পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতা, লেখক এবং সংবাদকর্মীদের অক্লান্ত আন্তরিকতাই একটি পত্রিকাকে পুষ্টিদান করে থাকে। ২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম হতে দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার রাজকীয় যাত্রা শুরু হয়। তখন বিখ্যাত সাংবাদিক ও খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবী প্রয়াত কামাল লোহানি ছিলেন দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন দেশের খ্যাতনামা সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক আবু সাঈদ জুবেরি। নবীন-প্রবীণ মিলিয়ে একদল অভিজ্ঞ ও উদ্যোগী সংবাদকর্মী এ পত্রিকার জন্য তাদের প্রতিভার সেরা শক্তিমেধা নিয়োগ করে পত্রিকাটিকে পাঠকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন। চট্টগ্রাম হতে প্রকাশিত আজাদী ও পূর্বকোণ পত্রিকার একচ্ছত্র আধিপত্যের সময়ে দৈনিক পূর্বদেশ চট্টগ্রামের সংবাদপত্রের জগতে তৃতীয় শক্তি হিসেবে তার পথ সুগম করতে সক্ষম হয়। গেটাপ-মেকাপের পাশাপাশি পত্রিকার সংবাদের বৈশিষ্ট্য এবং শিরোনামের কারণে ধীরে ধীরে পূর্বদেশ দেশের দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চল তথা সমগ্র চট্টগ্রামের প্রিয় পত্রিকা হিসেবে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়। এ পত্রিকায় নামীদামী বুদ্ধিজীবীদের লেখা ছাপানোর পাশাপাশি সমসাময়িক জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে পূর্বদেশের সম্পাদকীয় পাতা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। সংবাদের বিশ^াসযোগ্যতা, গুরুত্ব ও জনসম্পৃক্ততা পত্রিকাটিকে সাধারণ মানুষের প্রিয় পত্রিকায় রূপান্তরিত করেছে। দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক সাংস্কৃতিক বিষয় ছাড়াও সাহিত্য, কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য এবং সাধারণ মানুষের সুখ দুঃখের বিষয়কে গুরুত্বের সাথে তোলে ধরার কারণে এপত্রিকায় এতদঅঞ্চলের মানুষ নির্বিষ্ট হয়ে পড়ে। তাই দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার একাদশ বর্ষে পদার্পণ অনুষ্ঠানে সর্বস্তরের মানুষের স্বেচ্ছায় সরব উপস্থিতি প্রকাশ করে দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায় গণমানুষের হৃদয়ের স্পন্দন প্রতিফলিত হওয়ার বিষয়টি। সেলুনের দোকানি হতে তরকারি ব্যবসায়ীদের হাতে পর্যন্ত পত্রিকাটি শোভাপায়। আবার এ পত্রিকা পন্ডিত ও বিশিষ্ট জনের ড্রয়িংরুম হতে বেড়রুম পর্যন্ত দখল করতে সক্ষম হয়েছে। একটি পত্রিকা তখনই জনপ্রিয়তা পায় যখন পত্রিকার কুশিলবরা আন্তরিকতার সাথে জনগণের চাহিদা পূরণে কাজ করে। সেদিক হতে দৈনিক পূর্বদেশ মানবজীবনের সবকটি সেক্টরের সমস্যা, সম্ভাবনাকে মূল্যবোধের ভিত্তিতে উপস্থাপনে সচেষ্ট থাকেন।
দেশের আর্থিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শৈল্পিক উন্নয়নের পাশাপাশি দৈনিক পূর্বদেশ দেশের সার্বিক উন্নয়নের বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। যে কারণে দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার দশমবর্ষ পূর্তিতে চট্টগ্রামের বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, সামাজিক, সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সংগঠক হতে শুরু করে সর্বস্তরের সেবামূলক সংগঠনসহ সাধারণ মানুষ এগিয়ে এসেছে দৈনিক পূর্বদেশের বর্ষপূর্তিকে অভিনন্দন জানাতে।
উল্লেখ্য যে, একঝাঁক তরুণ কলাকৌশলি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করার কারণে প্রশাসন যেসব বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়। সংবাদ সংগ্রহ ও পরিবেশনের বিষয়ে এ পত্রিকার রিপোর্টাররা অকুতুভয়। এক একটি প্রতিবেদন সমগ্র অঞ্চল তথা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করতে দেখা যায়।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলের অনুষ্ঠান শেষে দৈনিক পূর্বদেশকে শুভেচ্ছা, অভিনন্দন জানানোর উৎসাহ থেমে নেই। অনুষ্ঠান সমাপ্তির পর ১২ ডিসেম্বরের ২০২২ বিকাল হতে বিভিন্ন সংগঠক ও ব্যক্তির পক্ষ হতে দৈনিক পূর্বদেশকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর ভিড় থেমে নেই। যা সপ্তাহব্যাপী চলমান থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দৈনিক পূর্বদেশের বর্ষপূর্তিতে পূর্বদেশ কর্তৃপক্ষকে বিজ্ঞাপনসহ নানা ভাবে সহযোগিতা এবং আন্তরিক ভালোবাসা প্রকাশে যারা এগিয়ে এসেছেন তাঁদের কাছে দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। বিজ্ঞাপনদাতা, লেখক, পাঠক, সংবাদদাতা, সংবাদকর্মী ও কুশিলবদের আন্তরিকতায় দৈনিক পূর্বদেশ তার রাজকীয় যাত্রা অনন্তকাল অব্যাহত রাখবে এমন প্রত্যাশা পূর্বদেশ পরিবারের।